একসময় পৃথিবীর মতোই হয়তো ছিল সে। শস্য-শ্যামলা বসুন্ধরা। মনুষ্য বসবাসযোগ্যও হয়তো ছিল। কোনও মহাজাগতিক বিপর্যয়ের পর হয়তো তা আজও লালগ্রহের ভূমিগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। সবটাই ধারণা! তবে বিজ্ঞানের অনুমান যে একেবারে মিথ্যে নয় তা জলের উপাদানের ন্যূনতম অস্তিত্ব থেকে কিছুটা স্পষ্ট।
লালগ্রহের মাটিতে তাই প্রাণের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে একাধিক মহাআশ সংস্থা। তেমনই ইউরোপিইয়ান স্পেস এজেন্সিও কাজ করছে। সেই কাজ করতে করতেই তাঁরা পেয়ে গিয়েছে এমন এক ছবি, যা নতুন এক দিক তুলে ধরেছে।
সম্প্রতি যে ছবি তারা প্রকাশ করেছে সেখানে দেখা যাচ্ছে মঙ্গলের অন্যরূপ। আমরা মঙ্গলকে লাল গ্রহ হিসেবেই দেখে থাকি। কিন্তু এবার যেন অন্য-মঙ্গল। ২০ বছর ধরে পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে এটি।
সেখান থেকে Mars Express’s High-Resolution Stereo Camera দিয়ে এই ছবিটি তুলেছে সে। মঙ্গলের মাটি থেকে প্রায় ৩০০০ কিলোমিটার দূরত্বে থেকে তোলা হয়েছে ছবিটি।
এই ছবিটি প্রায় ৯০টি ছবিকে একসঙ্গে করে তৈরি করা হয়েছে। ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার কিলোমিটার দূরত্বে থেকে একাধিক ছবি তোলা হয়েছে। সেগুলিকে একত্র করেই এই ছবিটি বানানো হয়েছে।
প্রায় ২৫০০ কিলোমিটার এলাকাকে পরপর জুড়ে গোটা ছবিকে তৈরি করা হয়েছে। পড়শি গ্রহের এমন রূপ দেখে অবাক পৃথিবীও।
একটি বিবৃতিতে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি বলেছে, ‘এই ধরনের ছবি থেকে মূলত অনেকগুলি বিষয় বোঝা যায়। মঙ্গলের আবহাওয়া, মঙ্গলের মাটির চরিত্র, বায়ুমণ্ডলের পরিস্থিতি কেমন তা বুঝতে পারা যায়।
বায়ুমণ্ডলে কী কী উপাদান রয়েছে, কী কী উপাদান নেই তা বুঝতে পারা যায়। এই ছবি থেকেও যেমন মঙ্গলের আরেক ভিন্ন ছবি বুঝতে পারা যাচ্ছে।
মহাকাশ গবেষকরা জানাচ্ছেন, এই ছবি থেকে আক্ষরিক অর্থেই ভিন্ন মঙ্গলগ্রহকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। লালগ্রহকে লাল দেখায় কারণ অক্সিডাইস আয়রনের আধিক্যর জন্য। কিন্তু এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে মঙ্গলের আরেকটি দিকে রয়েছে ডার্ক অ্যান্ড ব্লু-টোনড রঙের ব্যাসাল্টিক বালি।
মনে করা হচ্ছে, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুতপাতের কারণে সেখানে এই উদ্গিরণ হয়েছে। এই নীলাভ রঙ সাধারণত জলের অস্তিত্ব থাকলেই হয়। তবে শুধু জল নয়, সালফেট মিনারেল থাকলেও এমন রঙ দেখায়।
মঙ্গলের টেকটনিক ফিচার থেকে বোঝা যায়, ৪০০০ কিলোমিটার পূর্ব-পশ্চিম থেকে ৭০০ কিলোমিটার উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত এই বিষয়টি। ইউরোপিয়ান দেশগুলি ২০০৩ এর ২ জুন মঙ্গলের নৃতত্ব এবং আবহাওয়া বুঝতে এই স্পেসক্র্যাফটিকে পাঠিয়েছিল।
এসডব্লিউএসএস১৬২৫
আপনার মতামত জানানঃ