ইব্রাহিম খলিল আশিক নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা গাজীপুরের পুলিশ। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও তার চাচা গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতির নামে ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অভিযোগ আনা হয়েছে ওই তরুণের বিরুদ্ধে।
ইব্রাহিম খলিল আশিকের বয়স ২৫ বছর। তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পোড়াবাড়ি বাজার এলাকার আফতাব উদ্দিনের ছেলে। ফেসবুকে ইব্রাহিম খলিলের আইডিটি এখনো শনাক্ত করতে পারেনি স্টেটওয়াচ। তবে স্টেটওয়াচ রিসার্চ নেটওয়ার্ক দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত আশিক কী লিখেছেন, তা গণমাধ্যমে কোথাও আসেনি। ফলে অভিযোগের যথার্থতা বিচারের সুযোগ পাননি সাধারণ মানুষ। আবার সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে অনেকক্ষেত্রে অভিযুক্ত আশিককে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। যদিও এখনো এ অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
জানা যায়, প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী কাউছার সরকার বাদী হয়ে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে গাজীপুর জেলার গাছা থানায় মামলা দায়ের করেন। ২ ডিসেম্বর ২০২০, বুধবার দুপুরে পোড়াবাড়ি এলাকা থেকে আশিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) গাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারীর দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত যুবক ইব্রাহিম খলিলকে পোড়াবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে তার অপরাধ স্বীকার করেছে। বিকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ইব্রাহিম খলিল তার ফেসবুক আইডি থেকে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ও তার চাচা গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমান মতির বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য ছড়িয়ে দেন। এতে গাছা এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিও নষ্ট হয়েছে। এতে যেকোনও সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটার উপক্রম হয়েছে।
তবে এলাকাবাসী এ বিষয়ে নীরব। প্রশ্ন করা হলে গাছা এলাকার কাঠমিস্ত্রি রমজান শিকদার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘কই আইনশৃঙ্খলার তো কিছু হয় নাই। এই ঘটনা তো কেউ জানেই না। পোলাডার জীবন শেষ হইয়া গেল।’ বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশে মানহানি বিষয়ক মামলার এজাহারে এ ধরনের বয়ান একেবারেই ধরা-বাঁধা, এ যেন প্রথায় পরিণত হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত হলেই কেবল এ বিষয়ে সত্য জানা সম্ভব হয়।
এদিকে ক্ষমতাধর ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে লেখালেখির অভিযোগে বাংলাদেশে আইসিটি আইন ও ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের বিপজ্জনক ব্যবহার বেড়েই চলেছে। এতে উদ্বেগ প্রকাশ করে চলেছে মানবাধিকার সংগঠনসহ বিশ্বের অনেক দেশও। কিন্তু তা সত্ত্বেও গ্রেফতার বন্ধ নেই। ক্ষমতাধররা মামলা করায় এক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ সংকুচিত হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এসডাব্লিউ/এমএন/আরা/১১৫০
আপনার মতামত জানানঃ