নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানার এসআই মো. রেজাউল করিমকে বিপুল পরিমাণ ঘুষের টাকাসহ হাতেনাতে ধরলেন সহকারী পুলিশ সুপার (সোনাইমুড়ী সার্কেল) সাইফুল ইসলাম। এ ঘটনায় তাকে প্রত্যাহার করে নোয়াখালী পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার(৬ মে) নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, অভিযুক্ত এসআই মো. রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে তাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তাই তাকে নোয়াখালী পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার রাতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেনের নির্দেশে অভিযুক্ত রেজাউল হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে এসআই রেজাউল বেগমগঞ্জের চৌমুহনী শহরের একজন পল্লী বিদ্যুৎ ডিলারের একটি মালবাহী ট্রাক আটক করে। গাড়িতে থাকা মালামালগুলো অবৈধ বলে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন তিনি। একপর্যায়ে ডিলারের কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ আদায় করে। তারপরে তিনি ওই ডিলারের কাছ থেকে আরো টাকা আদায়ের পাঁয়তারা করেন। ডিলার ঘুষের টাকা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকে অবহিত করেন। রাতেই পুলিশ সুপারকে তিনি তার ড্রয়ারে টাকা রয়েছে বলে অভিহিত করেন এবং অভিযুক্ত এসআইয়ের অফিসের ডয়ার তল্লাশি করলে তাদের দেওয়া ঘুষের টাকা পাওয়া যাবে বলে জানান।
পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে নোয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সোনাইমুড়ী সার্কেল) সাইফুল ইসলাম সোনাইমুড়ী থানায় এসে এসআই রেজাউলের টেবিলের ড্রয়ার খুলে ঘুষের টাকা পান।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘‘যত গবেষণা বা জরিপ করা হয়েছে তাতে দেখা গেছে পুলিশ সব সময় দুর্নীতিতে শীর্ষ পর্যায়ে আছে৷ এছাড়া মানুষকে হয়রানি করে, পকেটে মাদক- অস্ত্র দিয়ে পুলিশ ঘুষ আদায় করে বলে অভিযোগ আছে।
তারা বলেন, ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন, বিচারিক প্রক্রিয়া এই ধরণের প্রতিষ্ঠান যখন দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ে তখন মানুষের বঞ্চনা বাড়ে এবং ন্যায় বিচার প্রাপ্তির সম্ভাবনা হুমকির মুখে পড়ে।’
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পুলিশের বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার হার আশংকাজনক। প্রায় প্রতিদিনই পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে বিভিন্ন অপকর্মের। এবিষয়ে পুলিশের কর্তৃপক্ষসহ দেশের সরকাকেও নজর বাড়াতে হবে। কেননা, আইন রক্ষাকারী কর্তৃক একেরপর এক আইন বিরোধী কর্মকাণ্ডে দেশের আইনের প্রতি মানুষের অনাস্থা জন্মাবে। ফলশ্রুতিতে দেশে দেখা দিবে বিশৃঙ্খলা। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনের খড়্গ চালানোর আগে পুলিশের ওপর চালানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা। তারা বলেন, আগে পুলিশকে অপরাধমুক্তের চরিত্র অর্জন করতে হবে। নইলে সন্ত্রাসীদের নিকট পুলিশের যে ভাবমূর্তি সৃষ্টি হচ্ছে, এতে পুলিশ আর সন্তাসীদের মধ্যকার তফাৎ ঘুচে যায়।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৯১৬
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