Author: ডেস্ক রিপোর্ট

অন্তর্বর্তী সরকারের শুরুতে ন্যায়বিচার ও সংস্কারের যে প্রতিশ্রুতি জনগণের মধ্যে আশা জাগিয়েছিল, সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই আশায় ভর করতে শুরু করেছে গভীর হতাশা। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সরকারঘনিষ্ঠ ছাত্র সংগঠনগুলোর দুর্নীতি, রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব এবং অতীতের এক-এগারোর ছায়া বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। এই সরকার সত্যিই সংস্কারের পথে হাঁটছে, না কি পুরনো চক্রের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে—সেই প্রশ্ন এখন আরও জোরালো। সুপ্রিম কোর্টে দীর্ঘদিন প্র্যাকটিস করা একাধিক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জানিয়েছেন, বর্তমানে বিচারকরা স্বাধীনভাবে আদেশ দিতে পারছেন না। ভয় ও শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন তারা। আদালতে জামিন কিংবা দণ্ডে রাজনৈতিক প্রভাব, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বিতর্ক এবং আদালতের চত্বরে আইনজীবী ও আসামিদের ওপর হামলার ঘটনাগুলো…

Read More

ঢাকার রাজনীতির ভাঁজে ভাঁজে যে দুর্বৃত্তায়নের চোরাস্রোত দীর্ঘদিন ধরেই বইছে, আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান রিয়াদের কাহিনি যেন তার এক নগ্ন প্রতিচ্ছবি। রিয়াদের গল্প শুরু হয়েছিল এক সাধারণ দিনমজুর পরিবারের সন্তান হিসেবে, কিন্তু তার উত্থান হয় ঢাকার অন্যতম ধনকুবের চাঁদাবাজ হিসেবে—যার ‘কোটির নিচে কথা নেই’। এই অভাবী ছাত্রের রাতারাতি কোটিপতি হয়ে ওঠার রহস্য কেবল একটি ব্যক্তিগত কেলেঙ্কারি নয়, বরং সমগ্র রাষ্ট্রব্যবস্থার ভেতরে লুকিয়ে থাকা রাজনৈতিক আশ্রয়ে বেড়ে ওঠা এক ‘ছায়া শক্তির’ নির্লজ্জ বহিঃপ্রকাশ। রিয়াদ, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ছাত্র, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে যে রাজনৈতিক জাল বিস্তার করেছিল, সেটি একদিকে যেমন আদর্শের মোড়কে মোড়ানো ছিল, অন্যদিকে ছিল ভয়ভীতি ও অর্থ-ক্ষমতার নগ্ন প্রদর্শন। এই…

Read More

‘আমি কী অপরাধ করেছি’—এই প্রশ্নটি আজ আর কেবল একটি বাক্য নয়, বরং হয়ে উঠেছে এক গভীর রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক ট্র্যাজেডির প্রতীক। শেখ হাসিনার এই উক্তি, যার পেছনে লুকিয়ে রয়েছে সহস্র প্রাণের আর্তনাদ, যেন প্রমাণ করে দেয়—ক্ষমতা যখন ফ্যাসিবাদে রূপ নেয়, তখন অনুতাপ নয়, আত্মপক্ষ সমর্থনই হয়ে ওঠে রাষ্ট্রীয় কৌশল। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান শুধু একটি রাজনৈতিক ঘটনা ছিল না, এটি ছিল মানুষের সম্মিলিত চিৎকার—অবিচারের বিরুদ্ধে, নিপীড়নের বিরুদ্ধে, ভোটবঞ্চিত রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। জাতিসংঘের নিরপেক্ষ তদন্ত বলছে, সেই অভ্যুত্থানে কমপক্ষে ১,৪০০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, আহত হয়েছেন ২০ হাজারের বেশি। এই পরিসংখ্যান এক দেশীয় বিরোধী দলের দাবি নয়, বরং একটি আন্তর্জাতিক, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠানের…

