শুভ্র সরকার : আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ফিলিস্তিনের কাছ থেকে দখল করা ভূমিতে ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধ করেছে কি-না সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করেছে। গত বুধবার (০৩ মার্চ) আদালতের চিফ প্রসিকিউটর ফাতু বেনসৌদা এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মাসের শুরুর দিকে আইসিসির প্রিট্রায়াল চেম্বারের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারক এই মতামত প্রদান করেন। নানা ধরনের তদবির ও চাপকে উপেক্ষা করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের ভিত্তি তৈরি করা হয়েছে বলে জানা যায়।
এরপর বুধবার (০৩ মার্চ) আইসিসির চিফ প্রসিকিউটর ফাতু বেনসৌদা এক বিবৃতিতে জানান, ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি বিবেচনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের তদন্ত শুরুর বিষয়টি আজ নিশ্চিত হয়েছে। তদন্তটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত, ভয় বা পক্ষপাতহীনভাবে পরিচালিত হবে।
তিনি আগেই জানিয়েছিলেন, ২০১৪ সালের গাজায় সহিংসতা চলাকালীন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ, হামাস এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে বিশ্বাস করার ‘যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি’ রয়েছে।
সূত্র মতে, দখলকৃত পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গাজা উপত্যকায় যুদ্ধাপরাধ তদন্তের জন্য যথেষ্ট প্রমাণাদি পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে আইসিসি পরিপূর্ণ তদন্ত করতে পারে। তবে আইসিসি ইসরায়েলের পাশাপাশি হামাসের বিরুদ্ধেও যুদ্ধাপরাধের তদন্ত করবে।
আইসিসির বিচারকেরা গত শুক্রবার বলেন, ফিলিস্তিন এই আদালতের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য। এ ছাড়া এই ভূখণ্ডের কর্তৃপক্ষ সেখানকার পরিস্থিতি আদালতের কাছে তুলে ধরেছে। এসবের ভিত্তিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে বিচারকেরা আরও বলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কি-না, তা নির্ধারণের জন্য এই আদেশ নয়। আদালতের এই এখতিয়ার ১৯৬৭ সালের পর ফিলিস্তিনের যেসব এলাকা ইসরায়েল দখল করে নিয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এসব এলাকার মধ্যে গাজা, পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেমও রয়েছে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিম তীর ও গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধাপরাধের যথেষ্ট আলামত রয়েছে, তা নিশ্চিত করেন আইসিসির প্রধান ফাতু বেনসৌদা।
তিনি সে সময় বলেন, ফিলিস্তিনে যা ঘটছে, তা তদন্ত না করার কোনো কারণ নেই। তবে ফাতু বেনসৌদা প্রথমে আদালতের কাছে আদেশ চান, ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বিচার করার এখতিয়ার রয়েছে কি-না। এরপরই গত শুক্রবার আইসিসি তার সিদ্ধান্ত জানান।
এদিকে, একজন নতুন প্রসিকিউটর, করিম খান যিনি একজন ব্রিটিশ ল ইয়ার, এ বছরের জুন মাসে ফাতু বেনসৌদার সময়কাল শেষে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। মি. খান বেনসৌদার সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করতে এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে বাধ্য থাকবেন না। এদিকে মি. খানের সহকর্মীরা জানান, তারা নিশ্চিত নয় এই কেইস নিয়ে মি. খানের অবস্থান কী হতে পারে!
