সম্প্রতি শিল্প ও ক্যাপটিভে প্রতি ইউনিট গ্যাসের দাম যথাক্রমে ৩০ টাকা ও ৩১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৭৫ টাকা ৭২ পয়সা করার প্রস্তাব দিয়েছে পেট্রোবাংলা। এ প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দেশের টেক্সটাইল খাতের উদ্যোক্তারা।
বস্ত্র খাতের যন্ত্রপাতির সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্ট মেশিনারি এক্সিবিশন (ডিটিজি) নিয়ে গতকাল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তাদের এ আশঙ্কার কথা উঠে আসে।
রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল। এ সময় সংগঠনের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে বিটিএমএ সভাপতি বলেন, ‘শিল্প খাতে গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করা হলে টেক্সটাইল খাতে কারখানা বন্ধের ঢেউ উঠতে পারে। এর ফলে টেক্সটাইল খাত কখনই টেকসই হবে না এবং নতুন বিনিয়োগ আসবে না। এমনকি কোনো ব্যাংক নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগও করবে না। তখন একের পর এক কারখানা বন্ধ করতে হবে।’
বিনিয়োগের জন্য নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত দেশে বিনিয়োগে স্বস্তি ফিরবে না। অন্তত নির্বাচনের তারিখ জানা থাকলেও উদ্যোক্তাদের জন্য কিছুটা সুবিধা হতো। নির্বাচনের তারিখ জানা না থাকলে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করবেন না। বরং অনিশ্চয়তায় রাতারাতি শিল্প-কারখানা বন্ধ হবে।’ নির্বাচন নিয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতির প্রয়োজন রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শিল্প-কারখানায় চাঁদাবাজি এবং আওয়ামী লীগের ডাকা হরতাল সম্পর্কে বিটিএমএ সভাপতি বলেন, ‘কর্মসংস্থান না থাকলে চাঁদাবাজি হয়। চাঁদা আদায়কেই ব্যবসা হিসেবে বেছে নেয় কিছু লোক। হরতালও এ কারণেই ডাকা হয়। কর্মসংস্থান থাকলে হরতাল করার লোক থাকে না।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ২০-২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল টেক্সটাইল অ্যান্ড গার্মেন্ট মেশিনারি এক্সিবিশনের (ডিটিজি) ১৯তম সংস্করণ রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) অনুষ্ঠিত হবে। বিটিএমএ এবং ইয়র্কার্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিস কোম্পানি লিমিটেড, হংকংয়ের যৌথ উদ্যোগে ২০০৪ সাল থেকে ডিটিজি আয়োজন করা হচ্ছে।
চার দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীতে ৩৩টি দেশের ১ হাজার ৬০০টি স্টল এবং ১ হাজার ১০০-এরও বেশি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড সম্মিলিতভাবে টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট খাতের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিগুলো প্রদর্শন করবে। এর মধ্যে চীন, জার্মানি, ভারত, ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও তুরস্কের মতো দেশগুলো অংশ নিচ্ছে।
মেলায় টেক্সটাইল যন্ত্রপাতি, ফ্যাব্রিক, ফিলামেন্ট, কেমিক্যালস, ডাইং প্রযুক্তি ও অ্যাকসেসরিজ প্রদর্শিত হবে। এছাড়া থাকবে টেকসই উৎপাদন ও আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনার। থাকবে ডিটিজি ফ্যাশন শো। এ প্রদর্শনী হবে এক ছাদের নিচে দেশী-বিদেশী পেশাদার, উৎপাদক ও সরবরাহকারীদের একত্র হওয়ার সুযোগ।
সংবাদ সম্মেলনে প্রদর্শনীর লক্ষ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সংশ্লিষ্ট শিল্পে আরো বিনিয়োগে আগ্রহী করে তোলা এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় ঘটানো।
আপনার মতামত জানানঃ