Author: ডেস্ক রিপোর্ট

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্ক বরাবরই এক অদ্ভুত ভারসাম্যের উপর দাঁড়িয়ে আছে। দুই দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, বৃহৎ বাজার, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং কৌশলগত স্বার্থের মিল থাকা সত্ত্বেও তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ভেতরে সবসময় এক ধরনের অবিশ্বাস, প্রতিযোগিতা এবং দ্বিধা কাজ করে। নরেন্দ্র মোদি যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রবল আত্মবিশ্বাস নিয়ে উঠলেন, তখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির সময়কার দৃশ্যপট ভারতীয়দের কাছে এক নতুন আশার জন্ম দিয়েছিল। জনসমক্ষে উভয়ের হাসি, হাত মেলানো, বড় বড় জনসভা—সব মিলিয়ে মনে হয়েছিল ভারত-মার্কিন সম্পর্ক ইতিহাসের সেরা সময়ে পৌঁছেছে। ‘হাউডি মোদি’ এবং ‘নমস্তে ট্রাম্প’-এর মতো ইভেন্টগুলো ছিল সেই নাটকীয়তার প্রতীক। কিন্তু সেই উষ্ণতা আসলে কতটা বাস্তব ছিল, আর…

Read More

পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগরের ভেজাল দুধ কেলেঙ্কারি শুধু একটি বিচ্ছিন্ন অপরাধ নয়, বরং এটি বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থার গভীর দুর্বলতা ও দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার প্রতীক। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান মিল্ক ভিটার মতো একটি বড় এবং দীর্ঘদিনের আস্থাভাজন ব্র্যান্ডে যদি ডিটারজেন্ট, তেল, সোডা ও হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড মিশ্রিত দুধ ঢুকে যেতে পারে, তবে বোঝাই যায়—সরবরাহ শৃঙ্খলে কোথাও না কোথাও ভয়াবহ ফাঁকফোকর আছে। ৭ আগস্ট ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে স্থানীয় বাসিন্দা তারেক হোসেন ও তাঁর স্ত্রী মুন্নী খাতুন হাতেনাতে ধরা পড়েন। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা এই ভেজাল দুধ তৈরি করে বাঘাবাড়ী মিল্ক ভিটায় সরবরাহ করছিলেন। আদালত তারেককে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা এবং মুন্নী…

Read More

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় মাদ্রাসা একটি বৃহৎ অংশ হলেও কর্মসংস্থান খাতে এ ধারার শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত সীমিত। প্রতি বছর কওমি ও আলিয়া ধারার মাদ্রাসা থেকে প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করলেও এদের একটি বৃহৎ অংশ প্রাতিষ্ঠানিক চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত থাকেন। আধুনিক কারিগরি ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষার সঙ্গে মাদ্রাসাগুলোর সংযোগ কম থাকায় শ্রমবাজারে মাদ্রাসা গ্র্যাজুয়েটদের দক্ষতা নিয়ে নেতিবাচক ধারণা গড়ে উঠেছে। ফলে তারা চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন এবং অনেকেই বাধ্য হচ্ছেন স্বল্প আয়ের শিক্ষকতা বা ক্ষুদ্র ব্যবসার দিকে ঝুঁকতে। বেকারত্বের এই বাস্তবতা স্পষ্ট হয়েছে আল-আমিন ও আবদুল্লাহর অভিজ্ঞতায়। একজন ফাজিল ডিগ্রি সম্পন্ন করে চাকরির সুযোগ না পেয়ে…

Read More

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রেক্ষিতে ভারতের পোশাক শিল্প এক গভীর সংকটে পড়েছে। বিশেষ করে মার্কিন বাজারে ভারতের অবস্থান এখন হুমকির মুখে, কারণ ক্রেতারা উচ্চ শুল্কের কারণে ভারত থেকে পোশাক কেনা স্থগিত করছেন কিংবা উৎপাদন অন্য দেশে স্থানান্তরের কথা ভাবছেন। এই সংকটের সূচনা হয় যখন যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়, যার প্রথম দফা ২৫ শতাংশ কার্যকর হয়েছে ৭ আগস্ট থেকে এবং বাকি ২৫ শতাংশ কার্যকর হবে ২৮ আগস্ট। এ অবস্থায় মার্কিন ব্র্যান্ড গ্যাপ, কোল’সসহ অনেক বড় কোম্পানি ভারতের পোশাক রপ্তানিকারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানাচ্ছেন, তারা বাড়তি খরচ বহন করতে পারবেন না এবং অন্য দেশে উৎপাদন…

