…
এডিটর পিক
২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে এক অনন্য রাজনৈতিক দৃশ্যপটের উদ্ভব ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের ছাত্র-ছাত্রী,…
Trending Posts
Trending Posts
- ইরানে এক কোটি মানুষের দুই সপ্তাহ চলার মতো পানি আছে
- দেশের ৩৫৩ পোশাক কারখানা বন্ধ, সোয়া লাখ শ্রমিক বেকার
- আলোচনা ছেড়ে দলগুলো রাজপথে কেন? নভেম্বর কি হতে যাচ্ছে?
- সাপ আর নেউল উভয়ের মুখে ভারতের চুমু খাওয়ার দিন শেষ
- গুলি ও নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগে কী বলছে সরকার
- যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের একচ্ছত্র ক্ষমতা ম্লান হলো মাত্র দুই দিনেই
- জম্মু ১৯৪৭: ইতিহাসের ছায়ায় চাপা পড়া এক মুসলিম গণহত্যা
- জামায়াতে ইসলামীর প্রত্যাবর্তন: আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সঙ্কট
Author: ডেস্ক রিপোর্ট
ইরানের রাজধানী তেহরান—একসময় বরফঢাকা পাহাড় আর সরু নদীর জলধারায় ঘেরা শহর—এখন দাঁড়িয়ে আছে এমন এক সঙ্কটের দুয়ারে, যেখানে কল খুললে পানি আসবে কি না, সেটাই হয়ে গেছে এক ধরনের লটারি। রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমই সতর্ক সাইরেন বাজিয়ে জানিয়েছে, শহরের প্রধান জলাধার আমির কাবির বাঁধে এখন যতটুকু পানি আছে, তা প্রায় এক কোটি মানুষের প্রয়োজন মিটিয়ে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ চলতে পারে। এক বছর আগেও যেখানে ৮৬ মিলিয়ন ঘনমিটার পানি ছিল, সেখানে এখন আছে মাত্র ১৪ মিলিয়ন ঘনমিটার। হিসেবটা নির্মম, আর সংখ্যার পেছনের বাস্তবতা আরও নির্মম—একটি মহানগরী ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে তার ‘ডে জিরো’র দিকে। এই ‘ডে জিরো’ আসলে কেমন একটি দিন হতে পারে,…
সাভারের একসময় কোলাহলময় একটি গার্মেন্টস এলাকার এখন চিত্র পাল্টে গেছে। বড় ফটকের বাইরে ঝুলছে মরিচা ধরা তালা, ভেতরে অন্ধকার সিঁড়ি আর ফাঁকা তলা। কয়েক মাস আগেও যেখানে লাঞ্চব্রেকে গমগম করত শ্রমিকদের হাসি–কথা, এখন সেখানে শুধু বাতাসের শব্দ আর ইটের গায়ে লাগানো পুরোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ছেঁড়া কাগজ। দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে একের পর এক কারখানা বন্ধ হওয়ার এই দৃশ্য শুধু কোনো শিল্প এলাকার গল্প নয়—এটি বাংলাদেশের বৈদেশিক আয়ের প্রধান উৎস, তৈরি পোশাকশিল্পের এক অনিশ্চিত সীমানায় পৌঁছে যাওয়ার ছবি। গত ১৪ মাসে সাভার, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে ৩৫৩টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে—এর মধ্যে কিছু স্থায়ী, কিছু অস্থায়ী। এর সঙ্গে জুড়ে আছে…
আট মাসের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের রাজনীতি যেন এক দীর্ঘ বৈঠকখানায় আটকে ছিল। সংবিধান সংস্কার, জুলাই জাতীয় সনদ, গণভোট আর আসন্ন নির্বাচন—সব প্রশ্নই ঘুরেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের গোল টেবিল ঘিরে। টানা বৈঠক, খসড়া, সংশোধন, ‘নোট অব ডিসেন্ট’—সব মিলিয়ে একটা ধারণা জন্মেছিল, অন্তত এই পর্বটা হয়তো তুলনামূলক শান্তিপূর্ণই কাটবে। কিন্তু নভেম্বর শুরু হতেই আবার সব হিসাব বদলে যাচ্ছে। দলগুলো আলোচনা ছেড়ে রাস্তার দিকে ফিরছে, ব্যস্ত হয়ে উঠছে সমাবেশ–শোভাযাত্রায়, কর্মসূচির পাল্টা-কর্মসূচিতে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে—এই নভেম্বর কি শুধু রাজনৈতিক প্রস্তুতির মাস, নাকি উত্তপ্ত এক সময়ের পূর্বাভাস? এর পেছনে মূল প্রেক্ষাপট জুলাই জাতীয় সনদ। ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের পর যে সনদকে নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা বলা হচ্ছে,…
