Author: ডেস্ক রিপোর্ট

ভিক্টোরিয়ান যুগে (১৮৩৭–১৯০১) নারীদের জীবন ছিল কঠোর সামাজিক বিধি, লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য এবং সীমিত স্বাধীনতার মধ্যে আবদ্ধ। এই সময়টি ব্রিটিশ ইতিহাসে শিল্পবিপ্লব, সাম্রাজ্য বিস্তার ও নৈতিকতার কড়া সংজ্ঞার জন্য পরিচিত হলেও নারীদের জন্য এটি ছিল মূলত নিয়ন্ত্রিত ও পুরুষকেন্দ্রিক এক সমাজব্যবস্থা। ভিক্টোরিয়ান সমাজে নারীর প্রধান পরিচয় নির্ধারিত হতো স্ত্রী, মা ও গৃহকর্ত্রী হিসেবে। “আদর্শ নারী” বলতে বোঝানো হতো এমন একজনকে, যিনি নীরব, বিনয়ী, ধর্মভীরু ও আত্মত্যাগী। নারীর স্থান ছিল ঘরের ভেতরে, আর পুরুষের স্থান বাইরের জগতে—এই ধারণাকে বলা হতো “separate spheres” বা পৃথক ক্ষেত্রের তত্ত্ব। এর ফলে নারীরা সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা থেকে প্রায় পুরোপুরি বাদ পড়ে যেতেন। আইনগত দিক…

Read More

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসরে যে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তা সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে ব্যতিক্রমী। এই অনিশ্চয়তার মূল কেন্দ্রে রয়েছে দোদুল্যমান বা সুইং ভোটারদের অস্বাভাবিক উত্থান, যা প্রচলিত রাজনৈতিক হিসাব–নিকাশকে ক্রমেই অকার্যকর করে তুলছে। বিভিন্ন নির্বাচনপূর্ব জরিপে দেখা যাচ্ছে, প্রায় অর্ধেক ভোটার এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। ইনোভিশনের জরিপ অনুযায়ী এই হার প্রায় ৪৯ শতাংশ। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সুইং ভোটার নতুন কোনো ধারণা নয়, কিন্তু তাদের সংখ্যা যখন মোট ভোটারের প্রায় অর্ধেকের কাছাকাছি পৌঁছে যায়, তখন নির্বাচনের ফলাফল শুধু অনিশ্চিতই নয়, অনেক ক্ষেত্রে অপ্রত্যাশিত ও অস্থির হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক বিজ্ঞানের ভাষায় এই পরিস্থিতিকে বলা হয় ‘ক্রিটিক্যাল ভোলাটিলিটি’। অর্থাৎ ভোটারদের মনোভাব…

Read More

আসন্ন শীত আফগানিস্তানের জন্য আবারও এক গভীর মানবিক সংকটের বার্তা নিয়ে আসছে। পাহাড়ঘেরা এই দেশটিতে শীত মানেই শুধু তাপমাত্রার পতন নয়, বরং খাদ্য, আশ্রয় ও জীবনের মৌলিক নিরাপত্তা হারানোর ভয়। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক সতর্কবার্তা সেই আশঙ্কাকেই আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। বর্তমানে আফগানিস্তানে তীব্র খাদ্য অনিরাপত্তার মুখে পড়তে পারে এমন মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ৭০ লাখেরও বেশি, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ লাখ বেশি। এই সংখ্যা শুধু একটি পরিসংখ্যান নয়; এর প্রতিটি অঙ্কের পেছনে আছে ক্ষুধার্ত শিশু, উদ্বিগ্ন মা-বাবা এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকা অসংখ্য পরিবার। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি বিশ্লেষণ বিভাগের পরিচালক জঁ-মার্তাঁ বাউয়ার স্পষ্ট…

