নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় দুর্নীতি দমন কমিশনের চাকুরিচ্যুত কনস্টেবল নিজেকে দুদকের রানিং কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে এক প্রিন্টিং ব্যবসায়ির কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিতে এসে আটক হয়েছে। তার নাম ইমরান হোসেন হায়দার (৪০)। এ সময় তার দুই সহযোগী সেলিম ও তানজিল পালিয়ে যান। রবিবার (১৪ মার্চ) রাতে ফতুল্লার কায়মপুর ফকির গার্মেন্টসের সামনে থেকে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকাবাসী।
তার কাছ থেকে দুদুকের একটি পরিচয় পত্র (আইডি কার্ড) উদ্ধার করেছে পুলিশ। যাতে লেখা রয়েছে ‘ মো: ইমরান হোসেন হায়দার, কোর্ট সহকারী (এ এস আই) দুর্নীতি দমন কমিশন’। রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কায়েমপুর ফকির গার্মেন্টসের সামনে থেকে তাকে জনতা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
ভুক্তভোগী ওয়াবদারপুল এলাকার প্রিন্টিং ব্যবসায়ি নাদির সরদার জানান, দেড় মাস আগে আটককৃত ইমরান হায়দার একটি গাড়ি নিয়ে তার প্রতিষ্ঠানে আসে। এরপর তিনি দুদকের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। আপনি দুর্নীতির মাধ্যমে ব্যবসা করে আসছেন। নানা ভয় দেখিয়ে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। একপর্যায়ে আরো দু’লাখ টাকা দাবি করে। পরে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। এরপর পুলিশের পরামর্শে টাকা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে ইমরান হোসেন হায়দারকে আসতে বলা হয়।
পরে টাকা নেয়ার জন্য দু’সহযোগীসহ ইমরান রোববার রাতে এলে তাকে আটক করা হয়। তবে তার দু’সহযোগী পালিয়ে যায়। এছাড়া অভিযোগ পাওয়া গেছে, একই এলাকার জিল্লু ব্রেড এন্ড বিস্কুট বেকারির মালিকের কাছ একই কায়দায় এক হাজার টাকা হাতিয়ে নেন ইমরান হোসেন হায়দার।
এদিকে খবর পেয়ে ফতুল্লা থানার এসআই হাফিজ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক ইমরান হোসেন হায়দারকে থানায় নিয়ে যান। তিনি জানান, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে আটক ইমরান হোসেন হায়দায় দুদকে কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত ছিল। বর্তমানে তিনি চাকরিচ্যুত। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নাদির সরদার প্রতারক ইমরান হায়দারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের প্রস্ততি নিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পুলিশের ভূমিকায় মানুষের নিশ্চিন্ত থাকার কথা থাকলেও এখন আতঙ্কে ভোগেন। দেশে সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী, ধর্ষক ও ডাকাতির ভূমিকায় নেমে পড়া পুলিশ বাহিনী নিয়ে দেশে এক রকম আতঙ্ক চলছে। ক্ষমতার অপব্যবহারের পাশাপাশি পুলিশের সরাসরি ডাকাতিতে নেমে পড়ায় উদ্বিগ্ন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে দেশে এক রকম বিরুদ্ধমত চলছে। আর এর পেছনে রয়েছে তাদেরই জোরালো ভূমিকা। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পুলিশের থাকার কথা থাকলেও পুলিশ নিজেই এখন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। যাদের রক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের এহেন ভক্ষকের ভূমিকায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কে আছে দেশবাসী। এ থেকে উত্তরণের জন্য পুলিশ বাহিনীকেই উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি সরকারের কড়া নজরদারিও দাবি করেন বিশেষজ্ঞরা।
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৬১০
আপনার মতামত জানানঃ