বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের ক্ষমতা থেকে নামার পর বহু জল গড়িয়েছে। বহু রথী-মহারথী যুদ্ধের ময়দান থেকে হাওয়া হয়ে গেছেন। টিকিটিও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিএনপির আমলে আলোচিত হাওয়া ভবনের আশীর্বাদপুষ্ট নেতা আবুল হারিছ চৌধুরী বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন, এ নিয়ে জল অনেক ঘোলা হয়েছে। তবুও নিশ্চিত ভাবে কিছুই জানা যায়নি। যেন জাদুকরের হাতের আশ্চর্য সব কৌশলে এখান থেকে ওখানে পাচার হয়ে যাচ্ছেন হারিছ চৌধুরী। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বিএনপির ক্ষমতাকালীন প্রধানমন্ত্রীর দাপুটে রাজনৈতিক সচিব ছিলেন হারিছ চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বসলেও তার মূল ক্ষমতার উৎস ছিল হাওয়া ভবন।
তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার এই প্রভাবশালী রাজনৈতিক সচিব দীর্ঘদিন লুকিয়ে আছেন। মাঝে ছড়িয়ে পড়েছিল তার মৃত্যুর গুজবও। তবে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে বিভিন্ন কিছু। একবার গণমাধ্যম জানতে পারে, তিনি ভারতের পাঞ্জাবে রয়েছেন। সেখানে প্রকাশ্যে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসা। সেখানকার একজন আত্মীয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে তিনি ব্যবসা পরিচালনা করছেন। অবশ্য তারই আস্থাভাজন আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, মাঝেমধ্যে তাকে লন্ডনের বিভিন্ন এলাকায় মুখভর্তি দাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা গেছে।
নিখোঁজ হারিছ চৌধুরী
২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলার অভিযুক্ত আসামি বিএনপি-জামায়ত জোট সরকারের প্রভাবশালী নেতা সিলেটের হারিছ চৌধুরীর কোনও খোঁজ আজও বের করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রায় ১০ বছর ধরে বিদেশে গা ঢাকা দিয়ে থাকা এই হারিছ চৌধুরীকে দেশে ফিরিয়ে আনতেও দৃশ্যমান কোনও উদ্যোগ নেই। শুধু তাই নয়, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলার চার্জশিটেও অভিযুক্ত আসামি হারিছ চৌধুরীকে লাপাত্তা দেখানো হয়েছে। হারিছ চৌধুরী তাই দেশবাসীর কাছে এক রহস্য। কোন রাজনীতিকের এভাবে ঘৃণীত রহস্যময় নিখোঁজ থাকার ঘটনাটি রীতিমতো রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল ও নজিরবিহীন।
২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ইয়াজউদ্দিন ফখরুদ্দীন সরকার গঠনের পর থেকে হারিছ চৌধুরী হাওয়ায় মিলিয়ে যান। সামরিক বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তখন হঠাৎ হঠাৎ রাজনৈতিক নেতাদের অন্তর্ধানের খবর পাওয়া যাচ্ছিল। তখন শোনা যেত অমুক নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর কয়েক দিন হলো খোঁজ মিলছে না। পরে প্রায় সবারই খোঁজ পাওয়া গেলেও হারিছ চৌধুরীর খোঁজ মেলেনি আজও। তবে হারিছ চৌধুরীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর অবশ্য তখন পত্রপত্রিকায় আসেনি।
এমনকি তার কোনো সন্ধান পায়নি ওয়ান-ইলেভেন সরকার। এ সময় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, চট্টগ্রাম ও বগুড়ায় অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার, এস এ এম এস কিবরিয়া, আহসানউল্লাহ মাস্টারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে হারিছ চৌধুরীকে খুঁজতে থাকে গোয়েন্দা সংস্থা। কিন্তু তার সন্ধান আর মেলেনি। গত ১৪ বছরে তিনি কোথায় আছেন, জীবিত না মৃত, কেউ জানে না। এমনকি তার পরিণতি অন্য কারও মতো গুম কিনা তাও কেউ বলতে পারছে না। হারিছ যেন এক রহস্য এখনও।
