মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাতের আকাশে হঠাৎ একঝাঁক আলো। প্রায়ই দেখা মিলছে এমন আলোর। অনেকেই দাবি করছেন, এগুলো আনআইডেন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্ট (ইউএফও) বা অজানা উড়ন্ত বস্তু। যা ভিনগ্রহীদের যান বলে মনে করা হচ্ছে। ভিনগ্রহীরা ঘাঁটি গড়ার জন্য বেছে নিয়েছে আমেরিকাকে। তাই প্রায়ই মার্কিন আকাশে দেখা মিলছে ভিনগ্রহীদের যান (ইউএফও)।
সম্প্রতি অদ্ভুত আকৃতির মাথা, নগ্ন শরীর—এমনই এক অদ্ভুত ছায়ামূর্তি ধরা পড়ল এক ব্যক্তির ক্যামেরায়। ছবিটি দেখে চমকে উঠেছিলেন তিনি। তাহলে কি সত্যিই ভিনগ্রহের প্রাণীরা আসে পৃথিবীতে? বিষয়টি নিয়ে রয়েছে নানা মত, তর্ক, বিতর্ক, বিশ্বাস-অবিশ্বাস। কিন্তু আমেরিকার মন্টানার বাসিন্দা ডোনাল্ড ব্রুমলের দাবি, তার ক্যামেরায় ধরা পড়া এই ছায়ামূর্তিটি ভিনগ্রহেরই প্রাণী!
মন্টানার ডিয়ার লজ শহরের ক্যামেরা লাগিয়েছিলেন ডোনাল্ড। এই এলাকাকে ‘ইউএফও ইটস্পট’ বলে দাবি করেন স্থানীয়রা। তাদের দাবি, এখানে মাঝেমধ্যেই ভিন্গ্রহীদের যান দেখা যায়। এ ছাড়া ওই জায়গা নানা রকম ‘ভৌতিক’ কাণ্ডকারখানার জন্য বেশ কুখ্যাত।
ডোনাল্ডের দাবি, তার মূল উদ্দেশ্য ছিল আদৌ ভিন্গ্রহের প্রাণীরা ওই এলাকায় যাতায়াত করে কি না তা দেখা। এই কাজের জন্য ডিয়ার লজের রেডগেটে ক্যামেরা বসান ডোনাল্ড। দ্য সান অনলাইন-কে ডোনাল্ড জানান, প্রাথমিকভাবে তিনি ভেবেছিলেন ওটা কোনও মানুষের প্রতিকৃতি। কিন্তু ছবিটি ভাল করে খতিয়ে দেখার পর চমকে উঠেছিলেন তিনি। তার দাবি, ছবির প্রাণীটির মাথা বড়, অনেকটা শঙ্কু আকৃতির। চেহারার তুলনায় অনেকটাই বড়। গায়ে কোনও পোশাক ছিল না। হুবহু ভিন্গ্রহের প্রাণীর মতো দেখতে সেটি।
এবিষয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করেছেন চিত্র পরিচালক প্যাট্রিক কাটলার দ্য সান অনলাইনকে একটি সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় জানিয়েছেন, এবিষয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করছেন তিনি। তার কথায়, নগ্ন ভিনগ্রহী বলে যা দাবি করা হচ্ছে তা আসলে বিভিন্ন অলৌকিক ঘটনার একটি অংশমাত্র। তিনি বলেন, এবিষয়ে সাধারণ মানুষ এখনও অনেক কিছু বুঝতে পারবেন’।
কয়েকদিন আগে একটি খবর প্রকাশ হয়েছিল যা নিয়ে শুরু হয় তোলপাড়। যাজক নিয়োগ করেছিল নাসা। এলিয়েন বা ভিনগ্রহীদের দেখলে সাধারণ মানুষ কীরূপ আচরণ করবে তা বোঝার জন্যই যাজক নিয়োগ করা হয়েছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক মিম ছড়িয়েছিল।
অদ্ভুত আকৃতির মাথা, নগ্ন শরীর—এমনই এক অদ্ভুত ছায়ামূর্তি ধরা পড়ল এক ব্যক্তির ক্যামেরায়। ছবিটি দেখে চমকে উঠেছিলেন তিনি। তাহলে কি সত্যিই ভিনগ্রহের প্রাণীরা আসে পৃথিবীতে?