Read More

সিডনির বন্ডাই বিচ অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে পরিচিত সমুদ্রসৈকতগুলোর একটি। নীল জলরেখা, সাদা বালু, পর্যটকের ভিড়, সার্ফারের ঢেউ ধরার প্রতিযোগিতা—এই সবকিছুর মাঝেই রবিবারের সকালে হঠাৎ করে বন্দুকের শব্দ যেন পুরো দৃশ্যপটটাই পাল্টে দেয়। যে জায়গাটি আনন্দ, উৎসব আর নিরাপদ জীবনের প্রতীক হিসেবে পরিচিত ছিল, কয়েক মিনিটের মধ্যেই তা পরিণত হয় মৃত্যু, আতঙ্ক আর শোকের কেন্দ্রে। এই হামলায় ১৫ জন মানুষ প্রাণ হারান, আহত হন আরও অন্তত ২১ জন। ঘটনাটি শুধু অস্ট্রেলিয়াকেই নয়, নাড়িয়ে দেয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও। এই হামলার কেন্দ্রবিন্দুতে যে দুজনের নাম উঠে এসেছে, তারা হলেন সাজিদ আকরাম এবং তার ২৪ বছর বয়সী ছেলে নাভিদ আকরাম। পুলিশের ভাষ্যমতে, হামলাকারীদের একজন ঘটনাস্থলেই নিহত…

Read More

ব্রিটিশ কলম্বিয়ার উপকূলে একদিনের একটি দৃশ্যই যেন ওলটপালট করে দিয়েছে সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানীদের বহুদিনের ধারণা। স্যামন মাছের ঝাঁক যখন আতঙ্কে পানির ওপর ছুটে বেড়াচ্ছে, ঠিক তখনই বিজ্ঞানীদের চোখে পড়ল এক অদ্ভুত দৃশ্য—কিলার হোয়েল নামে পরিচিত অরকা এবং প্যাসিফিক হোয়াইট–সাইডেড ডলফিন একসঙ্গে, একই লক্ষ্য নিয়ে শিকারে নেমেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী বলে পরিচিত দুই শিকারি প্রাণীর এই যুগলবন্দী শুধু বিরল নয়, বরং সামুদ্রিক পরিবেশে সহযোগিতার ধারণাকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে গবেষকদের। সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের আচরণ নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা হলেও অরকা ও ডলফিনকে একসঙ্গে শিকার করতে দেখা যায়নি বললেই চলে। সাধারণত অরকাদের ধরা হয় শীর্ষ শিকারি হিসেবে—সমুদ্রের ‘এপেক্স প্রিডেটর’। তারা দলবদ্ধভাবে শিকার করে, জটিল কৌশল…

Read More

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের হাত ধরে একজন নারী চিকিৎসকের হিজাব টেনে নামিয়ে দেওয়ার দৃশ্যটি কয়েক সেকেন্ডের একটি ভিডিও হলেও এর অভিঘাত ছড়িয়ে পড়েছে বহুস্তরে—নারীর সম্মান, ধর্মীয় স্বাধীনতা, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার আচরণ এবং ভারতের সংখ্যালঘু রাজনীতির জটিল বাস্তবতায়। একটি নিয়োগপত্র বিতরণ অনুষ্ঠান, যা হওয়ার কথা ছিল একজন তরুণ চিকিৎসকের জীবনের গর্বের মুহূর্ত, সেটিই মুহূর্তের মধ্যে পরিণত হয় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিতর্কে। ভিডিওতে দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার সময় হঠাৎ প্রশ্ন করেন, “এটা কী?”—এরপর সামনের দিকে ঝুঁকে ওই নারী চিকিৎসকের হিজাব টেনে নিচে নামিয়ে দেন। ঘটনাটি ঘটে প্রকাশ্য মঞ্চে, অসংখ্য ক্যামেরার সামনে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী, ঊর্ধ্বতন আমলা এবং নবনিযুক্ত…

