নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডের সেজান জুসের কারখানায় ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনার একমাস যেতে না যেতেই আবারও রূপগঞ্জের আরেকটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলো। আজ বুধবার (৪ আগস্ট) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে উপজেলার তারাবো পৌরসভার মৈকুলী এলাকায় অবস্থিত ইউনাইটেড গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড লেদার কারখানায় এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনে কোন হতাহত না হলেও অন্তত কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট দেড় ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
হোসেন কটন এন্ড স্পিনিং মিল ও লেদার কারখানার প্রধান ফটকে কর্মরত নিরাপত্তাকর্মী প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল কাদের জানান, দুপুর বারোটার কিছু পরে ইউনাইটেড লেদার কারখানার দোতলা টিনশেড ভবনের দ্বিতীয় তলার কেমিকেলের গোডাউনে হঠাৎ করে আগুনে ধোঁয়া দেখতে পান। এসময় লেদার কারখানা বন্ধ থাকলেও কেমিকেলে গোছগাছের কাজ করা ৭/৮ জন শ্রমিক দৌড়ে বাইরে চলে আসে। অপরদিকে স্পিনিং সেকশনে কাজ করা ৮/৯’শ শ্রমিক আতংকে ছুটোছুটি শুরু করেন।
পরে কারখানা থেকে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে দ্রুত ডেমরা-কাঞ্চন ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। পরে আরও ৯টি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে এসে একযোগে কাজ করলে দুপুর দেড়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
ইউনাইটেড গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড লেদারের এডমিন ম্যানেজার ফজলুর রহমান জানান, দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কেমিকেল সেকশনে আগুনের ধোঁয়া দেখতে পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেই।
তারা এসে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এলেও ততক্ষণে গোডাউনের সমস্ত কেমিকেল পুড়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে কারখানার স্পিনিং সেকশন চালু থাকলেও লেদার সেকশন বন্ধ থাকায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান, গতকাল এই সেকশনে ম্যান্টেনেন্সের কাজ করেন তারা।
এর আগে, গত ৮ জুলাই বিকেলে রূপগঞ্জের হাসেম ফুড লিমিটেডের ৬ তলা কারখানা ভবনে আগ্নিকাণ্ডে ৫২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ শ্রমিক। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ১৮ টি ইউনিট টানা প্রায় ৪৮ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ঘটনায় জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
তবে তা থেকে শিক্ষা নিতে পারছে না কারখানা কর্তৃপক্ষ। কেমিকেলের গোডাউন থাকার পরেও সতকর্তার সাথে সংরক্ষণ না করে এসব হেলাফেলায় ফেলে রাখার কারণে আগুন লাগার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়। রুপগঞ্জের আজকের আগুনের দূর্ঘটনা থেকে ৮/৯’শ কানের ধার দিয়ে বেঁচে গেলেও ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি টাকার। এরপরেও প্রতিষ্ঠান মালিক এবং উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিদের কোনো শিক্ষা হবে না বলেই ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/২০২৮
আপনার মতামত জানানঃ