ভারত পাকিস্তানে ফের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ করেছেন পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশী। গতকাল শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) আবু ধাবিতে সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগ করলেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর পরিকল্পনা করছে। তারা এ বিষয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক মিত্রদের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার চেষ্টা করছে নয়াদিল্লি।
তিনি আরো বলেন, ভারতে চলমান কৃষক আন্দোলন থেকে বিশ্বের নজর ফেরানো ও করোনা মোকাবেলায় ব্যর্থতা ঢাকতে এই পরিকল্পনা নিয়েছে মোদি সরকার। এসময় শাহ মাহমুদ কুরেশি হুঁশিয়ার করে বলেন, হামলা চালানো হলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।
ভারতকে ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সালের কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমরা যেভাবে তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকরি পদক্ষেপ নিয়েছি, ভারত যদি আবারও পুরানো পথে হাঁটে, তাহলে আমরা আগের মতো ব্যবস্থা গ্রহণ বাধ্য হবো।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মুঈদ ইউসুফ বলেন, সুনির্দিষ্ট এবং নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা সূত্রে ভারতের হামলা পরিকল্পনার তথ্য আমরা জানতে পেরেছি। তিনি বলেন, ‘বিশ্বে শান্তি রক্ষা করা সবার সমন্বিত দায়িত্ব। অভ্যন্তরীণ সংকট থেকে চোখ সরানোর জন্য ভারত হামলার পরিকল্পনা করছে। বিশ্ববাসীর উচিৎ ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড থেকে ভারতকে বিরত রাখা।’
দুই প্রতিবেশী দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে সশস্ত্রগোষ্ঠীগুলোকে সহায়তা এবং হামলা পরিকল্পনার অভিযোগ করে আসছে।
২০১৬ সালে ভারত দাবি করেছে, তারা পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছে। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরিতে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর উপর সশস্ত্রগোষ্ঠীর হামলার জবাবে সামরিক অভিযান চালানো হয় বলে জানায় নয়াদিল্লি।
ওই সময় পাকিস্তান তাদের ভূখণ্ডে ভারতীয় সামরিক অভিযানের দাবিকে উড়িয়ে দেয়।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এবং দেশটির পরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, শুক্রবার পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গুলি চালিয়ে জাতিসংঘের একটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে ভারত।
এক বিবৃতিতে সামরিক বাহিনী জানায়, বিনা উস্কানিতে ভারতের সেনাবাহিনী লাইন অব কন্ট্রোলের চিরিকোট সেক্টর গুলি চালিয়েছে। ভারতীয় বাহিনী সুনির্দিষ্টভাবে জাতিসংঘের গাতি হামলা চালায়। এসময় সামরিক বাহিনীর দুজন পর্যবেক্ষণ গাড়িতে ছিলেন।
এ ঘটনায় জাতিসংঘ এখনো কোনো বিবৃতি দেয়নি।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর ভারত ও পাকিস্তান এ পর্যন্ত তিনটি সর্বাত্মক যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতীয় যুদ্ধবিমান পাকিস্তানি ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। পাকিস্তান তখন ভারতীয় একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে। এই ঘটনার পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর : আল-জাজিরা
এসডব্লিউ/কেএইচ/১৩১০
আপনার মতামত জানানঃ