নতুন বছর থেকে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের পড়তে হবে সরকারের উন্নয়নের তথ্য। মাধ্যমিকের নতুন বইয়ের কভার পেজের ভেতরের দুই অংশে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ এবং বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ওপর বাছাইকৃত ৭২টি স্থিরচিত্র (ছবি) সংযোজন করা হয়েছে।
ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ১১টি বইয়ের পাঠ্যসূচিতে এ ছাড়াও আসছে নতুন আরও অনেক কিছু। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকার তার রাজনৈতিক আদর্শ শিশু-কিশোরদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছে, এই উদ্যোগে তারই ইঙ্গিত মিলছে।
মাধ্যমিকের যে ১১টি বইয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে এগুলো হল, ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ইংরেজি, বাংলাদেশ ও বিশ্ব-পরিচয় এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বসভ্যতার ইতিহাস। এই তিন বিষয়ের আছে মোট আটটি বই। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির আনন্দ-পাঠ বা দ্রুত-পঠন বইগুলো নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া নবম শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ বই পরিবর্তন করে সহজ পাঠ করা হচ্ছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পাঠদান যুগোপযোগী করতে কারিকুলাম ও পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন আনা জরুরি ছিল। করোনার মধ্যে শিক্ষাব্যবস্থা পিছিয়ে পড়ায় সেই প্রয়োজন আরও বেশি করে অনুভূত হচ্ছে। এখন প্রাথমিকভাবে কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। যাতে শিক্ষার্থীরা আজকের বিশ্ব ও বাংলাদেশকে আরও ভালোভাবে জানতে পারে।
তবে শিক্ষার্থীদের কেন সরকারের উন্নয়নের তথ্য পড়তে হবে, এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চলছে নানামুখী বিশ্লেষণ। কবির হোসেন লিখেছেন, ‘সরকার চাইছে শিশু-কিশোরদের মধ্যে জনপ্রিয়তা বাড়াতে। কারণ সরকার জানে যে, গত ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সরকারের দমন নিপীড়নের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরকারের প্রতি অসন্তোষ দেখা দেয়। ফলে সরকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিজেদের ইমেজ ঠিক করার জন্য মাধ্যমিকের বইয়ে উন্নয়নের তথ্য দিচ্ছে। কিন্তু সরকারে বোঝা উচিত বইয়ের চেয়ে মানুষ সমাজ থেকে দেখেই বেশি শেখে। ফলে উন্নয়নের তথ্য নয় তারা হেলমেট বাহিনীকেই বেশি মনে রাখবে।’
আহসান হাবিব লিখেছেন, ‘এ আর নতুন কি! নতুন নতুন প্রকল্প এখন সবখানেই নেয়া হচ্ছে। ভালো রাস্তা খুঁড়ে নতুন রাস্তা হচ্ছে। এই উন্নয়নের তথ্য পড়াতে তো ভালো বই ফেলে নতুন বই বানাতেই হবে।’
এনসিটিবির মুদ্রণ শাখা থেকে জানা যায়, চলতি বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য ৩৬ কোটি নতুন বই প্রস্তুত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে মুদ্রণ-কৃত বই বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে পাঠানো শুরুও হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রতি বছরের মতো এবার কেন্দ্রীয়-ভাবে পাঠ্যপুস্তক উৎসব করা সম্ভব না হলেও যথাসময়ে যাতে শিক্ষার্থীদের হাতে বই দেয়া যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করা হচ্ছে। এসব বই অচিরেই শিশু কিশোরদের মধ্যে পৌঁছে যাবে সরকারি উন্নয়নের তথ্য নিয়ে।
Available for everyone, funded by readers. Every contribution, however big or small, makes a real difference for our future. Support to State Watch a little amount. Thank you.
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