Read More

১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য দিন। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম, ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ, দুই লাখের বেশি নারী নির্যাতনের শিকার হওয়া এবং কোটি মানুষের বাস্তুচ্যুত জীবনের পর এই দিনেই একটি জাতি স্বাধীনতার স্বাদ পায়। এই বিজয় ছিল মূলত বাঙালির—একটি নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর রাষ্ট্র হয়ে ওঠার ইতিহাস। অথচ স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এসে যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৬ ডিসেম্বরকে ‘ভারতের বিজয় দিবস’ হিসেবে উল্লেখ করে একটি পোস্ট দেন এবং সেখানে বাংলাদেশের নাম একবারও উচ্চারণ করেন না, তখন সেটি আর কেবল কূটনৈতিক অসতর্কতা থাকে না; বরং এটি দীর্ঘদিনের একটি প্রবণতার পরিণত রূপ হয়ে ওঠে—বাংলাদেশের বিজয়ের কৃতিত্ব ধীরে ধীরে নিজেদের ঘরে টেনে…

Read More

মুক্তিযুদ্ধ ইচ্ছাকৃতভাবে দীর্ঘ করার প্রশ্নটি তুললেই একটি সংবেদনশীল জায়গায় পৌঁছাতে হয়—বাংলাদেশের পক্ষের কেউ কি এমন কিছু করেছিলেন, যার ফলে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হয়েছে? ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, এই প্রশ্নের সরল “হ্যাঁ” বা “না” উত্তর নেই। তবে কিছু বাস্তবতা ও সিদ্ধান্ত ছিল, যেগুলো যুদ্ধের গতি প্রভাবিত করেছে, যদিও সেগুলোর পেছনে দেশবিরোধী উদ্দেশ্যের প্রমাণ পাওয়া যায় না। ১৯৭১ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব কার্যত ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেপ্তার হন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বড় অংশ ভারতে আশ্রয় নেয়। এই পরিস্থিতিতে একটি কার্যকর কমান্ড স্ট্রাকচার গড়ে তুলতে সময় লেগেছে। এপ্রিলের ১০ তারিখ অস্থায়ী সরকার গঠিত হলেও পূর্ণাঙ্গ প্রশাসনিক ও সামরিক সমন্বয়…

Read More

আনিস আলমগীরের গ্রেফতারকে ঘিরে যে প্রশ্নটি সবচেয়ে বেশি ঘুরে ফিরে আসছে, তা হলো—এই ঘটনাটি কি কেবল একটি আইনি প্রক্রিয়া, নাকি এর মধ্য দিয়ে সরকারের সমালোচনা না করার একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হলো। একজন সিনিয়র সাংবাদিককে রাতভর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে আটকে রেখে পরে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখানো নিছক একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ খুব কমই আছে। কারণ এই গ্রেফতারের প্রেক্ষাপট, অভিযোগের ধরন এবং সাম্প্রতিক সময়ের সামগ্রিক সাংবাদিক নিপীড়নের চিত্র একসঙ্গে মিলিয়ে দেখলে বিষয়টি গভীর উদ্বেগের জন্ম দেয়। আনিস আলমগীর দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতায় যুক্ত একজন পরিচিত মুখ। ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধ কাভার করার মাধ্যমে তিনি জাতীয়ভাবে পরিচিতি পান। পরবর্তীতে তিনি…

Read More

৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশে রাজনীতির অঙ্গন ও প্রশাসনিক কাঠামোতে যে আমূল পরিবর্তন এসেছে, তার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর গ্রেফতার ও পরবর্তী জামিনে মুক্তি। একসময় যারা ক্ষমতার চূড়ায় ছিলেন, তাঁরা এখন আইনের কাঠগড়ায়, কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের বড় একটি অংশ আবারও স্বাধীনভাবে বাইরে চলাফেরা করছেন। এই দ্রুত মুক্তি, বিশেষ করে যাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, নাশকতা ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ রয়েছে, তা কেবল আইনি নয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকেও গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার ওপর চালানো সহিংসতা, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অসংখ্য…

Read More