খুলনায় আবারো পুলিশের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। মহানগরীর খানজাহান আলী থানার বাজার এলাকায় এক যুবতীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে স্বদেশ বালা নামের এক পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার(১৭ জুন) দুপুরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্বদেশ বালা আড়ংঘাটা থানায় পুলিশ কনস্টেবল (কম্পিউটার অপারেটর) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, স্বদেশ বালা আড়ংঘাটা থানায় বদলির আগে নগরীর খানজাহান আলী থানায় কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তখন একটি জিডির সূত্র ধরে ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়।
স্বদেশ বালা তখন নিজেকে অবিবাহিত ও মুসলিম পরিচয় দিয়ে ওই নারীর সঙ্গে প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। সম্প্রতি ওই নারী বিয়ের প্রস্তাব দিলে স্বদেশ বালা বিয়ে করবেন না এবং নিজের ধর্ম গোপনের কথা জানান। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, স্বদেশ বালা নিজেকে অবিবাহিত দাবি করে ভুক্তভোগী যুবতীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রস্তাব দিলে স্বদেশ বালা অস্বীকৃতি জানায়। গত ১৫ই জুলাই খানজাহান আলী থানা থেকে আড়ংঘাটা থানায় বদলি হন স্বদেশ বালা। এদিকে গতকাল খানজাহান আলী থানায় ওই যুবতী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খানজাহান আলী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রেজোয়ানুল ইসলাম বলেন, মামলা দায়েরের পর তাৎক্ষণিক স্বদেশ বালাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৫ই মে খুলনার কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে পিবিআই ইন্সপেক্টর মঞ্জুরুল হাসান মাসুদের বিরুদ্ধে। ওইদিনই কলেজছাত্রী বাদী হয়ে মাসুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন। ৮ই জুন বহুল আলোচিত কলেজছাত্রী ধর্ষণ মামলার আসামি পিবিআই পরিদর্শক মঞ্জুর হাসান মাসুদকে কারাগারে পাঠান আদালত।
বাংলাদেশে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় জমছে। গত কয়েক বছরে শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, ছিনতাই, ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়, মিথ্যা মামলায় সাধারণ মানুষকে ফাঁসিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি দেশে কনস্টেবল থেকে শুরু করে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে। এসব অপরাধ ও অপকর্মের মধ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার, দায়িত্বে অবহেলা ও ঘুষ গ্রহণ ছাড়াও চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, এমনকি ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার মতো ঘৃণ্য অপরাধও আছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পুলিশের বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার হার আশংকাজনক। প্রায় প্রতিদিনই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে বিভিন্ন অপকর্মের। এবিষয়ে পুলিশের কর্তৃপক্ষসহ দেশের সরকাকেও নজর বাড়াতে হবে। কেননা, আইন রক্ষাকারী কর্তৃক একেরপর এক আইন বিরোধী কর্মকাণ্ডে দেশের আইনের প্রতি মানুষের অনাস্থা জন্মাবে। ফলে দেশে দেখা দিবে বিশৃঙ্খলা।
সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনের খড়্গ চালানোর আগে পুলিশের ওপর চালানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা। তারা বলেন, আগে পুলিশকে অপরাধমুক্তের চরিত্র অর্জন করতে হবে। নইলে সন্ত্রাসীদের নিকট পুলিশের যে ভাবমূর্তি সৃষ্টি হচ্ছে, এতে পুলিশ আর সন্তাসীদের মধ্যকার তফাৎ ঘুচে যায়।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৮২১
আপনার মতামত জানানঃ