অনন্য আজাদ : বর্তমানে বাঙলাদেশে যে কয়জন দুর্ধর্ষ ইসলামিক উগ্রবাদি রাজনীতির ময়দানে সক্রিয় ও আক্রমণাত্মক এবং উসকানিমূলক মতবাদ প্রচার ও প্রসারের ভূমিকা পালন করে থাকেন তাদের মধ্যে শীর্ষস্থানে অবস্থান করেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর মহাসচিব মামুনুল হক। তিনি গত এক দশক ধরে বাঙলাদেশকে শরিয়া ভিত্তিক ইসলামী রাষ্ট্রে রূপান্তর করার জন্য ওয়াজ মাহফিলে কট্টর ইসলামিক নিয়মকানুন ও বিধিনিষেধ মেনে চলার বক্তব্য প্রদানের মধ্য দিয়ে ধর্মান্ধ সমাজে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন।
তিনি মনে করেন, বাঙলাদেশ চলবে শরিয়া মোতাবেক ও নারীর অধিকার ও স্বাধীনতা থাকবে পুরুষের অধীনে এবং লাল সবুজের এই ভূখণ্ডে কোন নাস্তিক বা অবিশ্বাসী বেঁচে থাকতে পারবে না। নাস্তিকদের জন্য মৃত্যুদণ্ডই হচ্ছে আসল ও একমাত্র সমাধান- যা ইসলামে লিপিবদ্ধ আছে।
নাস্তিকদের বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলাম, জামায়াতে ইসলাম, বিএনপি, আওয়ামীলীগ, ওয়ামালীগ সকলেরই আক্রোশ; কারণঃ বাঙলাদেশে নাস্তিকেরাই ধর্মীয় রাজনীতি, ধর্মীয় মৌলবাদ, ধর্মীয় ভণ্ডামো, সরকারের দুর্নীতি ও দ্বিচারিত্রিক কার্যকলাপ, প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা, ইসলামিক মৌলবাদের সাথে আপোষ, রাষ্ট্র, সংবিধান, সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতার কট্টর সমালোচনা করার দুঃসাহস দেখিয়ে থাকেন। এই সূত্র ধরে নাস্তিকেরা সকল রাজনৈতিক, ধর্মীয় দল ও সংগঠনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
নাস্তিকদের পক্ষে যে বামপন্থী বা সিপিবি সব সময় অবস্থান নেয়, তা নয়; প্রয়োজন পড়লে তারাও ইনিয়েবিনিয়ে নাস্তিকদের সমালোচনা করে মৌলবাদীদের সাথে সুর মিলিয়ে নিরাপদে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকেন।
গতকাল, (৩রা এপ্রিল) হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক; যিনি বাঙলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে সরিয়ে ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত করার স্বপ্নে বিভোর ও ইসলামী শাসনতন্ত্র কায়েমের আন্দোলনে প্রথম সারির সক্রিয় নেতা তথা জঙ্গি- যার মতে একটি দেশ শুধুমাত্র আল্লাহর আইন অর্থাৎ ইসলামিক আইন বা শরিয়া আইনের ভিত্তিতে পরিচালিত হতে পারে ও আল্লাহর নিয়ম ব্যতীত অন্য সকল পন্থা ও নিয়মকে অস্বীকার করে থাকেন- তাকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের একটি রিসোর্ট থেকে স্থানীয় জনতা ও আওয়ামীলীগের কয়েকজন অখ্যাত নেতা একজন নারীসহ আটক করে।
প্রথমেই প্রশ্ন উঠবে- মামুনুল হকের অপরাধ কী? রিসোর্টে যাওয়া কি অপরাধ? নারীকে রিসোর্টে নেওয়া কি অপরাধ? মামুনুল হক কি সেই নারীকে জোরপূর্বক রুমে নিয়ে গিয়েছিল?
প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর না। এখানে মামুনুল হকের কোন অপরাধ নেই। তিনি কোন অপরাধ করেন নি।
According to Universal Declaration of Human Rights, art 1 says, ‘All human beings are born free and equal in dignity and rights.’ And According to Universal Declaration of Human Rights, art 13 says, ‘Everyone has the right to freedom of movement and residence within the borders of each state. … Everyone has the right to leave any country, including his own, and to return to his country.’
পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ স্বাধীন, প্রতিটি মানুষের অধিকার আছে সে কোথায় ও কার সাথে যেতে চান! দুজন প্রাপ্ত বয়স্ত নারী পুরুষ একসাথে থাকা কোন অপরাধ নয়। দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ একে অপরের সম্মতিতে যৌন সহবাস করলেও সমস্যা নেই। দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারী পুরুষ বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়া যৌন সহবাস করাও কোন অপরাধ নয়। এমনকি অন্যের স্ত্রী বা প্রেমিকা বা বান্ধবি নিয়ে কেউ যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলেও তা কোন অপরাধ নয়, যতক্ষণ না পর্যন্ত একজন আপত্তি জানিয়ে থাকে।
The Penal Code, 1860
Act No. XLV OF 1860
OF OFFENSES RELATING TO MARRIAGE
Adultery 497. ‘Whoever has sexual intercourse with a person who is and whom he knows or has reason to believe to be the wife of another man, without the consent or connivance of that man, such sexual intercourse not amounting to the offense of rape, is guilty of the offense of adultery, and shall be punished with imprisonment of either description for a term which may extend to five years, or with fine, or with both. In such case the wife shall not be punished as an abettor.’
কিন্তু প্রশ্ন উঠবে যে, মামুনুল হক কে? তিনি কি একজন নাস্তিক? তিনি কি একজন ধর্ম নিরপেক্ষ ব্যক্তি? তিনি কি উদার চিন্তাধারার মানুষ?
প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে না।
মামুনুল হক সম্পূর্ণ বিপরীত। তিনি যেই মতাদর্শ লালন পালন করে থাকেন তা উদার চিন্তাধারাকে অস্বীকার করে কট্টর পন্থাকে অগ্রাধিকার দেয়। অর্থাৎ, ইসলামিক আইন অনুযায়ী তিনি আল্লাহর নিয়মকে তিরস্কার করেছেন, তোয়াক্কা করেন নি গতকাল। তিনি যেখানে ওয়াজ মাহফিলে সারাক্ষণ নারীবিদ্বেষী বক্তব্য দিয়ে থাকেন, গার্মেন্টসের নারীদের পরিশ্রমকে জেনা মনে করেন, বোরকা পরিধান করা ব্যতীত নারীকে বেশ্যা মনে করেন, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ককে জেনা মনে করেন, প্যান্ট শার্ট পরা নারীদের বেশ্যা মনে করেন, বিজ্ঞানের সকল সুবিধা ব্যবহার করে ১৪৫০ বছর আগের অবৈজ্ঞানিক, হিংসাত্মক, বর্ণবাদীমূলক, আক্রোশমূলক গ্রন্থে লিপিবদ্ধ জীবনযাপনের পন্থাকে আদর্শ হিশেবে দেখেন- তার পক্ষে কি স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোন নারীর সাথে একটি কক্ষে অবস্থান করা জায়েজ বা সম্মত বা ইসলামসম্মত? একজন ধর্মীয় ব্যক্তি কি অমন কাজ করতে পারে? ইসলাম কি অপরিচিতা নারীর সাথে সঙ্গমে সম্মতি প্রকাশ করে?
যখন মামুনুল হককে আটক করা হয়, তখন প্রথমে তিনি পালিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন। কিন্তু কেনো? তিনি যদি ইসলামবিরোধী কোন কাজ না করে থাকেন, তাহলে তো তার ভীত হওয়ার কথা ছিল না। তিনি যেহেতু ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের চিত্রিত করেন, সেহেতু তার এই কার্যকলাপ ইসলামসম্মত নয় বিধায় তিনি ভয় বা লজ্জা পান। তার কর্মকান্ড যে সন্দেহজনক ছিল- তা প্রমাণ পাওয়া যায় তার পরস্পরবিরোধী একাধিক বক্তব্যে।
তিনি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্যে বলেন, ‘আমেনা তৈয়াবা তার দ্বিতীয় স্ত্রী। ২ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছে।‘
অন্যদিকে, সেই নারীকে তার নাম জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেন জান্নাত আরা জান্নাত।
অর্থাৎ মামুনুল হক যে মিথ্যা কথা বলেছেন এতে কোন সন্দেহ নেই। সেইসাথে তিনি আল্লাহর কসম কেটে সবার সামনে বলেন, ‘আমি শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে করেছি।‘
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘মিথ্যা তো তারাই বানায়, যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের ওপর ঈমান রাখে না। বস্তুত তারাই মিথ্যুক। ’ (সুরা নাহাল, আয়াত: ১০৫)
কিন্তু যখন তিনি সেই রিসোর্ট থেকে ধর্মান্ধ মৌলবাদীদের আক্রমণাত্মক ও ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের পরিপ্রেক্ষিতে স্থান ত্যাগ করে প্রথম স্ত্রীকে ফোন করেন- তখন তিনি জান্নাত আরা জান্নাত তথা আমেনা তৈয়াবা প্রসঙ্গে সম্পূর্ণ ভিন্ন ও বিপরীত কথা বলেন। অর্থাৎ, এক্ষেত্রেও তিনি মিথ্যে বলতে দ্বিধাবোধ করেন নি। যেখানে ইসলাম ধর্মে মিথ্যা বলা মহা পাপ বলা আছে সেখানে একজন উচ্চ পর্যায়ের ধর্মীয় নেতা কীভাবে আল্লাহর কসম কেটে সবাইকে মিথ্যে ও প্রথম স্ত্রীকে মিথ্যা বলার প্ররোচনা দিতে পারেন তা প্রশ্নবিদ্ধ থেকেই যায়।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুনাফেকদের নিদর্শন তিনটি : কথা বলার সময় মিথ্যা বলা, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা এবং আমানতের খেয়ানত করা। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ৩৩, মুসলিম, হাদিস নং : ৫৯)
প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে মামুনুল হকের সেই ফোনালাপের অডিও ক্লিপে শোনা যায়ঃ
‘আসসালামু আলাইকুম ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ
পুরো বিষয়টা আমি তোমাকে সামনে এসে বলব। ওই মহিলা যে ছিল সে হলো আমাদের শহীদুল ইসলাম ভাইয়ের ওয়াইফ। ওটা নিয়ে সেখানে পরিস্থিতি এমন হয়ে গিয়েছিল যে, এটা বলা ছাড়া…. আমাকে ইয়ে করে ফেলছে–বুঝছো?
