ভারতের উত্তরপ্রদেশে লাভ জিহাদ বা ধর্মান্তরণ প্রতিরোধী আইনে প্রথম মামলাটি নিয়ে আদালতে সমালোচনার মুখে পড়ল যোগী আদিত্যনাথের প্রাদেশিক সরকার। ওই আইনে প্রথম অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে কোনও তথ্যপ্রমাণ জমা দিতে পারেনি রাজ্য পুলিশ। বৃহস্পতিবার ইলাহাবাদ হাইকোর্টে তা স্বীকার নিতে বাধ্য হয়েছে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ। যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে ওই আইন পাশ হওয়ার দু’দিন পর নাদিম নামে এক শ্রমিকের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছিল লাভ জিহাদের অভিযোগ। সেই মামলাতেই বৃহস্পতিবার হলফনামা দেয় রাজ্যপুলিশ।
আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত এক সংবাদে জানা যায়, যোগীর আদিত্যনাথের প্রশাসনের পক্ষে থেকে বৃহস্পতিবার আদালতে ৬ পাতার ‘সংক্ষিপ্ত’ হলফনামা জমা দেওয়া হয়। তাতে ওই অভিযোগের কোনও সত্যতা মেলেনি বলে জানানো হয়েছে আদালতকে। আটক নাদিমের আইনজীবী সৈয়দ ফারমান আহমদ নকভি বলেন, রাজ্য সরকার আদালতে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে, ধর্মান্তরণের চেষ্টার এই অভিযোগ মিথ্যা। বিয়ের জন্য মহিলার ধর্ম জোর করে বদলানোর চেষ্টা হচ্ছিল এমন অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। তবে নাদিম যে অক্ষয়কে হুমকি দিয়েছিল তার উল্লেখ রয়েছে হলফনামায়। সেই অপরাধের উল্লেখ করে নাদিমের বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়ের করা হয়েছে ইতিমধ্যেই।
উল্লেখ্য যে, উত্তরপ্রদেশে লাভ জিহাদ বিরোধী আইন পাশ হওয়ার পরেরদিন গত ২৯ নভেম্বর মুজফফরনগরের বাসিন্দা পেশায় ওষুধপ্রস্তুতকারক সংস্থার শ্রমিক ঠিকাদার অক্ষয় কুমার ত্যাগী অভিযোগ দায়ের করেন নাদিম এবং তাঁর ভাই সলমনের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারীর দাবি, নাদিম তাঁর বাড়িতে যাতায়াত করত এবং সেই সুযোগ নিয়ে তাঁর স্ত্রী পারুলকে ‘প্রেমের ফাঁদে’ ফেলে। নাদিম পারুলকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পারুলের ধর্মান্তরণের চেষ্টা করছে বলে লেখা হয় এফআইআর-এ। নাদিম তার স্ত্রীকে মোবাইল ফোন উপহার দিয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন অক্ষয়।
ইলাহাবাদ হাইকোর্টে ওই এফআইআর বাতিলের পাল্টা দাবি জানিয়েছিল নাদিম। হাইকোর্টের বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছিলেন, পুলিশ এ ক্ষেত্রে কখনই দমনমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে না। নাদিমের জন্য নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করার নির্দেশও দিয়েছিলেন ওই বিচারপতি। আদালত আবারও নাদিমকে নিরাপত্তা দেওয়ার মেয়াদ বাড়িয়েছে। আগামী ১৫ জানুয়ারি আদালত মামলার শুনানীর পরবর্তী দিন ধার্য্য করেছে। সুত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
আপনার মতামত জানানঃ