Read More

৫৪৫ মিলিয়ন বছর আগের কিছু পায়ের ছাপ বিজ্ঞানীদের ভাবনার জগতে এক নতুন আলোড়ন তুলেছে। এতদিন যে ক্যামব্রিয়ান বিস্ফোরণকে প্রাণের বিবর্তনের নাটকীয় সূচনা বলা হতো, নতুন গবেষণা বলছে সেই সূচনা আদৌ ততটা হঠাৎ ছিল না। বরং, বহুকোষী জটিল জীবের বিকাশ শুরু হয়েছিল আরও আগে—কমপক্ষে ১৫ মিলিয়ন বছর আগে। বার্সেলোনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের গবেষকরা প্রায় ৫৪৫ মিলিয়ন বছর পুরনো ট্রেস ফসিল বা জীবের চলাচলের চিহ্ন বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, সেই সময় পৃথিবীতে এমন কিছু প্রাণী ছিল যাদের দেহ খণ্ডিত, পেশিবহুল এবং সেন্সরি ক্ষমতা ছিল। তারা দিকনির্দেশনামূলকভাবে চলাচল করতে পারত এবং পরিবেশ অনুযায়ী নিজেদের মানিয়ে নিতে পারত। এ সব চিহ্ন স্পষ্টভাবে…

Read More

মানবজাতির হাজার বছরের সবচেয়ে রহস্যময় প্রশ্ন—“আমরা কি মহাবিশ্বে একা?”—এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বিজ্ঞানীরা যুগের পর যুগ ধরে মহাকাশে চোখ রেখে চলেছেন। আর সেই দীর্ঘ অভিযাত্রায় সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে এক রোমাঞ্চকর আবিষ্কার, যা শুধু মহাকাশ বিজ্ঞানেই নয়, মানুষের কল্পনাকে নাড়া দিচ্ছে গভীরভাবে। কানাডার মনট্রিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একদল মহাকাশের এক কোণায় খুঁজে পেয়েছেন এমন এক গ্রহ, যার বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর সঙ্গে মিল রাখে। এর নাম এল ৯৮-৫৯এফ—যা ইতোমধ্যেই বিজ্ঞানীদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে ‘সুপার আর্থ’ নামে। এই ‘সুপার আর্থ’ অবস্থিত এক লাল বামন তারার চারপাশে, যার নাম এল ৯৮-৫৯। পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৩৫ আলোকবর্ষ। শব্দটা শুনতে ছোট মনে হলেও, বাস্তবে এই…

Read More

বাংলাদেশের রাজনীতিতে সাম্প্রতিক পালাবদলের পরিণতিতে যে অভূতপূর্ব চিত্র তৈরি হয়েছে, তাতে দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্ক ও রাজনৈতিক ভারসাম্যের একটি নতুন অধ্যায় স্পষ্ট হয়ে উঠছে। শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠজনদের ভারতের মাটিতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়া যেমন একটি মানবিক, তেমনি কূটনৈতিক বিষয়—তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরব অবস্থান গোটা ঘটনাকেই নতুন মাত্রা দিয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে জটিল। একদিকে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা, আরেকদিকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ লেগেই আছে। শেখ হাসিনার সরকার দীর্ঘদিন ধরে ভারত-বান্ধব হিসেবে পরিচিত ছিল। বিশেষ করে দিল্লির কেন্দ্রীয় শাসকদল বিজেপির সঙ্গে তার সরকারের সম্পর্ক ছিল দৃঢ়। এই সম্পর্কের ধারাবাহিকতায়ই কি ভারতের মাটিতে হাসিনা ও তার অনুগত নেতাদের ঠাঁই মিলেছে? নাকি এর…

