হবিগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষে বিএনপি’র শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশের গুলিতে দুইজন সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোতাহার হোসেন, যুবদল নেতা শেখ রাসেল, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন মাই টিভির জেলা প্রতিনিধি নিরঞ্জন গোস্বামী ও দেশ টিভির জেলা প্রতিনিধি আমীর হামজা।
দুই সাংবাদিকের চোখে, মুখে ও বুকে গুলি লেগেছে। হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাদের সিলেট অথবা ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার পরামর্শ দেন।
গতকাল দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ও সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার শিফার সভাপতিত্বে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে বিএনপি।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- সিলেট বিভাগীয় বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নির্বাহী সদস্য ও সাবেক এমপি আলহাজ শেখ সুজাত মিয়া, জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন সেলিম প্রমুখ। এ ছাড়াও জেলা যুবদল, ছাত্রদলসহ সহযোগী সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন কর্মসূচি পালনে দুপুর ১২টার দিকে জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরের শায়েস্তানগর মোড়ে জড়ো হন। কর্মসূচির শেষ পর্যায়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিতে অগ্রসর হয় পুলিশ। এ সময় পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রায় ২ ঘণ্টা মুখোমুখী অবস্থান নেয়।
একপর্যায়ে বিএনপি’র নেতাকর্মীরা উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের ঘিরে ফেলে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা নিজেদের রক্ষা করতে দৌড়ে শায়েস্তানগর এলাকায় অবস্থিত একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়েন। নেতাকর্মীরা সেখানে তাদের প্রায় ৩০ মিনিট অবরুদ্ধ করে রাখেন। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ সদর থানা ও পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে অবরুদ্ধ পুলিশ দলকে উদ্ধার করতে শটগানের গুলি ছুড়তে থাকে।
এ সময় শতাধিক গুলি ছোড়া হয়। নিক্ষেপ করা হয় টিয়ারশেল। এতে পুরো শহরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শহরের প্রধান সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেন। পরে ঘটনাস্থলে বিজিবি ও র্যাব সদস্যরাও উপস্থিত হন।
এ ঘটনায় ১০-১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজয় চন্দ্র দেব। তিনি বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ খলিলুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশের ওপর অতর্কিত ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আমরা এখনো ঘটনাস্থলে রয়েছি। আমাদের বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন সেলিম বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির শেষ পর্যায়ে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়ে সাউন্ড গ্রেনেড ও গুলি নিক্ষেপ শুরু করে। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ দলের প্রায় শতাধিক নেতকর্মী আহত হন।
আপনার মতামত জানানঃ