Read More

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিবর্তন ও বহির্বিশ্বে ক্রমবর্ধমান বিরোধপূর্ণ অবস্থান ভারতের জন্য নতুন বাস্তবতা সৃষ্টি করেছে। শেখ হাসিনার পতনের পর ভারত যে রকম দ্রুততার সাথে ইউনূস-নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছে, তা তাদের কূটনৈতিক দোদুল্যমানতারই প্রতিফলন। দীর্ঘদিন ধরে যেভাবে ভারত শেখ হাসিনাকে ঘিরেই বাংলাদেশের রাজনীতি পরিচালনায় প্রভাব বিস্তার করছিল, তা যেন হঠাৎ করে একটি বন্ধ দরজার মুখে এসে থেমে গেছে। অথচ ভারত এতদিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগকেই বাংলাদেশে একমাত্র ভরসাযোগ্য ও নিরাপদ রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দেখে এসেছে। এখন, হাসিনার অবর্তমানে ভারত যেন খুঁজে ফিরছে নতুন বাংলাদেশকে—not হাসিনা, বরং পুরো দেশটিকে। শেখ হাসিনার ভারত-নির্ভর কূটনীতি যে শেষমেষ ব্যুমেরাং হয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে ভারতীয়…

Read More

কলকাতায় আওয়ামী লীগের ‘গোপন’ দলীয় কার্যক্রম নিয়ে সম্প্রতি বিবিসি বাংলার একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন নতুন করে রাজনৈতিক উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার বাংলাদেশ ত্যাগের পর, কলকাতার এক বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সে দলটির একটি অঘোষিত ‘পার্টি অফিস’ চালু হয়েছে, যেখানে নিয়মিত নেতাকর্মীদের বৈঠক হয়, চলে সাংগঠনিক কাজকর্ম। এই অফিসটি এমনভাবে গোপন রাখা হয়েছে যে বাইরের কেউ দেখে বুঝতে পারবে না এটি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এই দফতরে কোনো সাইনবোর্ড, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিংবা শেখ হাসিনার ছবি নেই। এমনকি দলীয় নথিপত্রও সংরক্ষণ করা হয় না। দলের নেতাদের মতে, এটি সচেতনভাবে করা হয়েছে, যাতে দপ্তরের পরিচয়…

Read More

বাংলাদেশ ২০২৪ সালের আগস্টে এক বৃহৎ গণআন্দোলনের সাক্ষী হয়, যেখানে স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাপক প্রতিবাদ ও ঐতিহাসিক গণজাগরণ ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলন শুধু রাজনৈতিক শক্তি পরিবর্তনের প্রতীক ছিল না, বরং এটি মানুষের মৌলিক অধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার আশা নিয়ে নতুন এক যুগের সূচনা হিসেবে গণ্য হয়। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্তিতে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন থেকে যে চিত্র উঠে এসেছে, তা হতাশাজনক। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকার মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। তারা বলেছে, নির্বিচার গ্রেপ্তার এখনও অব্যাহত রয়েছে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও হেফাজতে মৃত্যুর…

Read More

নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশের রাজনীতি আবারও উত্তাল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা রাজনীতির কেন্দ্রে চলে এসেছে। নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সরাসরি চিঠি দিয়ে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভোট আয়োজনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যা অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ইসি থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য সংস্থাগুলো ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর দৃষ্টি এখন নির্বাচনের দিকে। বিএনপি এই নির্বাচনকে ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’ বলে উল্লেখ করে বলছে, এটি দেশের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের দ্বার উন্মোচন করবে।…

Read More

এই ঘটনাবহুল বাণিজ্য সংকটের প্রেক্ষাপটে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে। একসময় যে দুই নেতা—ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নরেন্দ্র মোদি—এক অপরকে ‘বন্ধু’ বলে আখ্যায়িত করতেন, আজ তাদের নেতৃত্বাধীন দেশদ্বয়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংঘাতে রূপ নিয়েছে সম্পর্ক। যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কেবল বাণিজ্যিক প্রতিক্রিয়া নয়; এর মধ্যে ভূরাজনৈতিক বার্তাও স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই ৫০ শতাংশ শুল্ক ভারতের অর্থনীতির ওপর একটি বড় ধাক্কা। কারণ এটি এমন এক সময় এসেছে, যখন ভারত নিজেকে বিশ্বের অন্যতম বড় উৎপাদন ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তুলতে চায়, বিশেষত চীনের বিকল্প হিসেবে। কিন্তু এত উচ্চ শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করা কঠিন হয়ে পড়বে এবং বিদেশি…

Read More

চট্টগ্রামের রপ্তানিখাত বিশেষ করে পোশাক শিল্প নতুন এক সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের শুল্কহার তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় দেশটির প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে চীন ও ভারতের মতো বড় ক্রেতা দেশগুলোর প্রতিষ্ঠানগুলো। এর ফলে চট্টগ্রামের ২৫০টিরও বেশি পোশাক কারখানার ওপর আন্তর্জাতিক অর্ডার চাপ বাড়তে শুরু করেছে। তৈরি পোশাক খাতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের শুল্কহার সমান হলেও, চীনের তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ এবং ভারতের তুলনায় ৫ শতাংশ কম হওয়ায় প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের জন্য। বিশেষত, চীনা ক্রেতারা বর্তমানে ‘FOC’ বা ফ্রি অফ কস্ট পদ্ধতিতে অর্ডার দিচ্ছে। এ পদ্ধতিতে তারা নিজস্বভাবে কাপড় ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রী পাঠিয়ে দেয় এবং বাংলাদেশে কেবল…

Read More