নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কম্পানিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৫২ জনের মৃত্যু হলে মামলা দায়ের করে গ্রেপ্তার করা হয় হাসেম গ্রুপের মালিক, তার চার ছেলেসহ মোট আটজনকে। আজ সোমবার (১৯ জুলাই) হাসেম গ্রুপের মালিক আবুল হাসেমসহ তার দুই ছেলেকে জামিন দিয়েছে আদালত।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আনিসুর রহমানের আদালতে জামিনের আবেদন করা হলে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসেম (৭০), তার ছেলে হাসীব বিন হাসেম ওরফে সজীব (৩৯), তারেক ইব্রাহীম (৩৫)। এর আগে আবুল হাসেমের দুই পুত্র তাওসীব ইব্রাহীম (৩৩), তানজীম ইব্রাহীম (২১) জামিন পান।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, সোমবার হাসেমসহ তার দুই ছেলের জামিন দিয়েছেন আদালত। এর আগে আরও দুই ছেলের জামিন হয়েছিল। বাকিরা কারাগারে আছেন।
১৪ জুলাই বিকালে চার দিনের রিমান্ড শেষে তাদেরকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালতে আসামিপক্ষ সবার জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত আবুল হাসেমের দুই ছেলেকে জামিনের আদেশ দেন।
এর আগে ১০ জুলাই গ্রেফতার ৮ জনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালতে ৩০২, ৩২৬, ৩২৫, ৩২৩, ৩২৪, ৩০৭ ধারায় হত্যা এবং হত্যা প্রচেষ্টার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে পুলিশ রিমান্ড আবেদন করলে আদালত প্রত্যেককে চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক হুমায়ুন কবির জানান, হত্যা ও হত্যার অভিযোগে ৩০২, ৩২৬, ৩২৫, ৩২৩, ৩২৪, ৩০৭ ধারায় সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসেমসহ আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। গ্রেফতার আটজন হলেন- সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসেম (৭০), তার ছেলে হাসীব বিন হাসেম ওরফে সজীব (৩৯), তারেক ইব্রাহীম (৩৫), তাওসীব ইব্রাহীম (৩৩), তানজীম ইব্রাহীম (২১), শাহান শান আজাদ (৪৩), মামুনুর রশিদ (৫৩) ও মো. সালাউদ্দিন (৩০)।
এদের মধ্যে কারাগারে আছেন- শাহান শান আজাদ (৪৩), মামুনুর রশিদ (৫৩) ও মো. সালাউদ্দিন (৩০)।
৮ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার রূপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় অবস্থিত ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে ডেমরা, কাঞ্চনসহ ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ২৯ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এ সময়ের মধ্যে ঝরে গেছে ৫২ প্রাণ। আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন।
আগুন লাগার ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনা এত বেশি পরিমানে ঘটে কারণ কলাপসিবল গেট বন্ধ ছিলো। আগুন লাগার দীর্ঘক্ষণ পরেও সিড়ি এবং রশি দিয়ে ভেতরে আটকে পড়াদের বের করে আনার ব্যবস্থা করা হয় নি। দুর্ঘটনাটি ঘটার পর এটি আরও ভয়াবহ ওঠে যে মালিকপক্ষের হেলাফেলার কারণে তাদের জামিন মঞ্জুর হলো। এই জামিন অপরাধ প্রবণতাকে আস্কারা দিবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/২১৪৩
আপনার মতামত জানানঃ