
১৪ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের বিধিনিষেধের মধ্যে যাদের একান্তই বাইরে যাওয়া প্রয়োজন হবে তাদের জন্য মুভমেন্ট পাসের ব্যবস্থা করছে বাংলাদেশ পুলিশ। এই পাসধারী ব্যক্তি বাধামুক্তভাবে সড়কে চলাচল করতে পারবেন। তবে সবাই এই পাস পাবেন না। শুধুমাত্র জরুরি সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হবে এই বিশেষ পাস।
এজন্য একটি অ্যাপস তৈরি করছে পুলিশ। এর নাম ‘মুভমেন্ট পাস অ্যাপস’। মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) এই অ্যাপস উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। যাদের জরুরি ভিত্তিতে বাইরে যাওয়া প্রয়োজন হবে তারা ‘মুভমেন্ট পাস অ্যাপস’-এর মাধ্যমে পুলিশের কাছে আবেদন করবেন।
পুলিশ সদরদপ্তর সূত্র জানায়, সদর দপ্তরের আইসিটি উইংয়ের সমন্বয়ে শুরু হতে যাচ্ছে এ কার্যক্রম। জরুরি পণ্য পরিবহন, সেবাদানসহ ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের যাচাই-বাছাই করে দেওয়া হবে এই পাস। মুদি দোকানে কেনাকাটা, কাঁচা বাজার, ওষুধপত্র, চিকিৎসা, চাকরি, কৃষিকাজ, পণ্য পরিবহন ও সরবরাহ, ত্রাণ বিতরণ, পাইকারি/খুচরা ক্রয় পর্যটন, মৃতদেহ সৎকার, ব্যবসা ও অন্যান্য ক্যাটাগরিতে দেওয়া হবে এই পাস। যাদের বাইরে চলাফেরা প্রয়োজন কিন্তু কোনো ক্যাটাগরিতেই পড়েন না তাদের ‘অন্যান্য’ ক্যাটাগরিতে পাস দেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।
সড়কে কোথাও চলাচলের কারণে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হলে এ পাস দেখালেই তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে যেতে দেওয়া হবে। পুলিশ সদরদপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, কোনো ব্যক্তির বাবা-মা/পরিবারের কেউ যদি অন্য জেলায় মারা যান, তবে তিনি অ্যাপের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে পাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদন যৌক্তিক হলে তিনি পাস পেয়ে যাবেন।
পুলিশ সদরদফতর সূত্র জানিয়েছে, বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করা যাবে পাসের জন্য। এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে নিজের ফোন নম্বর, জন্ম তারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর ও ছবিসহ বেশ কয়েকটি তথ্য দিতে হবে। কোন থানা থেকে কোন থানা এলাকায় যাবেন সেই তথ্যও দিতে হবে। সব তথ্য দেওয়ার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চলে আসবে ই-পাস। একটি পাসের মেয়াদ থাকবে ৩ ঘণ্টা।
এর আগে করোনা সংক্রমণ মারাত্মকভাবে বেড়ে যাওয়ায় প্রথম দফায় মানুষের চলাচল ও কার্যক্রমে বিধি-নিষেধ আরোপের পর আগামী ১৪ এপ্রিল (বুধবার) থেকে সাত দিনের জন্য কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
বাংলাদেশে গতবছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ দেখা যাওয়ায় ১৮ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ২৬ মার্চ থেকে কঠোর লকডাউন বা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে জনজীবন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করার মধ্যে আবারও বেড়ে যায় করোনা সংক্রমণ। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনও বন্ধ রয়েছে।
সবশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় দেশে রেকর্ডসংখ্যক ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ২০১ জন। আজ সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩৪ হাজার ৯৬৮ জনের। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৫৯ শতাংশ। এ পর্যন্ত দেশে মোট ৬ লাখ ৯১ হাজার ৯৫৭ জনের করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ৯ হাজার ৮২২ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৮১ হাজার ১১৩ জন।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১১০৯
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