দীর্ঘ সময় ধরে ভারতের পররাষ্ট্রনীতিকে বোঝানোর জন্য সবচেয়ে বেশি যে উপমাটি ব্যবহৃত হয়েছে, তা হলো—‘দুই নৌকায় পা রাখা’। একদিকে রাশিয়া, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্ব; কখনো মস্কোর কাছ থেকে সস্তায় তেল–অস্ত্র, আবার একই সঙ্গে ওয়াশিংটনকেও সন্তুষ্ট রাখা, কোয়াডে সক্রিয় থাকা, এশিয়া–প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশলে অংশ নেওয়া—দশকের পর দশক ভারত এই ভারসাম্য–রাজনীতিকে বেশ সফলভাবেই টেনে এনেছে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের তৃতীয় বছরে এসে, আর সাম্প্রতিক মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর, সেই পুরোনো খেলার মাঠ আর আগের মতো সমতল নেই। দুই নৌকায় পা রেখে শান্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকার জায়গাটা এখন ক্রমেই সরু হয়ে যাচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ভারতের জন্য রুশ তেল ছিল ‘একটা অপশন’। ২০২২…
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের পর অনেকে ভেবেছিলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে অন্তত একটি জিনিস বদলাবে—বিচারবহির্ভূত হত্যা আর হেফাজতে নির্যাতনের পুরনো সংস্কৃতি। কিন্তু কয়েক মাসের অভিজ্ঞতা বলছে, শাসকের মুখ বদলালেও গুলি, মৃত্যু আর অস্বীকারের গল্পটা খুব বেশি বদলায়নি। সংখ্যার হিসেবে আগের থেকে কম হতে পারে, কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে প্রাণহানি এবং সে সম্পর্কে অস্পষ্ট, প্রশ্নবিদ্ধ তদন্ত—এই পুরোনো চিত্রই যেন আবার ফিরে এসেছে নতুন রূপে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পরিসংখ্যান এই ধারাবাহিকতার একটা ঠান্ডা, কিন্তু কাঁপিয়ে দেওয়া হিসাব দেয়। অধিকারের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই অন্তত ৪০টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের হিসাব আরও বেশি—৬০। গুলিতে মৃত্যুর সংখ্যা আলাদা করে ধরলে দেখা যায়, প্রতিমাসে গড়ে কয়েকজন…
মার্কিন রাজনীতিতে এক নাটকীয় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছে সাম্প্রতিক দুটি দিন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের একচ্ছত্র প্রভাব যেন ভেঙে পড়েছে মুহূর্তেই। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের অপ্রত্যাশিত জয় ও সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তাঁর রাজনৈতিক অবস্থানকে নড়বড়ে করে তুলেছে। ট্রাম্প যেভাবে নিজের ক্ষমতাকে অবারিত ও সর্বময় মনে করতেন, সেই বিশ্বাস এখন কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ট্রাম্প আমেরিকার প্রশাসনিক, কূটনৈতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে এক নতুন ঢেউ তুলেছিলেন। “আমেরিকা ফার্স্ট” স্লোগানে তিনি দেশকে একধরনের একাকিত্বে ঠেলে দেন। চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করে, ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি করে, এমনকি জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকেও চাপে রাখেন। তাঁর এই আক্রমণাত্মক নীতিতে…
