কোয়াডে যোগদান প্রসঙ্গে বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কোনো জোরজবরদস্তি থাকবে না। কোয়াডে অংশগ্রহণের ব্যাপারে বাংলাদেশের সিদ্ধান্তই আসল এবং বাংলাদেশের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক দারুণ ‘শক্তিশালী’ মন্তব্য করে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস এসব বলেছেন।
কোয়াডে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়া বা না হওয়ার প্রসঙ্গে নেড প্রাইস বলেন, ‘নিজেদের মত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার বাংলাদেশের আছে। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব এবং তাদের পররাষ্ট্রনীতির সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল।’
চার জাতির জোট কোয়াডে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে চীনা রাষ্ট্রদূতের দেওয়া এক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে এসব মন্তব্য করেন নেড প্রাইস।
গত মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, বাংলাদেশে চীনা রাষ্ট্রদূতের ওই বক্তব্যের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা আগেও স্পষ্ট করেছি যে, কোয়াড হচ্ছে অনানুষ্ঠানিক, প্রয়োজনীয় এবং বহুপক্ষীয় একটি ব্যবস্থা। এর উদ্দেশ্য হলো অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসেফিক অঞ্চলের লক্ষ্যকে এগিয়ে নেওয়া। কোয়াডে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের মতো গণতান্ত্রিক দেশগুলো রয়েছে। এর উদ্দেশ্য হল অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসেফিক অঞ্চলের লক্ষ্যকে এগিয়ে নেওয়া।’
এর আগে বাংলাদেশকে কোয়াডে যোগ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সোমবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘চীনবিরোধী’ ওই জোটে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ‘ক্ষতি’ করবে।
চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, কোয়াডে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়া ঠিক হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার কৌশলগত জোট কোয়াডকে চীনবিরোধী একটি ছোট গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করে বেইজিং। তাই চীন মনে করে, এতে যেকোনোভাবে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ককে ‘যথেষ্ট খারাপ’ করবে।
লি জিমিং সেদিন বলেন, ‘চীন সব সময় মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে কোয়াড হচ্ছে চীনবিরোধী একটি ছোট গ্রুপ। আমি খুব স্পষ্ট করেই বলতে চাই, অর্থনৈতিক প্রস্তাবের কথা বললেও এতে নিরাপত্তার উপাদান আছে।’
ওই বক্তব্যের সমালোচনা করে মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, কোয়াড নিয়ে চীন আগ বাড়িয়ে কথা বলেছে। কোয়াড নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ হিসেবে সিদ্ধান্ত নেবে।
অবশ্য এরই মধ্যে চীনের রাষ্ট্রদূত ওই মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে। সূত্রটি জানায়, গতকাল বুধবার পররাষ্ট্রসচিবের কাছে চীনের রাষ্ট্রদূত নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি ওই মন্তব্য যে ‘আউট অব কনটেক্সট’ বলেছেন, তা-ও উল্লেখ করেছেন।
বুধবার (১২ মে) চীন থেকে আসা পাঁচ লাখ টিকা প্রদান অনুষ্ঠান শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, মহাপরিচালক খন্দকার মোহাম্মাদ তালহা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তার সঙ্গে এক বৈঠকে বসেন চীনা রাষ্ট্রদূত। বৈঠকে ওই বিষয়টিকে ইংলিশ ভাষার দুর্বলতা ও ‘আউট অফ কনটেক্সট’ বলে অভিহিত করেন লি জিমিং। তার মতে, কোয়াড নিয়ে যা বলেছেন, সেটা তিনি ‘মিন’ করেননি বা এভাবে বলতে চাননি।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১২৩২
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