২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে রাতের আঁধারে ভারতে পালিয়ে যান বিএনপি সরকারের দাপুটে এই নীতিনির্ধারক। সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আশ্রয় নেন ভারতের করিমগঞ্জে নানার বাড়িতে। সেখান থেকে ভাই আবদুল মুকিত চৌধুরীর কাছে ইরানে চলে যান তিনি।
ঢাকার গুলশানের আলিশান বাড়ি, দামী গাড়ি, শখের হরিণ, বিশাল সম্পত্তি সব ফেলে গ্রামের বাড়ি সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে ওপারে ভারতের করিমগঞ্জে নানার বাড়ি পালিয়ে যান হারিছ চৌধুরী।
সূত্র মতে, জানা যায়, হারিছ চৌধুরীর ৫ ভাইয়ের মধ্যে তিন ভাই দেশে থাকেন। সপরিবারে ইরানে থাকেন অপর ভাই ডা. মুকিত চৌধুরী। ৫ ভাই ও ৫ বোনের মধ্যে পলাতক হারিছ চৌধুরী সবার বড়। হারিছ চৌধুরীর স্ত্রী জোসনা আরা বেগম, ছেলে নাঈম সাফি চৌধুরী ও মেয়ে সামিরা তানজিম ওরফে মুন্নু আরা থাকেন লন্ডনে। মেয়ে মুন্নু আইন পেশায় ও ছেলে সাফি নরওয়েভিত্তিক একটি তেল কোম্পানিতে কাজ করছেন। হারিছের ভাইদের মধ্যে ডা. মুকিত চৌধুরী পরিবার-পরিজন নিয়ে থাকেন ইরানে। আরেক ভাই হাসনাত চৌধুরী ব্যাংকার ছিলেন। তিনি এখন আর জীবিত নেই। হাসনাতের সন্তানদের নিয়ে স্ত্রী থাকেন ঢাকায়। অপর ভাই সেলিম চৌধুরীও ঢাকায় থাকেন। বাড়িতে থাকেন ভাই কামাল চৌধুরী। তবে কামাল চৌধুরী বাড়ির সম্পদ দেখাশোনা করলেও মামলার তেমন খোঁজখবর নেন না।
জীবিত নাকি মৃত?
বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তি আবুল হারিছ চৌধুরী জীবিত না মৃত— এই প্রশ্নের সদুত্তর জানা নেই। তবে সূত্র মতে, দেশ থেকে পালানোর দুই বছর পর ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হারিছ চৌধুরী চিকিৎসার জন্য চলে যান যুক্তরাজ্যে। চিকিৎসা শেষে থেকে যান সেখানেই। এরপর কয়েকবার ইরান ও ভারতের করিমগঞ্জ যাতায়াত করেন হারিছ চৌধুরী।
যুক্তরাজ্যে থাকা অবস্থায় আত্মীয়স্বজন ও সিলেট বিএনপির একান্ত আস্থাভাজন কয়েক নেতা-কর্মীর সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। তবে বহুদিন ধরে কারও সঙ্গেই যোগাযোগ নেই তার। ফলে হারিছ চৌধুরী বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন— এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র কৌতূহল। সিলেট বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন, হারিছ চৌধুরী যদি বেঁচে থাকতেন, তাহলে কারও না কারও সঙ্গে তার যোগাযোগ থাকত। যদি হারিছ চৌধুরী জীবিত থাকে তাহলে তিনি কোথায়? ভারতের করিমগঞ্জ, ইরান না যুক্তরাজ্যে— কেউই তা বলতে পারছেন না।
হারিছ চৌধুরী উধাওয়ের পরও বিভিন্ন উপলক্ষে নগরীতে তার পক্ষ থেকে পোস্টারিং করতেন তার অনুসারীরা। বর্তমানে কোনও নেতাকর্মীর আলোচনাতে নেই হারিছ চৌধুরী। এখন আর তার জন্য কোনো নেতা-কর্মীও নেই অপেক্ষায়। তাদের ধারণা, হারিছ চৌধুরী জীবিত থাকলেও রাজনীতিতে ফের সক্রিয় হওয়ার মতো শারীরিক সুস্থতা বা মানসিক অবস্থাও নেই। নেতাকর্মীরা মনে করেন, হারিছ চৌধুরী জীবিত থাকলে ভারতের করিমগঞ্জে তার নানাবাড়িতে অবস্থান করার সম্ভাবনাই বেশি। নিজের গ্রামের বাড়ি কানাইঘাটের দর্পনগর থেকে তার নানাবাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় সেখানেই তিনি আত্মগোপন করে থাকতে পারেন।
হারিছ চৌধুরী এখন কোথায় আছেন, কেমন আছেন, জীবিত নাকি মৃত— তার কোনোটাই জানা নেই তার স্বজনদের। তার চাচাতো ভাই ফখর উদ্দিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে এ প্রসঙ্গে বলেন, হারিছ কোথায় আমাদের জানা নেই। আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। তিনি বেঁচে আছেন নাকি মারা গেছেন, সে বিষয়েও আমরা কিছু জানি না।
