জার্মানি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, হিটলার এই বিষয়ে নানা রহস্য ছড়িয়ে আছে পৃথিবীতে। এদের নিয়ে ছড়ানো আছে যেমন ভীতিকর কিছু অভিজ্ঞতা তেমনি এসবের পাশাপাশি অনেক গুজবই ছড়িয়ে আছে পৃথিবীতে। এর কিছু শত্রুপক্ষ ছড়িয়েছে কিছু ছড়িয়েছে মানুষের মনের রহস্য থেকে। তার কিছুর ভিত্তি খুঁজে পাওয়া গেলেও অধিকাংশেরই তেমন কোনো ভিত্তি নেই।
হিটলারের একটি অণ্ডকোষ ছিল
এটা রটানো হয়েছিল যে, হিটলারের একটি অণ্ডকোষ এবং একটি মাইক্রো লিঙ্গ ছিল। এই গুজবটার উদ্ভব হয়েছিল একটি ব্রিটিশ গান থেকে। তবে তার ডাক্তাররা নিশ্চিত করেছিলেন, তার একটি স্বাভাবিক পুরুষাঙ্গ ছিল এবং উভয় অণ্ডকোষ ছিল। চারদিকে গুজব রটেছিল— প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের একটি অণ্ডকোষ হারিয়ে গিয়েছিল।
হিটলার বিড়ালকে ভয় পেতেন
আরেকটা গুজব রটানো ছিল যে হিটলার বিড়াল ভয় পেতেন। তবে এই গুজবের সূত্রপাত কোথা থেকে হয়েছিল তার কোনো প্রমাণ নেই। আসলে হিটলার বিড়াল ভয় পেতেন না। পশুপ্রাণীকে খুবই পছন্দ করতেন। কখনো তিনি বিড়াল ভয় পেতেন বলে কোনো তথ্য নেই।
শুরুতেই সমকামীদের বিরুদ্ধে ছিলেন খড়্গহস্ত
নাৎসিরা ক্ষমতায় আসার প্রথম দিন থেকেই সমকামীদের বিরুদ্ধে বিচার শুরু করেন বলে প্রচার রয়েছে। তবে নাৎসিরা ক্ষমতায় আসার শুরুতেই সমকামীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। প্রকৃতপক্ষে, যখন ইহুদিদের বিচার করা হচ্ছিল, তখনও সমকামীরা ছিল যারা বিভিন্ন ব্যবসার মালিক ছিল।
অনেক পরে হঠাৎ করেই নাৎসিরা সমকামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করে। একজন একজন করে নয়, সবাইকে একসাথে দমনের পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে। তাদেরকে কনসেনট্রেশন/ডেথ ক্যাম্পে পাঠানো হয়। তাদের কারাগারের ইউনিফর্মে গোলাপী ত্রিভুজ লেখা ছিল।
হিটলার গেলমান পছন্দ করতেন
এটা আরেকটি গুজব যার কোনো ভিত্তি নেই। এটা ছড়ানো হয়েছিল হিটলারকে অমানবিক হিসেবে উপস্থাপন করার জন্য। হিটলার কখনো বাচ্চা শিশুদের পছন্দ করে বিছানায় নিতেন বলে প্রমাণ নেই।
হিটলার হলোকাস্ট সম্পর্কে জানতেন না
হিটলার হলোকাস্ট সম্পর্কে খুব ভালোভাবেই জানতেন। হলোকাস্ট ১৯৪১ সালে শুরু হয়েছিল, যার এখনও প্রমাণ রয়েছে কমিশার অর্ডার, বারবারোসা ডিক্রি এবং জেগার রিপোর্টে। এমন কোনো তথ্য প্রমাণ নেই যে ক্যাম্পে কী হচ্ছে সেটা হিটলার জানত না। এটা অসম্ভব এক ব্যাপার। এটা তিনি অবশ্যই ভালো করেই জানতেন। যেমন তিনি জানতেন পোল্যান্ড এবং অন্যান্য দখলকৃত দেশগুলিতে ইহুদিদের সাথে কী ঘটছে।
হিটলার জার্মানিকে ভালোবাসেনি
হিটলার জার্মানিকে ভালোবাসতেন। এমনকি, ১৯৩৯ সালে দেশটিতে ‘অ্যাডলফ হিটলার ডে’ নামে একটি ছুটির দিবস পাশ করেছিলেন। এদিন নিম্ন আয়ের পরিবারদের ২০ রিচমার্ক( তখনকার জার্মানি টাকা) দেওয়া হত এবং এক কপি ‘মাইন ক্যাম্প’ বই ফ্রি দেওয়া হত।
যুদ্ধ শেষে যদিও সমস্ত ক্ষয়-ক্ষতির জন্য তিনি জার্মানিকে দোষারোপ করেছিলেন। কিন্তু দিন শেষে তিনি জার্মানি জাতিভক্ত ছিলেন এবং ১৯৪৫ সালে জার্মানিতেই মৃত্যুবরণ করেন।
লেখা ও ছবি: Luke Harrison, WWII Enthusiast
আপনার মতামত জানানঃ