হলিউডের আলোচিত সিনেমা দ্য প্ল্যানেট অব এপস অনেকেই দেখেছেন। সিনেমায় দেখা যায়, শিম্পাঞ্জিসহ বিভিন্ন ধরনের বানর প্রজাতির প্রাণী ভবিষ্যতে পৃথিবী দখল করে নিয়েছে। শুধু তা–ই নয়, মানুষের মতো কাজ করার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে যোগাযোগও করছে শিম্পাঞ্জিগুলো।
সিনেমা বা কল্পবিজ্ঞানের মতো শিম্পাঞ্জি মানুষের আদলে কথা বলতে পারে কি না, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ডের এক দল বিজ্ঞানী জানিয়েছেন শিম্পাঞ্জি মানুষের মতো কথা বলতে পারে। প্রাণীরা কথা বলার ক্ষমতা অর্জন বা কথা শিখতে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা। শিম্পাঞ্জিদের কথা বলার সক্ষমতা নিয়ে পরিচালিত এই গবেষণার তথ্য সায়েন্টিফিক রিপোর্টস নামের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
কয়েক দশক ধরেই বিজ্ঞানীরা মানুষ ছাড়া কোন কোন প্রাণী কথা বলতে পারে, তা জানার চেষ্টা করছেন। মানুষই শুধু কথা বলতে পারে কেন, তা নিয়েও অনুসন্ধান করছেন তাঁরা। গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু বনমানুষ ভোকাল শব্দের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারে। বানর প্রজাতির এসব প্রাণী কোনো ভাষা ব্যবহার করে কি না, তা নিয়েও বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
অন্য কোনো প্রাণী মানুষের মতো কথা বলতে পারে কি না, তা নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। প্রাণীর গলা বা কণ্ঠনালির শারীরিক বিন্যাসের কারণে কথা বলার ক্ষমতা তৈরি হয় বলে একদল বিজ্ঞানী মনে করেন। অন্য আরেক দল বিজ্ঞানী মনে করেন, মানুষের সঙ্গে অন্য প্রাণীদের মস্তিষ্কের পার্থক্যের কারণে কথা বলার ক্ষমতায় ভিন্নতা দেখা যায়। বিভিন্ন শিম্পাঞ্জির ভিডিও বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, শিম্পাঞ্জিদের মানুষের মতো কথা বলার ক্ষমতা রয়েছে। যদিও কথা বলার এ ক্ষমতা খুবই প্রাথমিক পর্যায়ের।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, জনি নামের একটি শিশু শিম্পাঞ্জি মানুষের সঙ্গে একই বাড়িতে দীর্ঘদিন থাকার কারণে মামা (মা), পাপা (বাবা) বা কাপের মতো সহজ শব্দ বলতে পারত। শিম্পাঞ্জিটি ২০০৭ সালে মারা গেছে। অন্যদিকে রেনেটা নামের অপর একটি শিম্পাঞ্জিও মানুষের মতো শব্দ করতে পারত। ১৯৬২ সালে মুক্তি পাওয়া একটি সিনেমায় অভিনয়ও করেছে শিম্পাঞ্জিটি। শিম্পাঞ্জিদের উচ্চারণ মানুষের কথা বলার থেকে কিছুটা ভিন্ন হলেও নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে তারা মানুষের মতো কিছু কথা বলতে পারে।
আপনার মতামত জানানঃ