হারিছ চৌধুরীর উত্থান
২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের কাঁধে বন্দুক রেখে নানা অপরাধ সংঘটিত করার নেপথ্য নায়ক নাকি ছিলেন এই হারিছ চৌধুরী। সেনাশাসক জিয়াউর রহমান জকিগঞ্জ সফরকালে বেসরকারী কলেজের শিক্ষক হারিছ চৌধুরীকে তার বক্তৃতা শুনে দলে টানেন।
ঢাকার নটর ডেম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র হারিছ চৌধুরী শুরুতে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। পরে ’৭৭ সালে জিয়াউর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে যোগ দেন জাগদলে।
ঢাকায় এসে যুবদল করে নানা তদবির, ফন্দি-ফিকিরে শুরু হয় তার নতুন জীবন। এরশাদ জমানায় শাহজাহানপুরে ছোট্ট দ্বিতলের ফার্নিচারের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। খালেদা জিয়ার প্রথম শাসনামলে বিজয়নগরে আশা কার ভিশন নামে গাড়ির শোরুম খোলেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের এক সাবেক চেয়ারম্যানের ভাই ছিলেন পার্টনার। ওই সময় এক ব্যাংক কর্মকর্তার বদলির তদবিরে গিয়ে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের কাছে নাজেহাল হন।
১৯৭৯ ও ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৫ (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে পরাজিত হন হারিছ। ‘৯১ সালের নির্বাচনে তার গ্রামের বাড়ি জকিগঞ্জ আসনে ধানের শীষ নিয়ে প্রার্থী হয়েই জামানত হারান। এরশাদের বন্যার সময় তার শরীরে ভয়াবহ চর্মরোগ দেখা দিলে আর্থিক অসঙ্গতির কারণে চিকিৎসা সঙ্কটে পড়েন। সে সময় বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস পয়সা কড়ি দিয়ে তার চিকিৎসা করান।
২০০১ সালে নির্বাচনের সময় তিনি বিএনপির হাওয়া ভবনের মন জয় করেন। নির্বাচনের পর বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হলে হারিছ চৌধুরীর নতুন চেহারায় আবির্ভাব ঘটে রাজনৈতিক সচিব হিসেবে। তখন মন্ত্রীরা তো বটেই, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও তার মন জুগিয়ে চলতে তটস্থ থাকতেন। রাতারাতি বিত্ত বৈভবের জৌলুসপূর্ণ জীবনের অধিকারী হন হারিছ চৌধুরী। দেশে বিশাল সম্পদের বাইরে তার লুটপাটের টাকায় যুক্তরাজ্য বিএনপির রিক্ত নিঃস্ব এক নেতার নামেই পাঁচটি রেস্টুরেন্ট ব্যবসা চালু করান।
একে একে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় যুবদলের সেক্রেটারি, সহ-সভাপতিসহ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
ক্ষমতার দম্ভে হারিছ চৌধুরী ধরাকে সরা জ্ঞান করেন তখন। বড় বড় দুর্নীতিতে জড়িয়ে যায় তার নাম। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগর গ্রামে নিজের বাড়িতে গড়ে তোলেন আরেক ‘হাওয়া ভবন’। প্রভাব খাটিয়ে বাড়িতে অবৈধভাবে বিভিন্ন বন্যপ্রাণী পুষতে শুরু করেন তিনি। বাড়িতেই ব্যাংকের শাখা, পোস্ট অফিস ও নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে নেন হারিছ চৌধুরী। ওই সময় হারিছ চৌধুরীর দাপুটে অবস্থানের কারণে বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতাই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের কাছে ঘেঁষতে পারেননি।
সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজদের তালিকায় নাম ছিল হারিছ চৌধুরীর। ২০০৮ সালে একাধিক মামলায় তার ৬৫ বছরের কারাদণ্ড হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিদেশে পলাতক অনেক বিএনপি নেতা দেশে ফিরলেও হারিছ চৌধুরী ফেরেননি।
