দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আসা অব্যাহত রয়েছে। কোথাও কোথাও মাদকের সাথে সংশ্লিষ্টতা থাকার অভিযোগ আসে পুলিশের বিরুদ্ধে, কোথাওবা অস্ত্র বিক্রয়কারী হিসাবে, কোথাওবা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ, অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ, পুলিশের নেতৃত্বে মাদক পাচার চক্র গড়ে ওঠার অভিযোগ, চুরি ডাকাতি ইত্যাদি হেন কোনো অপরাধ নেই যা পুলিশ শব্দটির সাথে জুড়ে বসে নাই। প্রতিদিনই পুলিশের বিরুদ্ধে এমনসব অভিযোগ আসে। আজও তেমনি একটি ঘটনা ঘটে। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিদেশি পিস্তল ও ফেনসিডিলসহ পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও তার দুই সহযোগীকে আটক করেছে র্যাব। আজ সোমবার(২৩ মার্চ) ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় তাদের র্যাব-৩ এর একটি দল আটক করে।
আটকেরা হলেন, পুলিশের উপ-পরিদর্শক কোয়কোবাদ পাঠান (৩০) ও তার সহযোগী সোহেল মিয়া (৩২) ও রবিন হোসেন (৩০)। কায়কোবাদ নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার কালাপাহাড়িয়া পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত রয়েছেন।
র্যাব-৩ এর সহকারী পুলিশ সুপার ফারজানা হক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার ভোরে র্যাব-৩ এর একটি দল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি করে। এসময় একটি সাদা মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে দুটি বিদেশি পিস্তল, ২৫ রাউন্ড গুলি, ২৪০ বোতল ফেনসিডিল ও দুটি হ্যান্ডকাফসহ তিনজনকে আটক করা হয়।
তিনি জানান, আটকদের একজন পুলিশের উপ-পরিদর্শক। তিনি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত। মাইক্রোবাসটি কুমিল্লা থেকে নারায়ণগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল।
সোনারগাঁ থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, র্যাব-৩ আটক তিনজনকে সোমবার রাতে সোনারগাঁ থানায় হস্তান্তর করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা জানান, অস্ত্র, মাদক চোরাচালান ও ব্যবসায়ের সঙ্গে পুলিশের জড়িয়ে পড়াতে সমাজে অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে। লোকজনের নিকট পুলিশ ভরসা হারিয়ে এখন মাদক সিন্ডিকেট ও সন্ত্রাসী সংগঠন ভিন্ন অন্যকিছু নয়। অস্ত্র ও মাদকের সঙ্গে একেরপর এক পুলিশের জড়িয়ে পড়াতে এক রকম আতঙ্ক বিরাজ করছে সমাজে। পুলিশের আইজিপি নিয়মিতই বলে যাচ্ছেন মাদকের সঙ্গে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা থাকলে কোনো ছাড় নেই, যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েই শুদ্ধি অভিযান চালাতে চান তিনি। অথচ মাদক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে পুলিশ জড়িয়ে পড়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন লোকজন। নিজেদের শুদ্ধ করতে পারছেন না যে বাহিনী, অন্যান্য অপরাধ পুলিশ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে পারে, লোকজন এমন ভরসা হারিয়ে ফেলেছেন বলে মনে করেন তারা।
তারা বলছেন, পুলিশের ভূমিকায় মানুষের নিশ্চিন্ত থাকার কথা থাকলেও এখন আতঙ্কে ভোগেন। দেশে সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, ধর্ষক ও ডাকাতির ভূমিকায় নেমে পড়া পুলিশ বাহিনী নিয়ে দেশে এক রকম আতঙ্ক চলছে। ক্ষমতার অপব্যবহারের পাশাপাশি পুলিশের অস্ত্র ও মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে দেশে এক রকম বিরুদ্ধমত চলছে। আর এর পেছনে রয়েছে তাদেরই জোরালো ভূমিকা। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশের থাকার কথা থাকলেও পুলিশ নিজেই এখন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। যাদের রক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের এহেন ভক্ষকের ভূমিকায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কে আছে দেশবাসী। এ থেকে উত্তরণের জন্য পুলিশ বাহিনীকেই উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি সরকারের কড়া নজরদারিও দাবি করেন বিশেষজ্ঞরা।
এসডব্লিউ/ডিএস/কেএইচ/১৩০৭
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগীতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগীতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগীতার অনুরোধ জানাচ্ছি।
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