ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছেন, যে পরিস্থিতি উদ্ভব হবে ইসরায়েল তাতে প্রতিক্রিয়া জানাবে কিন্তু পুরো মাত্রার যুদ্ধে জড়াতে চায় না। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গ্যালান্ট বলেছেন, নিজেকে রক্ষা করতে যা করা দরকার ইসরায়েল তার সবই করবে।
ইসরায়েলি বাহিনী ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহার মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা আইনে আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য ইসরায়েলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
হিজবুল্লাহ বলেছে, তারা জুলাই মাসের শেষের দিকে কমান্ডার ফুয়াদ শুকরকে হত্যার প্রতিক্রিয়া হিসাবে এই হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলের মেরন ও অধিকৃত গোলান হাইটসের ৪টিসহ ১১টি সামরিক ঘাঁটিতে বিপুল পরিমাণ কাতিউশা রকেট নিক্ষেপ করেছে তারা।
এর আগে আজ সকালের দিকে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েল জানায়, হিজবুল্লাহ হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল—এমন তথ্য পেয়ে তারা আগেভাগে হামলা চালিয়েছে।
লেবাননের রাজধানী বৈরুত থেকে আল-জাজিরার সংবাদদাতা জেইনা খোদর বলেন, ইসরায়েলের হামলার বেশির ভাগের লক্ষ্যবস্তু ছিল সীমান্ত এলাকা। ১২০ কিলোমিটার সীমান্তের সর্বোচ্চ পাঁচ কিলোমিটার ভেতরে হামলা হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার জন্য ইসরায়েলে জরুরি অবস্থার ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম।
রয়টার্স জানায়, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকায় সতর্কতামূলক সাইরেন বেজে ওঠে ও এরপর অনেকগুলো বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। দক্ষিণ লেবানন থেকে ছুটে আসা রকেট ও ড্রোনগুলো ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম গুলি করে ভূপাতিত করে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর হামলার মধ্যে ধ্বংস হওয়া রকেটের ছিটকে পড়া টুকরার আঘাতে অন্তত এক ইসরায়েলি নারী আহত হয়েছেন।
লেবাননের বার্তা সংস্থা এনএনএ জানিয়েছে, লেবাননের কাসিমিয়া শহরে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন আর পরে ইসরায়েলের বিমান হামলায় খিয়াম শহরে একজন নিহত হয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে লোকজনের আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে বোমা হামলার সময়কার আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছেন, যে পরিস্থিতি উদ্ভব হবে ইসরায়েল তাতে প্রতিক্রিয়া জানাবে কিন্তু পুরো মাত্রার যুদ্ধে জড়াতে চায় না। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইওভ গ্যালান্ট বলেছেন, নিজেকে রক্ষা করতে যা করা দরকার ইসরায়েল তার সবই করবে।
গত অক্টোবরে ইসরায়েল গাজায় অভিযান শুরুর পর থেকেই সীমান্তে একে অপরের সঙ্গে গুলি বিনিময় করে যাচ্ছে ইসরায়েলি সেনা ও হিজবুল্লাহ সদস্যরা। সম্প্রতি বৈরুতে হিজবুল্লাহ কমান্ডার নিহতের ঘটনায় তা তীব্র হয়েছে। এর জেরে সীমান্ত এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বেসামরিক নাগরিকদের।
আপনার মতামত জানানঃ