চীনের শানজি প্রদেশে চ্যাং ওয়েইপিং নামের এক মানবাধিকার আইনজীবী রুদ্ধদ্বার বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে। এদিকে, তার স্ত্রীকে আদালতে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
রেডিও ফ্রি এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চ্যাংয়ের স্ত্রী চেন জিজুয়ান এক টুইটে জানান গত মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ফেং কাউন্টি পিপলস কোর্টে তার স্বামীর বিচার শুরু হয়। বিচার কার্যক্রম প্রায় ৯০ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল এবং আরেকটি তারিখে আইনজীবী চ্যাংয়ের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করা হবে বলে টুইটে উল্লেখ করেছেন চেন।
একটি ছোট্ট ভিডিওতে চেনকে বলা শোনা যায়, ‘চ্যাং ওয়েইপিং, আমি আজ এখানে ফেং কাউন্টির হাইওয়ে এক্সিটে দাঁড়িয়ে আছি।’ চেন, সবুজ স্যুট পরে একটি বড় ফুলের হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ভিডিওটি ধারণ করে পুলিশ। এ সময় চেনের চারপাশে কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।
চেন আরও বলেন, ‘আমি তোমাকে এই ফুলগুলো উপহার দিতে চাই। আজ তোমার শুভ শুক্রবার; কিন্তু আমি তোমার গৌরবের দিন মনে করি। আমি খুবই দুঃখিত যে, তোমাকে নিজের চোখে দেখার আশায় দুই হাজার কিলোমিটারের বেশি পথ ভ্রমণ করে এসেও তোমার সঙ্গে থাকতে পারলাম না।’
রেডিও ফ্রি এশিয়া আরও জানান, আইনজীবীর চ্যাংয়ের স্ত্রী আরও বলেন-তাকে ১০ ঘণ্টা হাইওয়েতে আটকে রাখা হয়েছিল। পরে তাদের আইনজীবী জানান বিচার ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে।
চেন বলেন, কিন্তু ফলাফল যাই হোক না কেন, এটি সুষ্ঠু বিচার হয়নি। এই বিচার তোমার (চ্যাং) ছিল না, এটি ছিল তাদের অপরাধের একটি চিত্র।
চেন জানান, তাকে বলা হয়েছিল তিনি ফেং কাউন্টি পরিদর্শন করতে পারবেন না। কারণ তিনি দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ গুয়াংডংয়ের ডংগুয়ান থেকে ভ্রমণ করেছিলেন, যে অঞ্চলটিকে কর্তৃপক্ষ কোভিড-১৯ এর জন্য মাঝারি এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, পরে একটি অ্যাম্বুলেন্স আসে আমাকে আইসোলেশনে নেওয়ার জন্য। তারা আসলে অজুহাত হিসেবে কোভিড-১৯ নীতি ব্যবহার করেছে।
এদিকে, সহকর্মীকে বিচারের মুখোমুখি করায় নিন্দা জানিয়েছেন আরেক মানবাধিকার আইনজীবী লুও শেংচুন। এ ছাড়া চীনে নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া ফ্লোর ওই আইনজীবীর স্ত্রীর সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে তার সমালোচনা করেছেন।
ফ্লোর তার অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, চ্যাং ওয়েইপিংয়ের স্ত্রীকে ফেং কাউন্টিতে প্রবেশের সময় রাস্তায় আটকে রাখা হয়েছিল। তিনি ওই বিচারে অংশ নিতে চেয়েছিলেন। এটা অগ্রহণযোগ্য, যেটা আসামিকে তার স্বজনদের সমর্থনের ক্ষেত্রে বাধা দেয়। ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতা প্রয়োজন।
বেইজিংয়ে ফরাসি দূতাবাস মঙ্গলবারও টুইট করেছে, তারা আইনের শাসনের জন্য কাজ করা মানবাধিকার আইনজীবীদের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে। চীনে ব্রিটিশ দূতাবাস চ্যাংয়ের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে। সূত্র : এএনআই।
এসডব্লিউ/এসএস/২১৫০
আপনার মতামত জানানঃ