সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা অব্যাহত রয়েছে। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ঝালঙ্গী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ছোরা গুলিতে আবুল কালাম আজাদ (৩০) নামে এক বাংলাদেশি গরু ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
১৫ জানুয়ারি ২০২০, শুক্রবার বিকালে পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মোহন্ত এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত আবুল কালাম পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝালঙ্গী (পকেট) এলাকার জয়নালু হকের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে পাটগ্রাম থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০ পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ইসলামপুর এলাকার দুলাল হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম(২২) গুরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে নিহত হন। গত ১ মাস ৫ দিনের ব্যবধানে ওই ইউনিয়নে আবুল কালাম সহ ৩ বাংলাদেশি বিএসএফের গুলিতে নিহত হলেন। গত ১০ ডিসেম্বর আবু তালেব (৩২) নামে অপর এক গরু পারাপারকারী বিএসএফের গুলিতে নিহত হন।
বিজিবি ও স্থানীয় লোকজন জানায়, শুক্রবার ভোর সকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঝালাঙ্গী সীমান্তের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের সাবপিলার ৬-৭ নম্বরের নিকট দিয়ে আবুল কালামসহ ৪/৫ জন বাংলাদেশি ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় গরু আনতে সীমান্তে গেলে ভারতীয় কোচবিহার-১৪০ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ডোরাডাবরী বিএসএফ ক্যাম্পের একটি টহল দল তাদের লক্ষ্য করে গুলিতে ছোঁড়ে। এসময় আবুল কালাম গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় পালিয়ে আসে। পরে তার সঙ্গীরা তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথেই মারা যায় সে। পাটগ্রাম থানা পুলিশ আবুল কালামের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।পরে পাটগ্রাম থানা পুলিশ খবর পেয়ে তার লাশ থানায় নিয়ে আসে। পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মোহন্ত বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে নিহতের লাশ হস্তান্তর করা হবে।
ভারত সরকারের ঊর্ধ্বতন মহল দফায় দফায় বাংলাদেশকে প্রতিশ্রুতি দেয়া সত্ত্বেও সীমান্তে হত্যা চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়ছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মতে, ২০১৮ সালে যেখানে সীমান্তে হত্যার সংখ্যা ছিল ১১, সেখানে ২ বছরের ব্যবধানে তা চারগুণ ছাড়িয়ে গেছে। ভারত সরকারের ‘সবুজ সংকেত’ ছাড়া এভাবে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বেড়ে যাওয়ার কথা নয় বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। ভারত সরকার যেহেতু বাংলাদেশকে কৌশলগত বন্ধু হিসেবে তুলে ধরে, সেক্ষেত্রে সীমান্তে হত্যার নির্দেশ কে দিচ্ছে, কিংবা সেই হত্যা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কে ভারত সরকারকে বাধা দিচ্ছে বাংলাদেশকে এটা খুঁজে বের করতে হবে বলে মনে করছেন তারা।
এসডব্লিউ/ফাআ/০১২০
আপনার মতামত জানানঃ