‘ভুয়া যুদ্ধাপরাধ’ বলে মন্তব্য ইসরায়েলের
ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আদালতের এই তদন্ত প্রক্রিয়ার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। যদিও তারা আইসিসির সদস্য নয়। ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে ‘ভুয়া যুদ্ধাপরাধ’ বলে মন্তব্য করেছেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
এ প্রসঙ্গে তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমি নিশ্চিত করছি যে, আমরা এই ‘বিকৃত বিচারের’ বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়ব।
এদিকে, কট্টরপন্থী ইহুদি নেতারা আইসিসির সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিম তীরের গ্রামগুলো মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন।
পাশাপাশি আইসিসির বিরুদ্ধে সেমেটিক বিরোধী আচরণের অভিযোগ এনেছেন নেতানিয়াহুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। এমনকি ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডে যুদ্ধাপরাধীর নমুনা আছে এমন সন্দেহ করাটাকেও হলোকাস্ট অস্বীকার করার নামান্তর বলে অভিযোগ করেছেন।
ইসরায়েল মনে করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তাদের ওপর সংঘটিত অত্যাচার–নির্যাতনের কারণে এখন তারা যা কিছুই করছে, সবই ইহুদি জাতির কল্যাণ ও রক্ষার জন্য। এ নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন করলেই অ্যান্টি সেমেটিক বলে বিবেচিত হবে।
চক্রান্তের পথ ধরছে ইসরায়েল
অভিযোগের পাশাপাশি ইসরায়েল আইসিসির পরিকল্পনা বানচাল করতে বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
- ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের যেসব ঊর্ধ্বতন অফিসারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠতে পারে, সম্ভাব্য গ্রেপ্তার এড়াতে তাদের বিদেশ ভ্রমণের বিষয়ে সতর্ক করেছে।
- পাশাপাশি এখন সাধারণ নাগরিকদের দিয়ে পশ্চিম তীর দখল করছে ইসরায়েল। আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন এলাকা দখল করে বসতি গড়ে দিত। এখন ইসরায়েলের সাধারণ নাগরিকেরা গিয়ে ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছে বা কৃষিজমি দখল করছে। বাধা দিলে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের নাগরিকদের ওপর হামলার অভিযোগ করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের আটক করছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
- আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আইসিসির ওপর চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করছে ইসরায়েল। বিভিন্ন দেশে যেসব সংগঠন ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ নিয়ে কথাবার্তা বলছে, তাদের অ্যান্টি সেমেটিক তকমা লাগিয়ে আটকানোর চেষ্টা করছে।
- বিদেশে অবস্থানকারী ফিলিস্তিনিরা গুপ্ত হামলার শিকার হচ্ছে।
- জায়নবাদী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইসিসির বিরুদ্ধে সক্রিয় করা হচ্ছে। এমনকি অনেকে আইসিসির ফাতু বেনসৌদা ও বিচারকদের প্রাণহানিরও আশঙ্কা করছেন।
‘জবাবদিহির জন্য ঐতিহাসিক দিন’ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে ফিলিস্তিন
ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শতায়ে আইসিসির পদক্ষেপকে ‘ন্যায়বিচার এবং মানবতার জয়’ বলে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে মানবাধিকার কর্মীরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আইসিসির যুদ্ধাপরাধের তদন্ত ফিলিস্তিনিদের কৌশলগত বিজয় বলে মনে করছেন। কারণ, আইসিসিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ প্রতিষ্ঠা করা অবিশ্বাস্য এক কঠিন কাজ।
ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে আইসিসির সিদ্ধান্ত আসার দিনটিকে ‘জবাবদিহির জন্য ঐতিহাসিক দিন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
এদিকে, হামাসের কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত ফিলিস্তিনের জনগণকে সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। তিনি আইসিসির প্রতি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরুর আহ্বান জানান।
প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)-এর সাবেক সদস্য হানান আসরাবি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা হস্তান্তরের পর ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধ নিয়ে আইসিসি তদন্তের ঘোষণা দেয়। এর আগে আইসিসি চাপের মুখে ছিল। এখন যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হওয়া উচিত।
আইসিসির পদক্ষেপে সন্তোষ জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসও। বিবৃতিতে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাসের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমাদের জনগণের ওপর ইসরায়েলি দখলদাররা যে যুদ্ধাপরাধ সংঘটন করেছে, তার সুষ্ঠু তদন্তে আইসিসির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। অসহায় ফিলিস্তিনিদের ন্যায়বিচার পাওয়ার পথ খুলে গেল এ পদক্ষেপের মাধ্যমে।’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের দ্বারস্থ হয় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। সে সময় পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের পাশাপাশি বসতি স্থাপনের বিষয়েও আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফিলিস্তিন।
