টানা প্রায় পাঁচ মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গত ৭ অক্টোবর বিমান হামলার মধ্য দিয়ে এই বর্বর আগ্রাসন শুরু হয়। এরপর ২৮ অক্টোবর শুরু হয় স্থল অভিযান।
এই ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক মনে করেন, গাজা যুদ্ধের সময় ইহুদিবাদী প্রকল্পের দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ নিরাপত্তা ও অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে।
ইসরায়েল বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এই ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক সুলতান আল-আজলোনি আলআকসা স্যাটেলাইট টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সব লেখকই লিখেছেন ইসরায়েল শব্দটি কিভাবে গণহত্যা, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন, অপরাধ ও সহিংসতার সমার্থক হয়ে উঠেছে এবং এ সবই ফিলিস্তিনের বিজয়ের আলামত।
তিনি জোর দিয়েছেন যে বিশ্বে ইহুদিবাদের চেতনা এবং বিশ্বাসের ক্ষতি হয়েছে এবং অধিকৃত ভূমি থেকে ইহুদিদের বিপরীত অভিবাসনের অনেক লক্ষণ ফুটে উঠেছে।
ইসরায়েল ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে পশ্চিমা সরকারগুলোর সর্বাত্মক সমর্থন নিয়ে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে মজলুম ও প্রতিরক্ষাহীন ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ব্যাপক গণহত্যা শুরু করে।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার সমর্থনে ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তারপর থেকে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের ওপর জাতিগত শুদ্ধি অভিযান চালানো এবং তাদের সমস্ত ভূমি দখল করার জন্য বিভিন্ন গণহত্যা চালানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করে
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত পাঁচ মাসের টানা অভিযানে ২৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এ ছাড়া লাখ লাখ ফিলিনস্তিনি ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
টানা পাঁচ মাস ধরে চলা এ যুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনী গাজা উপত্যকার প্রায় সব এলাকায় হামলা চালিয়েছে। বাকি ছিল সর্বদক্ষিণের মিসর সীমান্তবর্তী এলাকা রাফাহ। সম্প্রতি সেখানেও অভিযান চালাতে শুরু করেছে ইসরায়েল।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, প্রাণ বাঁচাতে গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ১৪ লাখ ফিলিস্তিনি রাফাহ সীমান্তের বিভিন্ন শরণার্থী শিবির ও হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে খাবার, পানি, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের তীব্র সঙ্কট রয়েছে। অসহনীয় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন সেখানে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিরা।
এমন পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, রাফাহতে অভিযান চালালে চরম ‘বিপর্যয়কর’ এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। এই এলাকায় অভিযান না চালাতে ইসরায়েলকে চাপ দিচ্ছে আমেরিকাসহ আরও বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ।
তবে কারও কথাতেই কর্ণপাত করছেন না নেতানিয়াহু। গতকালের বক্তব্যে তিনি স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, ‘আমরা যদি হামাস নির্মূল করেও ফেলি, তবু রাফাহতে প্রবেশ করব।’
আপনার মতামত জানানঃ