সৈয়দ জেলওয়ার হোসেন স্বপন : ভারতে সাজা ভোগের পর দেশে ফিরলেন ৪২ বাংলাদেশী নাগরিক। এদের মধ্যে ৯ জন নারী বাকি ৩৩ জন পুরুষ। অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে ভারত রাজ্যের বিভিন্ন কারাগারে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছেন শতাধিক বাংলাদেশী জেলবন্দী। গত সোমবার সুতারকান্দি সীমান্ত দিয়ে যেসব জেলবন্দী দেশে ফিরেছেন তাদের অধিকাংশ বাংলাদেশের সিলেট ও মৌলভীবাজারের।
চট্টগ্রাম, ফিরোজপুর, নবাবগঞ্জ, দিনাজপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। অবৈধ অনুপ্রবশের দায়ে আসাম পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশ ও বিএসএফ তাদেরকে আটক করলে আদালতের নির্দেশে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয় এবং আদালতে সাজার মেয়াদ শেষ হলেও দুই দেশের নানা জটিলতায় তাদের দেশে ফেরা বিলম্বিত হয় দীর্ঘদিন। জেলে থাকা এসব বন্দীদের ব্যাপারে কিছুই জানতেন না অনেকের স্বজনরা। এদের মধ্যে অনেকের কথা তাদের স্বজনরা ভুলেই গেছেন। সীমান্ত পুলিশের সূত্রে জানা গেছে যে, শিলচরে থাকা অনেক বাংলাদেশী বন্দীর সাজার মেয়াদ দুই থেকে ছয় বছর আগে শেষ হলেও নাম পরিচয় নিশ্চিত না হওয়ায় তাদের দেশে ফেরা বিলম্বিত হয়।
এদের মধ্যে ২৩ জনকে পারু স্টেশন থেকে আটক করে রেলপুলিশ, কাছাড় জেলা পুলিশ আটক করে আটজনকে, করিমগঞ্জ থেকে আটক করা হয়েছিল তিনজনকে এবং বাকিদের আটক করা হয় আসামের শিবসাগর, ডিমা হাসাও, সাউথ সালমারা, কার্বি আংলং, শোনিতপুর থেকে।
প্রসঙ্গত বাংলাদেশের মৌলভীবাজারের বিশিষ্ট লেখক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সমাজসেবক অমলেন্দু কুমার দাশ দীর্ঘদিন ধরে উভয় দেশের বন্দীদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনে উভয় দেশের সরকার, দূতাবাস ও আদালতের জটিলতা নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আসামে নিযুক্ত সহকারী হাই কমিশনারের বিশেষ তত্ত্বাবধানে ও অমলেন্দু দাশের সহায়তায় আসামের বিভিন্ন জেলার কারাগারে বন্দী ৪২ বাংলাদেশী বন্দী ২ নভেম্বরে সোমবার বিয়ানীবাজারের সুতারকান্দি সীমান্ত হয়ে তাদেরকে নিজ দেশে পাঠানো হয়। বন্দীদের আত্মীয়স্বজন সমাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পুলিশ, বিজিবিদের মাধ্যমে তাদের গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য সোমবার দেশে ফেরা ৪২ জন বন্দীর পরিচয় এবং ঠিকানা ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে নিশ্চিত করেন যুগ্মসচিব জাহিদ হোসেন এবং পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরই তৎপরতা শুরু হয় ভারতের পক্ষ থেকে। এসব বাংলাদেশী বন্দীর আপন নীড়ে ফেরার প্রক্রিয়া শেষ হয় গত শুক্রবার। তারা দেশে ফেরার প্রহর গুনে অবশেষে সোমবার সুতারকান্দি-শেওলা বন্দর দিয়ে তাদেরকে আত্মীয়স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
খবর : নয়াদিগন্ত, পৃষ্ঠা ১২ / ০৪নভেম্বর ২০২০
আপনার মতামত জানানঃ