কক্সবাজারের টেকনাফে চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা হত্যা মামলার চার্জ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে আলোচিত এই হত্যা মামলার বিচার। আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই সাক্ষী গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সাবেক ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল সাগর দেবসহ ছয় আসামির জামিন আবেদন নাকচ করেছেন আদালত।
আজ রোববার কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল এ মামলার চার্জ গঠন ও শুনানি শেষে ৬ আসামির জামিন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সকাল ১০টায় কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে তোলা হয় আসামিদের। ফৌজদারী দণ্ডবিধির ৩০২, ২০১, ১০৯, ৩৪ ধারাসহ আরও কয়েকটি ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পিপি ফরিদুল।
জানা যায়, এ মামলায় ৯ জুন টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও ১০ জুন উপপরিদর্শক নন্দ দুলাল রক্ষিত জামিন আবেদন করেছেন। এছাড়া ১০ মাসের বেশি সময় পলাতক থাকার পর গত বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন মামলার আরেক আসামি কনস্টেবল সাগর দেব। এরপর রবিবার (২৭ জুন) দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল জামিন নামঞ্জুর করেন। এদিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা শুনানি চলে। এতে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
আদালত থেকে বেরিয়ে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলার চার্জ গঠনের দিন ছিল। আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে মামলার চার্জ গঠন করে আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ জুলাই সাক্ষী গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছেন। পাশাপাশি সাবেক ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল সাগর দেবসহ ছয় আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।
এই হত্যা মামলায় ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১৫’র সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার খায়রুল ইসলাম। সে বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান।
শুরুতে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সিনহা তল্লাশিচৌকিতে বাধা দেন। আর তিনি পিস্তল বের করলে চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে। তবে পুলিশের বক্তব্য নিয়ে সে সময় প্রশ্ন ওঠে। আর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস মামলা করেন নয়জনের বিরুদ্ধে।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে। ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাসকে করা হয় দুই নম্বর আসামি। মামলার তিন নম্বর আসামি করা হয় টেকনাফ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিতকে।
এরপর অভিযুক্ত সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে র্যাব স্থানীয় তিনজন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্য এবং প্রদীপের দেহরক্ষীসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৫৩০
আপনার মতামত জানানঃ