বিশ্বজুড়ে কয়েক দশক ধরে বহুল আলোচিত বিষয় এলিয়েনের অস্তিত্ব। এ নিয়ে জল্পনা যত বাড়ছে, ততই জটিল হচ্ছে এ রহস্য।
আধুনিক বিজ্ঞানের যুগেও বিষয়টির মীমাংসা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকায় এ নিয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্র তত্ত্বও তৈরি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জ্যেষ্ঠ একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমে জানান, রহস্যময় আকাশযানের ঘোরাঘুরি মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের কোনো গোপন প্রযুক্তির পরীক্ষা নয়, এটা নিশ্চিত।
সরকারের জ্যেষ্ঠ ওই কর্মকর্তা নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, এসব আকাশযান ভিনগ্রহ থেকে এলিয়েনরা পাঠিয়েছে, গোয়েন্দা তদন্তে এমন কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য–প্রমাণ মেলেনি। যদিও এমন প্রমাণ খুঁজে পাওয়াও কঠিন।
সরকারের অন্য একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, রহস্যময় আকাশযানের উপস্থিতি নিয়ে মার্কিন সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দাদের মধ্যে দিন দিন উদ্বেগ বাড়ছে। তাদের অনেকেই মনে করছেন, এর মধ্য দিয়ে চীন কিংবা রাশিয়া গোপনে হাইপারসনিক প্রযুক্তির পরীক্ষা চালাচ্ছে।
২০২০ সালে পেন্টাগনের পক্ষ থেকে কয়েকটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছিল। এসব ভিডিও মার্কিন নৌবাহিনীর পাইলটদের ধারণ করা। ভিডিওতে দেখা যায়, রহস্যময় আকাশযান যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে সামরিক আকাশযানকে পাল্লা দিচ্ছে। তবে এসব ভিডিওর রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব হয়নি। এমনকি ওই সময় সরকার কিংবা সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকেও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। পরে এসব ভিডিও নিয়ে তদন্তে নামেন মার্কিন গোয়েন্দারা।
মার্কিন বিজ্ঞানী এবং সেনাবাহিনীকে এ বস্তুগুলোর যে বৈশিষ্ট্য অবাক করেছে তা হলো এর নিপুণতা। এর অভাবনীয় ক্ষমতা, অস্বাভাবিক দ্রুততা, দিক পরিবর্তন করার ক্ষমতা এবং দ্রুত ডুবে যাওয়ার ক্ষমতাই তাদের ভাবাচ্ছে।
জানা গেছে, গোয়েন্দা সংস্থা ও সামরিক কর্মকর্তারা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন যে ঘটনাগুলো আসলে চীন বা রাশিয়ার কোনো হাইপারসোনিক প্রযুক্তি পরীক্ষা হতে পারে।
গত ৫০ বছর ধরে ইউএফও নিয়ে গবেষণা করছেন হান্স-ওয়ের্নার। তিনি মনে করেন, ইউএফও বলে যা দাবি করা হয়, তার ৯৫ শতাংশ ঘটনার স্বাভাবিক ব্যাখ্যা আছে। পাঁচ শতাংশ ঘটনার কোনো ব্যাখ্যা তাদের কাছে নেই। অনেক সময় হিলিয়াম বেলুন বা কোনো ইনসেক্টকে ছবিতে ফ্লাইং সসারের মতো দেখতে লাগে। উপরের ছবিটি স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ রকেটের, যা দেখে ইউএফও বলে ভুল হতে পারে।
দুই বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর টাস্ক ফোর্স ইউএফও নিয়ে তদন্ত শুরু করে। ইউএফও দেশটির জন্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি কিনা সেটা বুঝতেই ওই টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউএফও রিপোর্টে স্বাক্ষর করেন। প্রতিবেদনটি আগামী ২৫ জুনের মধ্যে মার্কিন কংগ্রেসের কাছে প্রকাশিত হতে পারে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/২০২৫
আপনার মতামত জানানঃ