১৯৪৭ সাল। ভারত ও পাকিস্তান দুই রাষ্ট্রে বিভক্ত হচ্ছে উপমহাদেশ। সীমান্তের ওপারে মানুষ হঠাৎই ‘অপরজন’ হয়ে যায়। একদিকে রক্তাক্ত পাঞ্জাব, অন্যদিকে ছিন্নভিন্ন বাংলা—সবাই জানে এই দুই প্রদেশের গল্প। কিন্তু ইতিহাসের পাতার প্রান্তে থেকে গেছে জম্মুর নীরব চিৎকার। কাশ্মীর উপত্যকায় তখন তুলনামূলক শান্তি, কিন্তু জম্মুতে ততদিনে শুরু হয়েছে এক অপ্রকাশ্য যুদ্ধ—যেখানে মানুষের পরিচয়ই হয়ে উঠেছিল মৃত্যুদণ্ড। তরুণ বেদ ভাসিন তখন আঠারো বছরের কিশোর। পরবর্তীতে কাশ্মীর টাইমস-এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে তিনি লিখেছিলেন, “মাউন্টব্যাটেনের পরিকল্পনা ঘোষণার পর থেকেই জম্মুতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গুজব ছড়ানো হয় যে মুসলমানরা অস্ত্র তুলে নেবে, তারা হিন্দু ও শিখদের হত্যা করবে। বাস্তবে ঘটে তার উল্টোটা। প্রশাসনের নেতৃত্বে…
বাংলাদেশের রাজনীতিতে যদি জামায়াতে ইসলাম ক্ষমতায় আসে, তাহলে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপক প্রভাব পড়বে—এটা এখন আলোচনার অন্যতম প্রধান বিষয়। দীর্ঘ সময় নিষিদ্ধ থাকা দলটি সাম্প্রতিক সময়ে আবার সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে, এবং সেই সম্ভাবনা নিয়ে সমাজে যেমন আগ্রহ, তেমনি উদ্বেগও বেড়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে ধর্মনিরপেক্ষ নীতিতে চললেও, জামায়াতের ক্ষমতায় আসা মানে রাজনীতির ধারায় এক বড় পরিবর্তন। এই পরিবর্তন যেমন নতুন চিন্তার দ্বার খুলতে পারে, তেমনি তা আবার দেশের সামাজিক ও কূটনৈতিক কাঠামোতে গভীর সমস্যার জন্মও দিতে পারে। প্রথমত, দেশের অভ্যন্তরীণ সমাজব্যবস্থা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হতে পারে। বাংলাদেশের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষ নীতিকে স্বীকৃতি দিলেও জামায়াতে ইসলামী অতীতে এই নীতির…
২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে এক অনন্য রাজনৈতিক দৃশ্যপটের উদ্ভব ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, তরুণ পেশাজীবী, এবং অনলাইন-সচেতন নাগরিক সমাজের তরুণ অংশ—সবাই যেন এক নতুন রাজনৈতিক জাগরণের দিকে ধাবিত হয়। এটি ছিল এমন এক সময় যখন বহু বছরের রাজনৈতিক স্থবিরতা ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতি জনরোষ নতুন আকারে প্রকাশ পায়। “জেনারেশন জেড রেভলিউশন” নামে পরিচিত এই আন্দোলন কেবল একটি ছাত্র আন্দোলন ছিল না; এটি ছিল এক যুগান্তকারী সামাজিক ও রাজনৈতিক চেতনার স্ফুরণ, যেখানে তরুণরা প্রথমবারের মতো বিশ্বাস করেছিল যে পরিবর্তন সম্ভব। তারা মনে করেছিল, পুরনো রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও দলীয় স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে তাদের আওয়াজই হবে বাংলাদেশের নতুন ভোরের সূচনা।…
আজকের পৃথিবীতে মানুষ যতই বাড়ছে, ততই বাড়ছে খাবারের চাহিদা। কৃষিজমি কমছে, জলবায়ু পরিবর্তন ফসলের ক্ষতি করছে, পশু পালন ব্যয়বহুল হয়ে পড়ছে। এই অবস্থায় বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন নতুন এক সমাধান—কৃত্রিম খাদ্য বা ল্যাব–তৈরি খাবার। ভবিষ্যতে আমাদের পাতে হয়তো মুরগি, গরুর মাংস বা মাছ থাকবে, কিন্তু সেগুলো আসবে কোনো খামার থেকে নয়, বরং ল্যাবরেটরি থেকে। কৃত্রিম খাদ্য বলতে বোঝায় এমন খাবার যা প্রকৃতভাবে জন্মানো নয়, বরং বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায় ল্যাব–গ্রো মাংস বা সিন্থেটিক মাংস। বিজ্ঞানীরা প্রাণীর শরীর থেকে অল্প কিছু কোষ সংগ্রহ করেন, তারপর সেগুলোকে পুষ্টিকর দ্রবণে বাড়িয়ে তোলেন। কিছু সময় পর সেই কোষগুলো আস্ত মাংসের টুকরোয়…