তিন বছরের কূটনীতিক বিরোধের অবসানের লক্ষ্যে সোমবার এক যুগান্তকারী চুক্তির মাধ্যমে কাতারের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে সৌদি আরব। একই সাথে কাতারের সাথে দেশটির আকাশ, স্থল ও সমুদ্রসীমা পুনরায় খুলে দিয়েছে।
সম্পূর্ণ চুক্তিটি আজ মঙ্গলবার উত্তর-পশ্চিম সৌদি শহর আল-উলায় উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলের (জিসিসি) বার্ষিক সম্মেলনে স্বাক্ষরিত হবে। সম্মেলনে কাতারের আমীর শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানি সহ উপসাগরীয় অঞ্চলের আরব নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
সাম্প্রতিক এই মধ্যস্থতা প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিয়েছেন কুয়েতের আমীর শেখ নাওয়াফ আল-সাবাহ। সোমবার কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আহমদ আল সাবাহ জানান, ‘শেখ নাওয়াফের প্রস্তাবের ভিত্তিতে সৌদি আরব ও কাতারের মধ্যে আকাশ, স্থল ও সমুদ্রসীমা খুলে দেয়ার বিষয়ে ঐক্যমত্য হয়েছে। এটি আজ সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হবে।’
যুগান্তকারী এ চুক্তি স্বাক্ষরের সাক্ষী হতে আজ সৌদি আরব যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা ও হোয়াইট হাউসের বিশেষ উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার। তার সাথে থাকবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত অ্যাভি বারকোভিটস ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ উপদেষ্টা ব্রায়ান হুক। জ্যারেড কুশনার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে বিরোধ নিষ্পত্তিতে ভূমিকা পালন করেছেন।
সন্ত্রাসবাদে সহযোগিতা ও ইরানের সাথে ঘনিষ্ট মিত্রতার অভিযোগ এনে ২০১৭ সালের জুনে সৌদি আরব, মিশর, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত জোট কাতারের উপর কূটনীতিক, বাণিজ্যিক ও ভ্রমণের অবরোধ আরোপ করেছিল।
তবে কাতার বরাবরের মতোই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল। কাতারের মতে, সম্পর্ক বিচ্ছেদের কোনো ‘বৈধ কারণ’ ছিল না।
গত ডিসেম্বরে বিরোধের সমাধান হতে যাচ্ছে মর্মে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভাদ জারিফ এক টুইটার পোস্টে আশা প্রকাশ করেন উপসাগরীয় এই পুনর্মিলন ‘আমাদের অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও সকল মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।’
মঙ্গলবার স্বাক্ষরিত চুক্তিটি হবে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশিত চুক্তিগুলোর একটি। ইরানের বিরুদ্ধে আঞ্চলিক যুক্তফ্রন্ট গঠনের জন্য মধ্যপ্রাচ্যে তাদের মিত্রদের ঐক্য চায় ওয়াশিংটন। ইসরাইলের সাথে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টাও যুক্তরাষ্ট্রের এ উদ্দেশ্যের অংশ। সূত্র : আলজাজিরা ও রয়টার্স
আপনার মতামত জানানঃ