একাধিকবার দেশে ফেরার পরিকল্পনা
২০১০ সালের ঈদুল আযহার পর সূত্র মতে দেশে ফিরে আত্মসমর্পনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হারিস চৌধুরী। আত্মসমর্পনের জন্য দেশের শীর্ষ এক আইনজীবীর সাথে তিনি যোগাযোগও করেন। ওই আইনজীবী তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মামলায় জামিন হওয়ার সম্ভাবনার কথা বলেন। এরপর হারিস চৌধুরীর সম্মতিতে ওই আইনজীবী সকল কাগজপত্র প্রস্তুত করেন।
কিন্তু ২১ আগস্ট গ্রেণেড হামলা মামলার চার্জসিটে তাকে আসামি করায় হারিস চৌধুরী দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। তিনি পালিয়ে যাবার পর ২০১১-এর নির্বাচনের আগে সিলেট-১ আসনে হারিস চৌধুরীকে প্রার্থী করার দাবি জানিয়ে পোস্টারিংও করা হয়। ইচ্ছা ছিলো নির্বাচন হলে দেশে এসে প্রার্থী হবেন। তবে সে নিবার্চনে বিএনপি অংশই নেয়নি। ফলে দেশে আসাও হয়নি হারিস চৌধুরীর।
হারিস চৌধুরীর ঘনিষ্টজনরা জানান, আগেও একাধিকবার দেশে ফেরার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। কিন্তু দেশ থেকে গ্রীণ সিগন্যাল না পাওয়া, নতুন নতুন মামলায় জড়ানো ও পরিবারের সদস্যদের আপত্তির কারনে আর দেশে ফিরেননি হারিস।
২০১২ সালের ৭ ডিসেম্বর হারিস চৌধুরীর আরেক ছোট ভাই সৌদি আরবের আল-রাজি ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আবুল হাসনাত চৌধুরী ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তার দাফন সম্পন্ন হয় গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগর গ্রামে। লাশ গ্রামের বাড়ি আসার পর থেকে দাফন পর্যন্ত হারিস চৌধুরী ও আবদুল মুকিত চৌধুরী ইরান থেকে ফোনের মাধ্যমে কথা বলেন পরিবারের সদস্যদের সাথে। এসময় ফোনে হারিস চৌধুরী খুব বেশি কান্নাকাটিও করেন। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে ডা. আবদুল মুকিত চৌধুরী দেশে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু হারিস চৌধুরীর কারণে ইরান ফিরে যেতে সমস্যায় পড়তে পারেন এমন আশঙ্কায় তিনি দেশে আসা থেকে বিরত থাকেন।
দেশে কি ফিরবেন কখনও?
গুজব আছে, ২০১৫ সালে গোপনে দেশে এসেছিলেন হারিছ চৌধুরী। কিছুদিন সিলেটে অবস্থান করে নিজের সহায়-সম্পত্তি বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের কাছে বুঝিয়ে দিয়ে ফের চলে যান ভারতে।
সিলেটে হারিছ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানান, ২০১৫ সালের পর থেকে প্রায় দুই বছর দেশে কারোর সঙ্গেই যোগাযোগ করেননি হারিছ চৌধুরী। তখন তিনি মারা গেছেন বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে কয়েক বছর পর পর থেকে আবারও দেশে নিজের বিশ্বস্ত ও ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। দেশের রাজনীতি ও রেখে যাওয়া সম্পত্তির খবরও রাখছেন তিনি।
সূত্র জানান, কয়েক বছর আগে নিজের আস্থাভাজন ও ঘনিষ্ঠ সিলেট বিএনপির এক নেতার সঙ্গে ইন্টারনেট কলিংয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন হারিছ চৌধুরী। প্রায় আধা ঘণ্টার সেই আলাপে রাজনীতি, দেশে ফেরা-না ফেরা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলাপ করেন তিনি। ওই সময় বিএনপি নেতাকে তিনি জানান, পাঞ্জাবে তিনি সুস্থ আছেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য করছেন। তিনি দেশে ফিরতে চান। দেশে ক্ষমতার বদল ঘটলে এবং খালেদা জিয়াই বিএনপির নেতৃত্বে থাকলে তিনি দেশে ফিরবেন বলে জানান।
এসডব্লিউ/এমএন/এসএস/১৪২১
আপনার মতামত জানানঃ