জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মাত্র দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ক্ষতি এড়াতে পারছে না ধনী ও প্রভাবশালী দেশগুলোও। চাঁদের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে বন্যার যে ভয়াল থাবার কথা নাসার বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছিলো তার কিছু কিছু নমুনা ইতিমধ্যেই দেখতে শুরু করেছে পৃথিবী। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘন ঘন বন্যার কারণে বিপর্যয়ে পড়েছে অনেক দেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের মধ্যাঞ্চলে রেকর্ড ভাঙা বৃষ্টিতে আকস্মিক বন্যায় অন্তত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন ৪৫ জন। বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয় প্রশাসনের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে এ তথ্য।
স্থানীয় সময় রোববার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে কাউন্টির ওয়েভারলি শহরের পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের প্রধান গ্রান্ট গিলেস্পি বলেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি হচ্ছে এ অঞ্চলে। বন্যার পানিতে প্রাণহানির ঘটনার পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, শুধুমাত্র ওয়েভারলি শহরেই বন্যায় ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য আরেক সূত্রে আরও একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, উপড়ে গেছে মোবাইল ফোনের টাওয়ারসহ টেলিফোন লাইন। ফলে অনেক পরিবারই তাদের স্বজনদের খবর নিতে পারছেন না সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে। ওয়েভারলিতে শত শত বাড়ি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে এবং অনেক এলাকা বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে বলে টেনেসির স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
হামফ্রেস কাউন্টি শেরিফ ক্রিস ডেভিস রবিবার জানিয়েছেন, নিখোঁজ অনেকেই দ্রুত পানি বাড়তে থাকায় আশেপাশের এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ এক টুইটার বার্তায় জানিয়েছে, হামফ্রিস কাউন্টির ম্যাকুয়েন শহরে শনিবার দিনব্যাপী ১৭ ইঞ্চি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে টেনেসি অঙ্গরাজ্যে ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টিপাতের ‘সর্বকালের রেকর্ড সম্ভবত ভেঙে গেছে’।
যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের বন্যায় ভেঙে যাওয়া বাড়ি আর জট বাঁধা ধ্বংসস্তূপের নিচে তল্লাশি চালাতে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে উদ্ধারকারীরা।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রোড আইল্যান্ডে ঘূর্ণিঝড় হেনরি আঘাত হেনেছে। সেখানকার এক লাখ ২০ হাজারের বেশি পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। হারিকেন এক ক্যাটাগরিতে থাকা ঘূর্ণিঝড় হেনরির এখনও বাতাসে গতিবেগ প্রতিঘণ্টায় ৯৫ কিলোমিটার। খবর বিবিসির।
লং আইলান্ডসহ ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিঘ্নিত ও কিছু এলাকা প্লাবিত হতে পারে এমন আশঙ্কাও আগেই করা হয়।কানিকটিকাট, মেইন, ম্যাসাচুসেটস, নিউ হ্যাম্পশায়ারসহ পুরো নিউ ইংল্যান্ড এলাকার লোকজনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল।
এর আগে নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো লং আইল্যান্ড ও নিউইয়র্ক সিটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি রাজ্যের অন্যান্য অংশের মানুষকেও ঘূর্ণিঝড়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার অনুরোধ জানান।
ম্যাসাচুসেটসের গভর্নর অফিস থেকে জানানো হয়, সোমবার পর্যন্ত রাজ্যেটির সব পার্ক ও সমুদ্র সৈকত বন্ধ থাকবে। কর্মকর্তারা জানান, এতে ৩ লাখ বাসিন্দা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে। তাই সবাইকে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুতি ও স্থানীয় আবহাওয়ার প্রতি লক্ষ্য রাখতে বলা হলো।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/১২৫৭
আপনার মতামত জানানঃ