কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে বিদেশে সাহায্য বাজেট কমাচ্ছে যুক্তরাজ্য। ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্যে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে এবং সেই সঙ্গে আছে ব্রেক্সিটজনিত অনিশ্চয়তা। এই দুই কারণে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে এখন ভালো খবর নেই বললেই চলে। দ্বিতীয় দফা মন্দার আশঙ্কার মধ্যে আছে দেশটি। প্রতিবছর বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ব্রিটিশ সহায়তা পেয়ে থাকে। এ ছাড়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য যুক্তরাজ্য আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এখন ব্রিটিশ সরকার বিদেশে সাহায্য বাজেটে কাটছাঁট শুরু করলে বাংলাদেশও ক্ষতির শিকার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক ২৪ নভেম্বর ২০২০, বুধবার বিদেশে সাহায্য বাজেট কমাচ্ছে যুক্তরাজ্য ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ব্যয় পর্যালোচনার অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্য সাহায্য বাজেট সাময়িকভাবে জাতীয় আয়ের শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী জানান, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতির ওপর কভিড মহামারির প্রভাবের কারণে ব্রিটিশ সরকারকে সাহায্য বাজেট কমানোসহ প্রয়োজনীয় কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। তবে যখন সুযোগ সৃষ্টি হবে তখন আবারও জাতীয় আয়ের শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বিদেশে সাহায্য বাজেট ধরা হবে।
ঋষি আরো বলেন, বৈশ্বিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাজ্য আগামী বছর এক হাজার কোটি পাউন্ডের বেশি ব্যয় করবে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব ২৬ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার হাউস অব কমন্সে এ বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। বিদেশে সহযোগিতার সর্বোচ্চ প্রভাব নিশ্চিত করতে ব্রিটিশ সরকার কাজ করবে।
যুক্তরাজ্যের বৈদেশিক অনুদানের অর্থের বেশিরভাগ দরিদ্র দেশগুলোতে গেলেও ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অনুদানের প্রায় ৩৬ থেকে ৪৫ শতাংশ অর্থ গিয়েছিলো মধ্য আয়ের দেশগুলোতে। গত বছর প্রায় ১৫ বিলিয়ন পাউন্ড বৈদেশিক অনুদান দিয়েছিলো ব্রিটিশ সরকার।
২৬ নভেম্বর থেকে যুক্তরাজ্যে আবারও লকডাউন শুরু হয়েছে। এই দফায় রেস্তোরাঁ, বার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় নয়, এমন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আগামী ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। ২৫ নভেম্বর, বুধবার দেশটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় ২৫ হাজার ১৭৭টি।
বুধবার প্রকাশিত ব্যবসায়িক তৎপরতাবিষয়ক এক সমীক্ষার প্রতিবেদন দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে জুন মাসের পর অক্টোবর মাসে বেসরকারি খাতের ব্যবসায়িক তৎপরতা ছিল সবচেয়ে কম। নতুন কার্যাদেশ কমে যাচ্ছে, বেড়ে যাচ্ছে বেকারত্ব। সমীক্ষাটি সমন্বয় করেছে আইএইচএস মার্কিটের অর্থনীতিবিষয়ক পরিচালক টিম মুর। তিনি গণমাধ্যকে বলেন, নভেম্বর মাসের লকডাউন এবং কোভিড-১৯-এর খারাপ পরিস্থিতি দেখে মনে হয়, এই শীতে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি দ্বিতীয় মন্দার কবলে পড়বে। ফলে ২০২১ সালে ঘুরে দাঁড়ানোর পথটা হবে কঠিন।
মিই/১৩৫০
আপনার মতামত জানানঃ