আচ্ছা, বাসায় আসেন, তারপর যা বলার বইলেন
বলুম তো, তুমি বিষয়টা.. অন্যান্য কথা অন্যদের বলতে হবে। পরিস্থিতি এমন হয়ে গেছে। তুমি আবার মাঝে অন্যকিছু মনে কইরো না। তোমাকে কেউ জিজ্ঞেস করলে বলবা, হ্যাঁ, আমি বিষয়টা জানি।
ঠিক আছে। ‘
অর্থাৎ, আল্লাহর কসম কেটে সবাইকে মিথ্যে বলে পরবর্তীতে প্রথম স্ত্রীকে আবারও নতুন একটা মিথ্যে বলা কি ইসলামসম্মত? সবার সামনে বলেন- সেই নারী হচ্ছে তার দ্বিতীয় স্ত্রী আর প্রথম স্ত্রীর কাছে বলেন- সেই নারী হচ্ছে শহীদুল ইসলাম ভাইয়ের ওয়াইফ।
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা আমার ওপর মিথ্যা বলবে না, যে আমার ওপর মিথ্যা বলবে, সে যেন জাহান্নামে প্রবেশ করে। ’ (বুখারি, হাদিস নং : ১০৬)
যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহ বান্দা হিশেবে দাবি করেন, আল্লাহর নিয়ম নীতি আইনকানুনকে একমাত্র শুদ্ধ ও আদর্শ মেনে সবাইকে সেই পথে চলার জন্য উসকানি দিয়ে থাকেন- তার কাছ থেকে কি মিথ্যা বলা আশা করা যায়?
একটি, দুটি, তিনটি মিথ্যে বলেই তিনি শান্ত হন নি; একটি মিথ্যেকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তাকে অগণিত মিথ্যে বলে যেতে হয়েছে। এবং হয়তো পরবর্তীকালেও একাধিক মিথ্যে বলতে হবে।
মামুনুল হক রাত ১০ টায় লাইভ ভিডিওতে এসে বলেন, ওই নারীর স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ার পর তিনি তাকে বিয়ে করেছেন। এ সময় মামুনুলের সঙ্গে তার ভাইয়েরা উপস্থিত ছিলেন।
যেখানে মামুনুল হক তার প্রথম স্ত্রীকে ফোন করে বলেন, ‘সেই নারীটি হচ্ছে শহীদুল ইসলাম ভাইয়ের ওয়াইফ,’ সেখানে তিনি আবার লাইভ ভিডিওতে এসে কীভাবে আরেকটি মিথ্যে বলতে পারেন তা কি ধর্মান্ধ মৌলবাদীরা বুঝতে ব্যর্থ?
