বাংলাদেশে করোনার উপস্থিতির পর থেকে সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা আসতে শুরু করেছে। তা অগ্রাহ্য করেই চলছে জনসমাগম সমৃদ্ধ সামাজিক অনুষ্ঠান। প্রতিবার ঈদের পরপরই বিয়ের ধুম পড়ে যায়, করোনা পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ রূপ নিলেও তার অন্যথা হয়নি।
লকডাউন না থাকায় এবারে ঈদুল আজহায় রংপুরের পীরগঞ্জে বিয়ের হিড়িক পড়ে গেছে। ঈদের আগের দিন থেকে শুক্রবার পর্যন্ত উপজেলায় হিন্দু, মুসলিম ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ১০০’র বেশি বিয়ে হয়েছে।
উপজেলা নিকাহ রেজিস্ট্রার ও হিন্দু বিয়ে রেজিস্ট্রারের সূত্র থেকে জানা গেছে, পীরগঞ্জের ১৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ঈদুল আজহা উপলক্ষে অনেক তরুণ-তরুণী ছুটিতে বাড়ি এসেছেন। এদের অধিকাংশই গার্মেন্টকর্মী। লকডাউন ৮ দিন শিথিল হওয়ায় জনজীবন স্বাভাবিক হয়। এ সুযোগে অনেক পরিবার তাদের সন্তানদের বিয়ে দেওয়ার জন্য ঈদের ছুটিকেই বেছে নিয়েছেন। সে অনুযায়ী ঈদের আগের দিন থেকে শতাধিক বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে সেখানে।
আরো জানা গেছে, ঈদের পরদিন (বৃহস্পতিবার) পীরগঞ্জ পৌরসভার ধনশালা গ্রামে তিন তরুণ তরুণীর বিয়ে হয়েছে।
সদ্যবিবাহিত পবন সরকার বলেন, করোনায় আমরা ঘরবন্দি হয়ে আছি। কিন্তু বয়স তো থেমে নেই। তাই পরিবারের সিদ্ধান্তে আমাকে বিয়ে করতে হলো।
ওই উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার মাসুদুর রহমান বলেন, এবারে বিয়ে বেশি হচ্ছে। আমার ইউনিয়নে প্রতিদিনই ৩-৪টি বিয়ে হচ্ছে।
উপজেলার একমাত্র হিন্দু বিয়ে রেজিস্ট্রার জীবন কুমার অধিকারী বলেন, এবারে ঈদুল আজহা উপলক্ষে বেশ কিছু বিয়ে হয়েছে । আগে হিন্দু বিয়ে রেজিস্ট্রি হতো না। এখন রেজিস্ট্রি হওয়ায় বিয়ের পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে।
পীরগঞ্জের ইউএনও বিরোদা রানী রায় বলেন, অনেক বিয়ের দাওয়াত পাচ্ছি কিন্তু সময় ও সুযোগের অভাবে দাওয়াত খেতে পারছি না। এতে অনেকেই মনে কষ্ট পাচ্ছেন। সবাইকে করোনা পরিস্থতির কথা মাথায় রেখেই সামাজিক অনুষ্ঠানগুলো সীমিত পরিসরে পালন করতে বলেছি।
করোনার মাঝে যেমন থেমে ছিলো না সভা সমাবেশ তেমনি থেমে ছিলো না বিয়েও। এখন করোনা ভয়াবহ হয়ে উঠছে, তবুও বিয়ে স্থগিত রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এসব কারণে বাড়ছে করোনা সংক্রমণও।
এদিকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় করোনা রোগী শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি ৬৩৯টি ল্যাবরেটরিতে ২০ হাজার ৫৩৬টি নমুনা সংগ্রহ ও ২০ হাজার ৮২৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪ লাখ ১৭ হাজার ৬৯৪টি।
নমুনা পরীক্ষায় নতুন রোগী শনাক্ত ৬ হাজার ৭৮০ জন। নমুনা পরীক্ষার হিসেবে রোগী শনাক্তের হার ৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ১০৩ জন ও নারী ৯২ জন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৯ হাজার ৪৬ জনে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এসডব্লিউ/এমএন/ডব্লিউজেএ/২৩১১
আপনার মতামত জানানঃ