মুসলিমদের কাবা’র দিকে মুখ করে প্রস্রাব করায় নিষেধ আছে। তবে জ্ঞানী-গুনীরা বাতাসের দিকে মুখ করে প্রস্রাব করা নিরাপদ নয় বলেই বলে থাকেন। যদিও নিজেকে নিরাপদে রেখে কোনদিকে মুখ করে প্রস্রাব করতে হবে এবিষয়ে প্রত্যেক মানুষই স্বাধীন। তবে প্রতিবেশি রাশিয়ার দিকে মুখ করে মূত্রত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউরোপের দেশ নরওয়ে। এই নিষেধাজ্ঞা না মানলে গুনতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা।
নরওয়ের জাকোবসিলভা নদীর তীর এলাকায় একটি নির্দেশনা জারি করেছে দেশটির সীমান্ত কর্তৃপক্ষ। সেখানে মোটা অক্ষরে ইংরেজিতে লেখা রয়েছে, ‘রাশিয়ার দিকে ফিরে মূত্রত্যাগ করা যাবে না।’ শুধু এই নির্দেশনা জারি করেই ক্ষান্ত হয়নি কর্তৃপক্ষ, রীতিমতো ভিডিও নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে ওই এলাকাকে।
নরওয়ের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ব্যারেন্টস অবজারভার এ-সম্পর্কিত একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ বিষয়ে নরওয়ের বর্ডার গার্ডসের কমিশনার জেন্স আর্নে হইল্যান্ড এএফপিকে বলেন, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে এ ধরনের অপরাধমূলক কাজ বন্ধ করতে সাইনবোর্ডটি ঝোলানো হয়েছে।’ নির্দেশনা ভঙ্গকারীকে নরওয়ের মুদ্রায় ৩ হাজার ক্রোনার বা ৩৪০ মার্কিন ডলার জরিমানা গুনতে হবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৯ হাজার টাকার বেশি।
নরওয়ের জাকোবসিলভা নদীর ওপারেই রাশিয়া। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে ওই এলাকায় পর্যটকেরা ভিড় করেন। জেন্স আর্নে হইল্যান্ড বলেন, ‘মূত্রত্যাগ একটি প্রাকৃতিক বিষয়, যা সচরাচর নয়। কিন্তু কোথায় মূত্রত্যাগ করছেন, তা দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়। সীমান্ত এলাকায় বিষয়টিকে সীমান্ত আইন ভঙ্গের আওতায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়।’
জেন্স আর্নে হইল্যান্ড জানান, প্রতিবেশী দেশ কিংবা এর সীমান্তে ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো অপরাধ করা নরওয়ের আইনে নিষিদ্ধ। সম্প্রতি সীমান্তবর্তী নদীতে মূত্রত্যাগের বিষয়ে নরওয়ের কাছে অভিযোগ জানায় রাশিয়া। এরপরই নরওয়ের সীমান্ত কর্তৃপক্ষ ওই ব্যবস্থা নিয়েছে।
ব্যারেন্টস অবজারভারের প্রতিবেদনে বলা হয়, সীমান্তের রাশিয়ার অংশে পাথর ছোড়ায় কয়েক বছর আগে নরওয়ের চার নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। গত শীতে নজরদারি ক্যামেরায় ধরা পড়ে, এক নারী সীমান্তে রাশিয়ার অংশে বাঁ হাত রেখেছেন। এ জন্য তাঁকে ৮ হাজার ক্রোনার জরিমানা গুনতে হয়েছিল।
সীমান্ত অতিক্রম করে উভয় দেশের সড়ক নেটওয়ার্কের সাথে সংযোগ স্থাপন করে এমন আরও অনেক রাস্তা রয়েছে। এগুলি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। এই দুটি পাটসোকি নদীর জলবিদ্যুৎকেন্দ্র: হেভোস্কোস্কি এবং স্কোগফস। এছাড়াও ঐতিহাসিক সীমানা ক্রসিং স্কেফারহুললেট এরকম একটি রাস্তা আছে এবং এর উপরের অংশের উপরে একটি রয়েছে জাকোবসেলভা নদী।
নরওয়ে যেহেতু সীমানা অবধি যাত্রা করার অধিকার মঞ্জুর করে, তাই নরওয়ের বাসিন্দাদের জন্যও দুটি সীমান্তবর্তী নদী এবং মাছের নৌকা চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়। সমস্ত নৌকাগুলি নরওয়েজিয়ান বর্ডার কমিশনের সাথে নিবন্ধিত হতে হবে এবং নিবন্ধকরণ প্লেটগুলি জাহাজের উভয় পাশে অবশ্যই মাউন্ট করা উচিত। দিনের আলোতে নৌকা চালানোর অনুমতি রয়েছে। মাছ ধরা এবং নৌকা চালানোর অনুমতি কেবল নদীর তুর্কি নরওয়েজিয়ায়; তবে এর সংকীর্ণ প্যাসেজগুলিতে পাসভিকেলভা জরুরী অবস্থা বাদে নৌকা থামবে না এই শর্তে রাশিয়ান পক্ষ দিয়ে ভ্রমণ করার অনুমতি রয়েছে। গ্রীষ্মের সময় সীমানা রেখা বরাবর পাসভিকেলভার অংশগুলি হলুদ রঙের বুয়েগুলির সাথে চিহ্নিত করা হয়।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৬৫৭
আপনার মতামত জানানঃ