বিপাকে যুক্তরাষ্ট্র
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের যুদ্ধাপরাধ তদন্ত শুরুতে ‘গভীর উদ্বেগ’ জানিয়েছে। তাদের দাবি, ইসরায়েল আইসিসির সদস্য না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের এখতিয়ার নেই আদালতের।
এছাড়া ট্রাম্প প্রশাসন ফাতু বেনসৌদার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল, বর্তমানে বাইডেন প্রশাসন সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে বলে মনে হয় না। বরং আইসিসির সিদ্ধান্ত বাইডেন প্রশাসনকে আরও বিপাকে ফেলে দেবে। যেহেতু বাইডেন বৈশ্বিক মানবাধিকার, গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচন করেছিলেন।
বাইডেন প্রশাসন কি ইসরায়েলকে রক্ষা করবে, না ফিলিস্তিনিদের মানবাধিকার রক্ষা করবে! একধরনের দোটানার মধ্যে আছে তারা। এ ছাড়া বাইডেনের পক্ষে পূর্ব জেরুজালেম থেকে দূতাবাস ফিরিয়েও আনা সম্ভব হবে না।
ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষাপট
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ইউরোপে বসবাসকারী ইহুদীরা ব্যাপক নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। সেই সময় ফিলিস্তিন ছিল তুর্কী অটোমান সাম্রাজ্যের অধীন। নির্যাতনের বিরুদ্ধচারণ করতে গিয়েই সে সময় ‘জাওনিজম’ বা ইহুদীবাদী আন্দোলনের শুরু। ইহুদীবাদী আন্দোলন দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ইউরোপের ইহুদীরা দলে দলে ফিলিস্তিনে গিয়ে বসত গড়তে শুরু করে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর তুর্কী অটোমান সাম্রাজ্য কার্যত ভেঙ্গে পড়ে। তখন যে লিগ অব নেশন’ গঠিত হয়েছিল, সেই বিশ্ব সংস্থার পক্ষ থেকে ব্রিটেনকে ‘ম্যান্ডেট’ দেয়া হয় ফিলিস্তিন শাসন করার।
এদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যেভাবে লাখ লাখ ইহুদীকে হত্যা করা হয় (হলোকাস্ট), তারপর ইহুদীদের জন্য একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় চাপ বাড়তে থাকে। ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের অধীনে থাকা অঞ্চলটি তখন ফিলিস্তিনি আর ইহুদীদের মধ্যে ভাগ করার সিদ্ধান্ত হয়। এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই ১৯৪৮ সালের ১৪ই মে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসরায়েল।
ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের মধ্যকার দ্বন্দ্ব-সংঘাত
ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার পরদিনই মিশর, জর্দান, সিরিয়া এবং ইরাক মিলে অভিযান চালায় ব্রিটিশ ম্যান্ডেটের অধীনে থাকা অঞ্চলে। সেটাই ছিল প্রথম আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ। ইহুদীদের কাছে এটি স্বাধীনতার যুদ্ধ হিসেবে পরিচিত। জাতিসংঘ ফিলিস্তিনে আরবদের জন্য একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় যে অঞ্চলটি বরাদ্দ করেছিল, এই যুদ্ধের পর তার অর্ধেকটাই চলে যায় ইসরায়েলের দখলে।
ফিলিস্তিনের জাতীয় বিপর্যয়ের শুরু সেখান থেকে। এটিকেই তারা বলে ‘নাকবা’ বা বিপর্যয়। প্রায় সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনিকে পালিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিতে হয়। ইহুদী বাহিনী তাদেরকে বাড়ি-ঘর থেকে উচ্ছেদ করে।
কিন্তু আরব আর ইসরায়েলিদের মধ্যে এটা ছিল প্রথম যুদ্ধ মাত্র। যা তাদের মধ্যে এক দীর্ঘমেয়াদী সংঘাতের সূচনা করে। ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাব ছিলো সুদূরপ্রসারী। ইসরায়েল বিপুলভাবে জয়ী হয় এই যুদ্ধে। তারা গাজা এবং সিনাই উপদ্বীপ দখল করে নেয় যা কিনা ১৯৪৮ সাল হতে মিশরের নিয়ন্ত্রণে ছিল। অন্যদিকে পূর্ব জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীরও তারা দখল করে নেয় জর্দানের কাছ থেকে। সিরিয়ার কাছ থেকে দখল করে গোলান মালভূমি। আরও পাঁচ লাখ ফিলিস্তিনিকে তাদের বাড়ি-ঘর ফেলে পালাতে হয়।
এরপরের যুদ্ধটি ‘ইয়োম কিপুর’ যুদ্ধ নামে পরিচিত। ১৯৭৩ সালের অক্টোবরের এই যুদ্ধের একদিকে ছিল মিশর আর সিরিয়া, অন্যপক্ষে ইসরায়েল। মিশর এই যুদ্ধে সিনাই অঞ্চলে তাদের কিছু হারানো ভূমি পুনরুদ্ধার করে। তবে গাজা বা গোলান মালভূমি থেকে ইসরায়েলকে হটানো যায়নি।
কিন্তু এই যুদ্ধের ছয় বছর পর ঘটলো সেই ঐতিহাসিক সন্ধি। মিশর প্রথম কোন আরব রাষ্ট্র যারা ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করলো। এর পর তাদের পথ অনুসরণ করলো জর্দান। কিন্তু তাই বলে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শেষ হলো না। গাজা ভূখণ্ড যেটি বহু দশক ধরে ইসরায়েল দখল করে রেখেছিল, সেটি ১৯৯৪ সালে তারা ফিলিস্তিনিদের কাছে ফিরিয়ে দিল। সেখানে ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বড় ধরণের লড়াই হয় ২০০৮, ২০০৯, ২০১২ এবং ২০১৪ সালে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আইসিসির এই সিদ্ধান্তের ফলে অবশেষে গুরুতর অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীদের জন্য প্রকৃত আশার সঞ্চার ঘটল। ইসরায়েল বা ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে বিচার শুরুর এখনই সময়।
এসডব্লিউ/১২১৩
আপনার মতামত জানানঃ