Read More

টেলিগ্রামের পর্দার আড়ালে একটি ক্ষমতাহীন রাজনীতির ট্র্যাজিক কমেডি চলছে। শেখ হাসিনার ভারতে আত্মগমনের এক বছর পর, তাঁর নেতৃত্বহীন দলে এখন টেলিগ্রামই মূল কণ্ঠস্বর। একসময় যাঁরা রাস্তায় থেকে রাজনীতি করতেন, তাঁরা এখন ভার্চুয়াল গ্রুপে রাতের বেলা দমবন্ধ আলোচনায় নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সেই আলোচনাও নিরাপদ নয়—এখন সেখানে অনুপ্রবেশ করেছে গোয়েন্দা, ভেতর থেকে ধরা পড়ছেন কর্মীরা। টেলিগ্রাম, ভিপিএন, অডিও ক্লিপ, ভার্চুয়াল মিটিং—এগুলো আজকের আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক বাস্তবতা। যেখানে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার ঢাক বাজিয়ে যারা বছর পার করেছে, তারাই এখন নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য ভিপিএনে ভরসা করছেন। দুঃখজনকভাবে এই বাস্তবতা শুধু প্রযুক্তিনির্ভর নয়, বরং রাজনৈতিক এক নিঃসঙ্গতা, যেখানে নিজেদের…

Read More

বাংলাদেশে যখন সরকার পরিবর্তনের হাওয়ায় ‘সংস্কার’ নামক রঙিন ফানুস উড়ছে, তখন সেই ফানুসের নিচেই চাপা পড়ে যাচ্ছে একের পর এক সংখ্যালঘুদের আর্তনাদ। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে যে আশার আলো দেখা গিয়েছিল, তা এখন ধীরে ধীরে কালো ধোঁয়ায় পরিণত হচ্ছে—আর সেই ধোঁয়ার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি যাদের শ্বাসনালীতে জমেছে, তারা এই দেশেরই নাগরিক—ধর্মীয় সংখ্যালঘু, যাদের নাকি নীতিগতভাবে “সবচেয়ে সমান অধিকার” থাকার কথা। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নেতারা স্পষ্ট ভাষায় বলছেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত কোনো কমিশনেই তাদের অংশগ্রহণ নেই। সংবিধান সংশোধন, প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস, বা এমনকি ন্যূনতম মতামতের জায়গাগুলোতেও তাদের ডাকা হয়নি। অর্থাৎ ‘সংলাপের বাংলাদেশে’ সংখ্যালঘুদের জন্য কোনো চেয়ারের ব্যবস্থা…

Read More

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে, গণঅভ্যুত্থানের মাত্র এক মাস পর ড. মো. মাহবুবুল আলম একটি নিবন্ধে বলেছিলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না।” তখন প্রায় সবাই আশাবাদী ছিলেন যে, দেশের রাজনৈতিক সংস্কার ও পুনর্গঠনের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু ২০২৫ সালের জুলাইতে এসে সেই আশাবাদ এখন প্রশ্নবিদ্ধ—বাংলাদেশ কি সত্যিই আবারো একটি বড় সুযোগ হারালো? কোটা সংস্কার থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন এক সময় একদলীয় শাসনের বিরুদ্ধে সার্বজনীন গণআন্দোলনে রূপ নেয়। সব মত-পথ, ধর্ম-বর্ণ, শ্রেণি-পেশার মানুষ রাজপথে এক হয়েছিলেন। দেশের মানুষ আশা করেছিল, অন্তর্বর্তী সরকার স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সঙ্গে পথ দেখাবে। কিন্তু সেই আশা অনেক ক্ষেত্রেই পূরণ হয়নি। একটি বড় বিভ্রান্তির…

Read More

রংপুরের গংগাচড়ার সাম্প্রতিক ঘটনাটি বাংলাদেশের বর্তমান ধর্মীয় সহনশীলতা, প্রশাসনিক প্রস্তুতি এবং সংখ্যালঘু নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। একটি সন্দেহভাজন ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে কীভাবে একটি সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে, এই ঘটনাই তার নির্মম উদাহরণ। বেতগাড়ী ইউনিয়নের এক কিশোরের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মের নবী সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ ওঠার পরপরই প্রশাসন তাকে গ্রেপ্তার করে এবং সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা দায়ের করে কারাগারে পাঠায়। অথচ প্রশাসনিক এই পদক্ষেপের পরও সহিংসতা ঠেকানো যায়নি। অভিযোগ ওঠে, মাইক ব্যবহার করে উত্তেজনা সৃষ্টি করে হাজারো মানুষকে উসকে দিয়ে হামলা চালানো হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, কিশোরটি নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং…

Read More