মহামারি করোনা ভাইরাসে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। তবে প্রতিটা দেশের করোনায় মৃতদের সংখ্যা নিয়ে দেশের সরকারগুলো মিথ্যাচার করে। করোনায় মৃতদের প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে সরকার অনেক কমিয়ে বলে। বিশ্বজুড়ে গত দেড় বছরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যত মানুষ মারা গেছেন, তা দেশগুলোর সরকারি হিসাবের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড এভাল্যুয়েশন (আইএইচএমই)-এর বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর রয়টার্সের।
কভিড মহামারী পৃথিবী জুড়ে প্রায় ৭০ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়েছে বলে ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড এভাল্যুয়েশন (আইএইচএমই)-এই গবেষণায় দাবি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশগুলো শুধুমাত্র হাসপাতালে মারা যাওয়া রোগীদের হিসাব রাখছে অথবা যারা নিশ্চিতভাবে শনাক্ত হচ্ছেন তাদের।
বিশ্বের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার তুলনামূলক হিসাব তুলে ধরা একটি স্বাধীন স্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থা আইএইচএমই। অতীতে হোয়াইট হাউসও সংস্থাটির দেয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়েছে। এর প্রতিবেদনগুলো জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকেন।
আইএইচএমই’র মতে, কোনো দেশে করোনায় মৃত্যুর হারের সঙ্গে সেখানে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যার খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
সংস্থাটির পরিচালক ক্রিস্টোফার মুরে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আপনি যদি পরীক্ষা খুব বেশি না করেন, তাহলে করোনায় অনেক মৃত্যু এড়িয়ে যাবেন।
মহামারিপূর্ব সময়ে সব ধরনের কারণে মৃত্যুর প্রবণতার সঙ্গে মহামারির সময়ে সর্বমোট মৃত্যুর সংখ্যার তুলনামূলক হিসাব করে করোনায় মৃত্যুর সম্ভাব্য প্রকৃত সংখ্যা বের করেছে আইএইচএমই।
তাদের হিসাব বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত করোনায় অন্তত ৯ লাখ ৫ হাজার মানুষ মারা গেছেন। অথচ দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) হিসাবে বলা হচ্ছে, সেখানে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৪৯১ জন।
সরকারি তথ্যের ভিত্তিতেই করোনাভাইরাস পরিস্থিতির নিয়মিত আপডেট দিয়ে আসছে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের সবশেষ হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩২ লাখ, ৫৬ হাজার ৬৭৫ জন।
আরেক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশ্বে এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৩২ লাখ, ৭০ হাজার ৪৭৮ জন।
এই সংখ্যা আইএইচএমই-এর দেওয়া মৃত্যুর হিসেবের অর্ধেকেরও কম।
আইএইচএমই’র এই প্রতিবেদনের বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি সিডিসি।
অবশ্য ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড এভাল্যুয়েশনের এই বিশ্লেষণে শুধু সরাসরি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হিসাব করা হয়েছে। মহামারির কারণে সৃষ্ট চিকিৎসা সংকটে যেসব মৃত্যু হয়েছে, তা গোনায় ধরা হয়নি।
ক্রিস্টোফার মুরে বলেন, অনেক দেশ মহামারিতে ভুক্তভোগীদের সংখ্যা নির্ণয়ে অসাধারণ প্রচেষ্টা চালিয়েছে। তবে আমাদের বিশ্লেষণ দেখিয়ে দিয়েছে, একটি নতুন এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়া সংক্রামক রোগ সম্পর্কে সঠিকভাবে অনুসন্ধান করা কতটা কঠিন।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৭৪৪
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