চীনা এক দম্পতির বিরুদ্ধে প্রশান্ত মহাসাগরের মার্শাল দ্বীপপুঞ্জে ‘ক্ষুদ্র রাষ্ট্র’ গড়ার চক্রান্তের অভিযোগ উঠেছে।দেশটির প্রত্যন্ত এলাকার একটি প্রবাল দ্বীপকে আধা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল (এসএআর) ঘোষণার জন্য আইনপ্রণেতাদের প্রভাবিত করেছিলেন তারা। এ কাজ করার জন্যে ওই যুগল দেশটির এমপি আর সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষও দিয়েছেন। খবর বিবিসির
বিবিসি জানায়, ক্যারি ইয়ান (৫০) ও জিনা ঝৌ (৩৪) নামের ওই চীনা দম্পতি মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের দূরবর্তী একটি দ্বীপকে ‘আধা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল’ করার জন্য আইনপ্রণেতাদের রাজি করানোর চেষ্টা করেন।
এ রকম একটি অঞ্চল গড়লে প্রশান্ত মহাসাগরীয় ওই দ্বীপদেশে বিদেশিদের আনাগোনা বাড়বে বলে মনে করেন তারা। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র শাসিত ছিল।
তবে ‘ক্ষুদ্র রাষ্ট্র’ গড়ার চক্রান্তের অভিযোগের বিষয়ে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের সরকার এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। যদিও বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে বিষয়টি তুলে ধরার আহ্বান এসেছে।
ক্যারি ইয়ান (৫০) ও জিনা ঝৌ (৩৪) নামের ওই চীনা দম্পতি মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের দূরবর্তী একটি দ্বীপকে ‘আধা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল’ করার জন্য আইনপ্রণেতাদের রাজি করানোর চেষ্টা করেন।
ক্যারি ও জিনা জুটি মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন করেছেন বলে দাবি যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃপক্ষের। মার্কিন কৌঁসুলিরা বলছেন, ‘আধা স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল’ গঠনকে সমর্থন করা একটি বিল নিয়ে ২০১৮ ও ২০২০ সালে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের পার্লামেন্টে বিতর্ক হয়।
মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের কয়েকজন আইনপ্রণেতা ৭ হাজার থেকে ২২ হাজার ডলারের ঘুষ পাওয়ার পর বিলটিতে ভোটও দিয়েছেন বলে অভিযোগ কৌঁসুলিদের। তবে ওই আইনপ্রণেতাদের পরিচয় দেওয়া হয়নি।
চীনা ওই জুটি ২০২০ সালে থাইল্যান্ডে আটক হন এবং গত সপ্তাহে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মার্কিন কৌঁসুলিরা জানান, চীনা ওই দম্পতি নিউইয়র্কভিত্তিক একটি এনজিও পরিচালনা করছেন। আর সেই এনজিওর মাধ্যমেই তারা মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং ঘুষ প্রদান করেছেন।
২০১৬ সাল থেকে শুরু হয়েছে এই তৎপরতা। মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের পরিত্যাক্ত রঙেলাপ কোরাল দ্বীপে আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল (এসএআর) গঠনের চেষ্টায় ওই চীনা জুটি দ্বীপটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্টের অ্যাটর্নি দামিয়ান উইলিয়ামস বলেন, ‘ইয়ান ও ঝৌউয়ের দেওয়া ঘুষ মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ ও দেশটির আইনসভার সার্বভৌমত্বের চরম লঙ্ঘন।’
যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার মাঝামাঝি একগুচ্ছ দ্বীপ নিয়ে গঠিত দেশ মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ। ১৯৭৯ সালে দেশটি স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এর আগের চার দশক মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের শাসনাধীন ছিল। প্রশান্ত মহাসাগরে ওয়াশিংটনের জন্য একটি কৌশলগত ঘাঁটি মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ। ওই দেশে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু নিরাপত্তা জোট অর্থাৎ সামরিক উপস্থিতি আছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেখানে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে চীন।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৪০০
আপনার মতামত জানানঃ