তিনি প্রথমে সবাইকে বলেছিলেন, জান্নাত আরা জান্নাত তথা আমেনা তৈয়াবাকে শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে করেছেন । তারপর প্রথম স্ত্রীকে ফোনে বললেন, আমেনা তৈয়াবা হচ্ছে শহীদুল ইসলাম ভাইয়ের ওয়াইফ। পরবর্তীতে লাইভে এসে বললেন, ওই নারী অর্থাৎ আমেনা তৈয়াবাকে বিয়ে করেছেন। বিয়ের সময় তার ভাইয়েরা উপস্থিত ছিলেন।
মামুনুল হকের দ্বিচারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে এখানে; একটি মিথ্যেকে লুকানোর জন্যে তিনি বারবার মিথ্যে বলেই গেছেন। তিনি যদি শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে করতেন তাহলে প্রথম স্ত্রীকে ফোনে মিথ্যে বলতেন না এবং অন্যদের মিথ্যে বলার জন্য প্ররোচনাও দিতেন না।
কিন্তু হাস্যকর বিষয় হচ্ছেঃ মিথ্যা বলা মহা পাপ বলা হলেও তিনটি ক্ষেত্রে মিথ্যে বলা বৈধ করেছে ইসলাম।
এক. যুদ্ধে মিথ্যা বলা বৈধ।
দুই. দু’পক্ষের মাঝে সমঝোতা করার জন্য মিথ্যা বলা বৈধ।
তিন. স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ভালোবাসা ও মিল তৈরির করার জন্যও মিথ্যা বলা বৈধ।
আসমা বিনতে ইয়াজিদ বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তিন জায়গা ব্যতীত মিথ্যা বলা বৈধ নয়। স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করার জন্য মিথ্যা বলা, যুদ্ধে মিথ্যা বলা এবং দু’জনের মাঝে সমঝোতা করার জন্য মিথ্যা বলা বৈধ। (তিরমিজি, হাদিস নং : ১৯৩৯; সহিহ আল-জামে : ৭৭২৩)
অর্থাৎ মামুনুল হক যে প্রথম স্ত্রীকে মিথ্যে বলেছে তা ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ। কিন্তু তিনি যে একাধিকবার মিথ্যে বলে গেছেন তা ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ নয়।
মুমিন বান্দারা সব সময় দাবি করেন, মিথ্যা বলা মুমিনদের কাজ নয়। চারিত্রিক স্খলনের কারণে অনেকে মিথ্যায় জড়িয়ে যায়। মনুষ্যত্ববোধ ও রুচিশীলতা লোপ পেলেও অনেকে মিথ্যার বেসাতি তৈরি করে। কিন্তু সুস্থ ও সঠিক মন–মস্তিষ্ক কোনোক্রমেই মিথ্যা সমর্থন দিতে পারে না।
তাহলে মুমিনেরা কি মামুনুল হকের ক্ষেত্রেও একই দাবি বহাল রাখবে? শতাব্দী ধরে মুসলমানদের এই দাবি অনুযায়ী মামুনুল হক কি তাহলে প্রকৃত মুমিন নন? যারা মামুনুল হকের মিথ্যাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন তারা কি তাহলে সুস্থ ও সঠিক মন মস্তিস্কের মানুষ নন?
হাফস ইবন আসেম থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘ব্যক্তির মিথ্যুক হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনবে তাই বলবে। ’ (মুসলিম : ৫)
ধর্মান্ধ মৌলবাদীরা নিজেরাই নিজেদের পায়ে কুড়াল মারেন আর তাদের উগ্রপন্থার বৈশিষ্ট্যে সাধারণ মানুষকে সত্য বলতে নিরুৎসাহিত করে এবং ভয়ভীতির মাধ্যমে মিথ্যেকে সত্যরূপে দাবি করে থাকেন। পরিশেষে, ২০০৪ সালে ইসলামিক জঙ্গি ফজলুল হক আমিনী বলেছিলেন যে, ‘’দেশে ‘এক কোটি সৈন্য’ বড় হচ্ছে।‘’ গত ১৭ বছরে বাঙলাদেশে ধর্মান্ধ মানুষের সংখ্যা পিঁপড়ার মত বেড়েই চলেছে; কথায় কথায় জাতীয় সংগীত, জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর প্রতি বিদ্বেষ, মন্দির ভাঙচুর, ভাস্কর্য ভাঙা, ভিন্ন মতাদর্শের মানুষ হত্যা, নাস্তিকদের জবাই, সমকামীদের হত্যা, ইহুদী বিদ্বেষ, নারীবিদ্বেষ, রাজাকারপ্রেমী,পাকিস্তানপ্রেম বিশেষভাবে লক্ষণীয়। প্রশ্ন উত্থাপিত হওয়া স্বাভাবিক যে, এমন চিন্তাধারার জনসংখ্যা বৃদ্ধি কি আসলেই ধর্মকে সম্মানিত করে নাকি দেশকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে?
অনন্য আজাদ, লেখক, এক্টিভিস্ট ও মানবাধিকার কর্মী
মতামত ও বিশ্লেষন বিভাগে প্রকাশিত সকল মতামত লেখকের নিজস্ব এবং এটি State Watch এর সম্পাদকীয় নীতির আদর্শগত অবস্থান ধরে নেওয়া ঠিক হবে না।
আপনার মতামত জানানঃ