মানব জাতির ভবিষ্যত মহাকাশে। খুব বেশিদিন আর পৃথিবীর বুকে থাকবে না মানুষ। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি’তে অনুষ্ঠিত ‘ইগনাটিস ফোরাম’-এ মানুষের ভবিষ্যত সম্পর্কে নিজ ধারণা তুলে ধরেন জেফ বেজোস।
প্রসঙ্গত, পৃথিবী নয়, তার বাইরে কীভাবে মানুষের বসতি স্থাপন করা যায় তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা কিন্তু জোরকদমে এগোচ্ছে। এসব কথা মাথায় রেখে এবার জেফ বেজোস একটা ধারনা দিলেন আগামী মানবসভ্যতা ও অস্তিত্বের।
ক্রমশই মহাকাশে মানুষের আনাগোনা বাড়ছে। তাই আগামী দিন নিয়ে নিজের বেশ কিছু ধারনা পেশ করলেন বিশ্বের অন্যতম ধনী জেফ বেজোস।
তার মতে, একসময় মহাকাশে সন্তান সন্ততির জন্ম দেবে মানুষ। হয়তো গড়ে ফেলা হবে পুরোদস্তুর উপনিবেশ। এমনকি সেখানকার বাসিন্দারা হয়তো ছুটি কাটাতে আসবেন পৃথিবীতে। ঠিক যেমন আমরা পরিবার নিয়ে ছুটির দিনে বেড়াতে যাই ভিক্টোরিয়া, চিড়িয়াখানায়।
জেফ বেজোসের দাবি, আগামী দিনে এটাই হতে চলেছে। কারণ একটা সময় পৃথিবীতে আর জনসংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হবে না। তখন বিকল্প কী? কেমন সেই পরিকল্পনা? ওয়াশিংটন ডিসি-তে একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে এ প্রসঙ্গে নিজের পরিকল্পনা জানিয়েই চমকে দিয়েছেন জেফ।
অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে বিশাল সব সিলিন্ডারের মধ্যে মানুষ ভরে মহাকাশে পাঠানো হবে। কৃত্রিম উপায়ে সেই সিলিন্ডারে তৈরি করা হবে পৃথিবীর আবহাওয়া।
জেফের আশা, আগামী দিনে মহাশূন্যে পুরোদস্তুর একটি দুনিয়াও বানিয়ে ফেলা অসম্ভব হবে না। ওয়াশিংটন ক্যাথিড্রালে দেওয়া এক বক্তৃতায় জেফ বেজোস আরও বলেন, লক্ষ লক্ষ শিশু তখন মহাকাশে জন্ম নেবে, বড় হয়ে উঠবে। সকলে এখন যেমন ছুটিতে ইয়েলোস্টোন ন্যাশনাল পার্ক ঘুরতে যায়, তেমনই তারা ছুটিছাটা পেলে পৃথিবীতে বেড়াতে আসবে।
জেফ বেজোস ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলতে গিয়ে জানান, তার লক্ষ্য মহাকাশে মানুষের বসবাসযোগ্য উপনিবেশ তৈরি করা। জেফ বলেন, সবচেয়ে বড় কথা ওখানে বৃষ্টি বা ভূমিকম্পের কোনও সম্ভাবনা নেই। ওখানকার লোকেরা ঘুরতে বা ছুটি কাটাতে আসবেন আমাদের পৃথিবীতে।
বেসরকারি মহাকাশ উড়ানের জন্য জেফ বেজোস ইতিমধ্যেই তার ব্লু অরিজিন সংস্থা তৈরি করেছেন। যা ইতিমধ্যেই একবার পরীক্ষামূলকভাবে তাকে নিয়েই মহাকাশ ছুঁয়ে এসেছে।
অ্যামাজন কর্ণধারের এই পরিকল্পনার পোশাকি নাম ‘ও’নিল স্পেস কলোনি’। ১৯৭৬ সালে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের জেরার্ড ও’নিলের মাথায় প্রথমবার এই পরিকল্পনা আসে।
পৃথিবী ছাড়া অন্য কোনও গ্রহ বসবাসযোগ্য নয়, তাই বিকল্প একমাত্র মহাকাশ। সেখানেই কৃত্রিম উপায়ে বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করতে হবে; এটাই ছিল ও’নিলের তত্ত্ব।
সেই পরিকল্পনাই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন জেফ। নামও দিয়েছেন প্রয়াত ও’নিলের নামেই।
এসডব্লিউ/এসএস/১৭৫০
আপনার মতামত জানানঃ