পৃথিবীতে মহাদেশ সাতটি আর মহাসাগর পাঁচটি; ছোটবেলা থেকেই আমরা বিষয়টি জেনে আসছি। কিন্তু পাঁচটি নয়, বিশ্বে মহাসাগর রয়েছে ছয়টি। সম্প্রতি এই তথ্য সামনে এনেছেন সমুদ্র বিজ্ঞানীরা। ছয় নম্বর মহাসাগরের সন্ধান দিয়ে অজানাকে জানার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। কিন্তু কী করে মিলল এই ষষ্ঠ মহাসাগরের সন্ধান, তাও কম বিস্ময়ের নয়!
জার্মানি, ইতালি ও আমেরিকার কয়েকজন বিজ্ঞানীর ষষ্ঠ মহাসাগর নিয়ে গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি ছাপা হয়েছে নেচার জার্নালে। সেখানেই দাবি করা হয়েছে, এই পৃথিবীতে এত বছর ধরে রয়েছে ছয় নম্বর মহাসাগারটি। সেটি মানুষের নজরেই আসেনি।
বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক দল এখন পৃথিবীর উপরের এবং নীচের আবরণের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে পানির প্রমাণ পেয়েছে। একটি বিরল হীরার বিশ্লেষণের সময় প্রমাণ পাওয়া গেছে যা পৃথিবীর পৃষ্ঠের ৬৬০ কিলোমিটার নীচে গঠিত হয়েছিল যে তত্ত্বটি নিশ্চিত করে যে সমুদ্রের জল স্ল্যাবগুলোকে সাবডাক্ট করে এবং এইভাবে ট্রানজিশন জোনে প্রবেশ করে।
নতুন গবেষণাগুলো জানাচ্ছে যে আরও একটি মহাসাগর রয়েছে, তবে তা ভূপৃষ্ঠে নেই, রয়েছে অভ্যন্তরে। পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ গঠন এবং গতিশীলতা ম্যান্টেল ট্রানজিশন জোন এবং লোয়ার ম্যান্টেলের মধ্যে ৬৬০ কিলোমিটার সীমানার মধ্যে আকৃতি নিয়েছে। এই সীমানাটি ৪১০ থেকে ৬৬০ কিলোমিটার গভীরতায় অবস্থিত, যেখানে ২৩ হাজার বার পর্যন্ত প্রচণ্ড চাপ স্ফটিক গঠনকে পরিবর্তন করে।
অলিভাইন পৃথিবীর উপরের আবরণের প্রায় ৭০ শতাংশ গঠন করে এবং একে পেরিডটও বলা হয়। গবেষকরা বলেছেন যে ট্রানজিশন জোনের উপরের সীমানায়, প্রায় ৪১০ কিলোমিটার গভীরতায়, এটি ঘন ওয়েডসলেইটে রূপান্তরিত হয়; ৫২০ কিলোমিটারে এটি তারপর আরও ঘন রিংউডাইটে রূপান্তরিত হয়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বৎসোয়ানায় একটি বিরল গোত্রের হিরের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এই হিরে নিয়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে অদ্ভুত তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা আবিষ্কার করেছেন, এই হিরে প্রায় ৬১০ কিলোমিটার গভীর থেকে উঠে এসেছে। ১.৫ সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের এই হিরে সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের মত, মারাত্মক চাপের কারণে এই হিরে সৃষ্টি। এবং এই হিরের মধ্যে বেশির ভাগটাই জল। আর সেখান থেকে সন্ধান চালাতে চালাতে এই মহাসাগরের অস্তিত্বের আন্দাজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
সমুদ্র বিজ্ঞানীরা জানান, এই স্তরে পাথরের মাঝে আটকে রয়েছে পানি। কিন্তু এতটাই পানি রয়েছে যে তা কোনও মহাসাগরের থেকে কম নয়। সেই কারণেই এটিকে ষষ্ঠ মহাসাগর বলে চিহ্নিত করা উচিত বলে গবেষণা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
আপনার মতামত জানানঃ