আগামী বছর দেশের অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ৩০ ডিসেম্বর ২০২০, গতকাল বুধবার ঢাকায় পৃথক দুটি অনুষ্ঠানে রাখা বক্তব্যে তারা এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উভয় মন্ত্রীই সরকারের গৃহীত পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশের পাশাপাশি এসব পদক্ষেপের ফলে আগামী বছর সুদিনের জোর সম্ভাবনা দেখছেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে চলতি বছর খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল, তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা যেহেতু ভালো আছি, তাই আশাকরি আমাদের আগামী বছর ভালো যাবে।’ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত ৩৭তম সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী নিজেই।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার প্রত্যাশার বিষয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, আমি সবসময় ভালোটাই প্রত্যাশা করি। সবাই ভালোভাবেই জানেন, ২০২০ সালে সারাবিশ্ব বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ প্রকিউরমেন্ট করেছে। সারাবিশ্বের অর্থনীতি গত বছরের তুলনায় চার ভাগ কমে গেছে।
আরেক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের বাণিজ্যযুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ বিশ্ববাণিজ্যে প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। বাংলাদেশ সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে বিশ্বের মন্দা অর্থনীতির মাঝেও আমরা ভালোভাবেই টিকে আছি। বাংলাদেশ রফতানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আশা করা যায় কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাবে।
দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্য সুবিধা পেতেই সরকার পিটিএ বা এফটিএ করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বৈদেশিক বাণিজ্যে শুল্ক আয় হ্রাসের সম্ভাবনা থাকলেও দীর্ঘ মেয়াদে আমরা সুফল পাব। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাণিজ্যে এগিয়ে যেতে হলে দক্ষতার সঙ্গে বাণিজ্য করতে হবে। বাংলাদেশ আজ বিশ্ববাণিজ্যে দক্ষতা অর্জন করেছে। বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেই সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বাণিজ্যে কূটনীতিকদের ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী এখন বাণিজ্য কূটনীতি চলছে, আমাদেরও এই সুবিধা নিতে হবে। কূটনীতিকদের দেশের রফতানি বাণিজ্য বাড়াতে ভূমিকা রাখতে হবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশও কাজটি শুরু করেছে। এতে করে বাংলাদেশ দ্রুত রফতানি বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে পারবে।
বিশ্ব বাণিজ্যে এশিয়ার গুরুত্ব জানিয়ে টিপু মুনশি বলেন, এশিয়া এখন বাণিজ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভোক্তা বিবেচনায় এশিয়াকে গুরুত্ব দেওয়ার সময় এসেছে। এশিয়ার মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষ এখন মানসম্পন্ন পণ্য কিনতে চায়। ফলে এশিয়া বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাজার হতে পারে। এশিয়ার বাজার ধরে রাখার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এসেছে। রপ্তানিকারকরাও এখন এশিয়ার বাজারগুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছে। ভবিষ্যতে এশিয়াই হবে বড় বাজার।
রিসার্চ পলিসি ইনট্রিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) এবং ফ্রাইডরিচ এবার্ট স্টুফ্টুং-এর সহযোগিতায় ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘ভূ-অর্থনীতি ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসডাব্লিউ/ডিআর/এসএন/নাসি/১৩০০
আপনার মতামত জানানঃ