কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বর্তমানে জেলার ডেপুটি কমিশনারের (ডিসি) নেতৃত্বে একটি ব্যবস্থাপনা কমিটি সামলাচ্ছে। কিন্তু অনেকদিন ধরেই দাবি ছিল, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে সৈকতের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব স্থানান্তরের। কিন্তু ডিসি অফিসের তাতে সাঁয় ছিল না। এবার সংসদের তরফ থেকে সুপারিশ এসেছে ডিসির হাতে সৈকত আর না রাখার। সৈকত সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের একাংশ অবশ্য এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে পড়েছেন।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক থেকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত হস্তান্তরের সুপারিশ উঠে এসেছে। গতকাল সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, বজলুল হক হারুন, মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী এবং আনোয়ারুল আশরাফ খান অংশ নেন।
তবে সৈকতের নিয়ন্ত্রণ স্থানান্তরের সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ায় উদ্বেগের মধ্যে পড়েছেন একাংশ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। তারা বলছেন, করোনার কারণে এমনিতেই ভয়াবহ আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব উদ্যোক্তাই। এ অবস্থায় সৈকতের নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তরের ফলে উচ্ছেদের শিকার হতে পারেন ছোট উদ্যোক্তা ও হকারদের অনেকেই। এটা এই দুঃসময়ে বড় আঘাত হয়ে আসবে বলে মনে করছেন তারা। উদ্যোক্তাদের বিষয়টি বিবেচনার জন্য সংসদীয় কমিটির নির্দেশনা থাকলে সবার জন্য ইতিবাচক হতো বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠার পর সমুদ্রসৈকতের দায়িত্ব উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ওপরই বর্তায়। কিন্তু বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের ‘বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি’ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বহাল থাকায় এ নিয়ে দ্বৈধতা সৃষ্টি হচ্ছে। ওই সার্কুলারের জোরেই ডিসির নেতৃত্বাধীন কমিটি সৈকতের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে।
উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ১৫ ডিসেম্বর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছেও বিষয়টি ব্যাখ্যা করে একটি চিঠি দেন। ওই চিঠিতে বলা হয়, জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেল থেকে অনুমোদন দেয়া ঝুপড়ি দোকান, বিচ বাইক ইত্যাদির কারণে সৈকতের আবর্জনা বাড়ছে। ফটোগ্রাফারদের ‘দৌরাত্ম্য’ বেড়ে গেছে বলেও জানানো হয় চিঠিতে।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, কক্সবাজারে একটি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আছে। তাদের কাছে সমুদ্রসৈকতের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দিলে পরিবেশ সুন্দর থাকবে। নিয়ম অনুযায়ী একটি কর্তৃপক্ষের কাছেই বিচের ম্যানেজমেন্ট থাকা দরকার। এ জন্যই আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। সৈকত তো যেমন তেমন চলতে পারে না। আগেও কমিটি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। আজ আমরা দ্রুত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে বিচের ম্যানেজমেন্ট তুলে দিতে বলেছি।
এসডাব্লিউ/এসএন/আরা/১৪১০
আপনার মতামত জানানঃ