তিনটি টেলিভিশন চ্যানেলের তিন সাংবাদিকের চাকরিচ্যুতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এ বিষয়ে দুইয়ে দুইয়ে চার না মেলানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ কথা বলেন ফারুকী।
পোস্টে উপদেষ্টা লেখেন, ‘ম্যাস মার্ডার ডিনায়ালের একটা সূক্ষ্ম চেষ্টা থেকে কালকের প্রেস কনফারেন্সে যে কথাগুলা বলেছেন তিনজন সাংবাদিক, সেই কথাগুলা জুলাই দেখেছে এমন যেকোনো সেনসেটিভ মানুষকেই আহত করতে পারে। যে মা তার সন্তান হারিয়েছে মাত্র আট মাস আগে, যে সন্তান খুনির গুলিতে আহত হয়েছে, যে বোন-যে ভাই শহীদ হওয়ার হাত থেকে বেঁচে এসেছে, তাদের বুকে শেলের মতো বিঁধেছে সাংবাদিক তিনজনের কথা।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনা থেকে মাত্র আট মাস দূরে দাঁড়িয়ে আমরা, খুনির বিচার হয় নাই এখনো। পশ্চিমে বিচার হওয়ার পরেও এখনো হলোকাস্ট ডিনায়াল মানুষের বুকে লাগে। আর কালকে যখন প্রশ্ন করা হলো, একজন খুনিকে খুনি বলা যাবে কিনা- এই প্রশ্ন জনতার জুলাইকেই বেমালুম নাই করে দেওয়ার একটা চেষ্টা হিসেবেই দেখেছে সবাই। প্রেস কনফারেন্সে তাদের কথাগুলা আমাকে বিস্মিত করলেও ধৈর্য নিয়ে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তারপর মানুষ তাদের ক্ষোভ জানিয়েছে।’
সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আজকে সন্ধ্যায় জানলাম চ্যানেলগুলো তাদের চাকরিচ্যুত করেছে। প্রত্যেক চ্যানেলেরই নিজস্ব এডিটোরিয়াল পলিসি থাকে। তারা সেই পলিসির আলোকে কী সিদ্ধান্ত নেবে সেটা তাদের ব্যাপার। তারপরও অনলাইনে কাউকে কাউকে একটা কথা বলার চেষ্টা করতে দেখছি যে, আমাকে প্রশ্ন করায় চাকরি গেছে তাদের। হাস্যকর কথা। বিষয়টা যে আমি না, বিষয়টা যে জুলাই এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পলিসির ব্যাপার- এটাও তারা বুঝতে পারছে না।’
পোস্টের শেষ অংশে ফারুকী বলেন, ‘সবার উদ্দেশে ফর দ্য রেকর্ড বলে রাখছি, তাদের চাকরির ব্যাপারে আমাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো রকম সংশ্লিষ্টতা নাই। এই বিষয়ে সংশয় থাকলে ওই চ্যানেলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করলেই সবাই সত্য জানতে পারবেন। অনুমানে দুইয়ে দুইয়ে চার না মেলানোই ভালো।’
এর আগে সোমবার সংস্কৃতি উপদেষ্টার সংবাদ সম্মেলনে আপত্তিকর প্রশ্ন করার জেরে তিন চ্যানেলের তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুত করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
চ্যানেল তিনটি হলো- এটিএন বাংলা, চ্যানেল আই ও দীপ্ত টিভি। এর মধ্যে আবার দীপ্ত টিভির সংবাদ সম্প্রচার স্থগিত রাখা হয়েছে। যা স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা।
আপনার মতামত জানানঃ