কিন্তু এই বিষয়ে তেমন কোনো প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। এর নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসঙ্ঘের বিশেষ দুই রিপোর্টার। রোববার (২৪ মার্চ) কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রবিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসঙ্ঘের বিশেষ দুই রিপোর্টার বলেছেন, গাজায় ফিলিস্তিনি নারীরা ভয়াবহ যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছে। অথচ এই বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে খুবই অবমূল্যায়িত হয়েছে।
নারী ও মেয়েদের প্রতি সহিংসতা সংক্রান্ত জাতিসঙ্ঘের বিশেষ রিপোর্টার রিম আলসালেম তার এক্স বার্তায় লিখেছেন, এটা খুবই জঘন্য একটি ব্যাপার যে ইসরাইলি বাহিনীর ধর্ষণের রিপোর্ট কোনো পরিণতি ছাড়াই বেরিয়ে আসছে।’
তিনি আরো বলেন, ধর্ষণ এবং অন্যান্য ধরণের যৌন সহিংসতা যুদ্ধাপরাধ, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বা গণহত্যার সাথে সাংবিধানিক আইন গঠন করতে পারে! এটা থামাতে হবে।’
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে জাতিসঙ্ঘের বিশেষ রিপোর্টার ফ্রান্সেসকা আলবানিজ বলেছেন, ‘ইসরাইলি বাহিনী ফিলিস্তিনি নারীদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন চালিয়েছে। এ বিষয়ে আমি কত নামকরা সাংবাদিককে সাক্ষাৎকার দিয়েছি। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোনো নিবন্ধই প্রকাশ করেননি।’
ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের গুলি
গাজায় ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে কমপক্ষে ১৯ জন নিহত হয়েছে। গাজা সিটির দক্ষিণাঞ্চলে বেসামরিক নাগরিকরা ত্রাণ সহায়তা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ঠিক সে সময়ই তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং এর মিডিয়া অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এক বিবৃতিতে গাজার মিডিয়া অফিসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি দখলদাররা গণহত্যা চালিয়েছে। আল কুয়েত গোলচত্ত্বরে ত্রাণ সহায়তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক। সে সময় তাদের ওপর গুলি ছোড়া হয়। এতে ১৯ জন নিহত এবং আরও ২৩ জন আহত হয়।
ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলি সৈন্যরা ক্ষুধার্ত লোকজনের ওপর গুলি চালিয়েছিল। এসব লোকজন ব্যাগ হাতে খাবার এবং ত্রাণ নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। তারা ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য বিপজ্জনক কেউ ছিল না।
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সম্মত ইউরোপের ৪ দেশ
ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সম্মত হয়েছে স্পেনসহ ইউরোপের চারটি দেশ। অন্য তিনটি দেশ হলো আয়ারল্যান্ড, মাল্টা ও স্লোভেনিয়া। ইতিমধ্যে তারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ নিয়েছে।
গত শুক্রবার ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের এক বৈঠকের পর স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এ কথা বলেন।
স্পেনের পক্ষ থেকে সানচেজ আশা প্রকাশ করে বলেন, গত বছর শুরু হওয়া তাঁর সরকারের চার বছরের মেয়াদকালের মধ্যে এ স্বীকৃতি মিলবে।
সানচেজ আরও বলেন, কাউন্সিলের সমাবেশের ফাঁকে শুক্রবার সকালে আয়ারল্যান্ড, মাল্টা ও স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের মধ্য দিয়ে তাঁরা একটি চুক্তিতে পৌঁছান।
বৈঠকের পর আয়ারল্যান্ড এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, ‘আমরা সম্মত হয়েছি, দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনের একমাত্র উপায় হলো একটি দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়ন করা। তাহলেই কেবল ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিরা শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে পাশাপাশি বসবাস করতে পারবে।’
গত নভেম্বরে আরব রাষ্ট্রগুলো ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন স্পেনে বৈঠক করেছিল। সেখানে তারা ফিলিস্তিন–ইসরালয়ের সংঘাত বন্ধে দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানে সম্মত হয়।
১৯৮৮ সাল থেকে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে ১৩৯টি ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে।
আপনার মতামত জানানঃ