সৌদি আরবে মসজিগুলোকে গ্রন্থাগার থেকে ‘উগ্রবাদী’ সাহিত্যের নিদর্শন সরিয়ে ফেলার পাশাপাশি অনুমতি ছাড়া অমুসলিমদের ধর্মীয় উপদেশ দেওয়া ও তাদের মধ্যে ইসলাম ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে সৌদি আরবের ইসলাম ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী শেখ আব্দুল লতিফ আল-শেখ এ নির্দেশনা জারি করেন বলে জানানো হয়েছে।
সৌদি গেজেটের একটি প্রতিবেদন অনুসারে সৌদি আরবের ইসলাম ধর্মবিষয়ক মন্ত্রী শেখ আব্দুল লতিফ আল-শেখ গোটা রাজ্যের মসজিদগুলোকে সমস্ত গ্রন্থাগারের বই পুনর্বিবেচনার করে উগ্রবাদী এবং পক্ষপাতদুষ্ট লেখা সরিয়ে ফেলার এই নির্দেশ দেন।
মসজিদ কর্মকর্তা ও ইমামদের পাঠানো পাঁচ দফা নির্দেশনায় অনুমতি ছাড়া ‘দাওয়াহ’ প্রচার দণ্ডনীয় অপরাধ বলেও উল্লেখ করা হয়। দাওয়াহ বলতে অমুসলিমদের ইসলামের পথে আনতে উৎসাহিত করাকে বোঝায়। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া এর কোনকিছু করা হলে, সীমালঙ্ঘনকারীরে শাস্তির আওয়াতায় আনা হবে বলেও জানানো হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মন্ত্রণালয় থেকে মসজিদের গ্রন্থাগারকে বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞানভান্ডার হিসেবে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয় এবং বুদ্ধিজীবী ও যারা জ্ঞান অন্বেষণ করেন তাদের পৃষ্ঠপোষক হয়ে ওঠার পরামর্শ দেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয় থেকে মসজিদগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয় যেন গ্রন্থাগারগুলোতে যে সব বই প্রয়োজনীয় ও উপকারি জ্ঞান আহরণের জন্য সেগুলোই যেন রাখা হয়। পাশাপাশি উগ্রবাদী চিন্তা ধারণ করে, এমন বই সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি মসজিদের যাবতীয় কার্যক্রমের বিষয়ে প্রশাসনকে নিয়মিত অবহিত করতেও কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মসজিদের কর্মীদের নিজ নিজ গ্রন্থাগারে থাকা বইয়ের তালিকা তৈরি করতে এবং প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া নতুন কোনো বই অন্তর্ভুক্ত না করতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ইমাম ও ধর্মীয় বক্তাদের সৌদি মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘বুদ্ধিবৃত্তিক নিরাপত্তা প্রশিক্ষণে’ অংশ নিতেও উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে নির্দেশনায়। পাশাপাশি সম্মেলন এবং বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মন্ত্রণালয় মসজিদের ইমামদের সঠিক বিশ্বাস ও শরিয়াহ শাসনকে মানুষের মধ্যে তুলে ধরতে বলেছেন। ভালো ব্যবহার ও আদর্শকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন। পাশাপাশি যোগ্য নাগরিক হওয়া, শাসকদের মেনে চলা এবং অনৈতিক বিষয় এড়িয়ে চলতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে।
এই নির্দেশনায় মসজিদের নিয়মকানুন ও দাওয়াহ সম্পর্কেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়, শুধু প্রতিদিনের পাঁচ ওয়াক্ত বাধ্যতামূলক নামাজ ও জানাজার পরই ‘দাওয়াহ’ জাতীয় বক্তব্য দিতে পারবেন ইমামরা।
এসডব্লিউ/এসএস/২১৪০
আপনার মতামত জানানঃ