ওয়ার্নার ফন ব্রাউন ১৯৩০ সালে লিখেছেন: আমাদের মহাকাশের ১০০ বিলিয়ন নক্ষত্রের একটি হচ্ছে আমাদের সূর্য। আমাদের মহাকাশ হচ্ছে মহাবিশ্বের অসংখ্য মহাকাশের একটি। কাজেই এই অতিকায় পরিসরে একমাত্র আমরাই জীবন্ত প্রাণী—এটা ভাবা মহামূর্খতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
প্রাচীনতম সাহিত্যকর্ম ‘এপিক অব গিলগামেশ’ মহাজগতিক বিষয় স্পষ্ট করেছে; অনেকেই মনে করেন, বিজ্ঞান-জ্ঞানের অপর্যাপ্ততার কারণে এই রচনা বিভ্রান্তিকর। অন্যরা মনে করেন, কল্পবিজ্ঞানের মাধ্যমে এই গ্রন্থ থেকে বিজ্ঞান বিপ্লবের সূচনা।
স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পিটার স্টারোকের আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনোমিকাল সোসাইটির ১৩৫৬ সদস্য বিজ্ঞানীর উপর পরিচালিত সমীক্ষায় ৬২ জন জানিয়েছেন, তাদের মহাকাশ সফরে তারা অদ্ভুত কিছু দেখেছেন এবং অনুভব করেছেন। কৌতূহলের বিষয় হচ্ছে, আনবিক যুগে অ্যাটমিক পাওয়ার প্ল্যান্টের কাছাকাছি ইউএফও দৃশ্যমান হয়েছে, ১৬০ জনেরও বেশি প্রত্যক্ষদর্শী রিপোর্ট করেছেন।
জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও মহাকাশচারী ফ্র্যাঙ্ক ড্রেক ১৯৬০ সালে প্রথম এলিয়েনের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের বৈজ্ঞানিক উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় ন্যাশনাল রেডিও অ্যাস্ট্রোনমি অবজার্ভেটরিতে ৮০ ফুট উঁচু ডিশ স্থাপন করেন।
তিনি এলিয়েনদের সাথে কথোপকথন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কোনো এলিয়েনের সাড়া না পাওয়ায় প্রকল্পটি ব্যর্থ হয়। তবে ফ্রাঙ্ক ড্রেক এলিয়েন সম্ভাবনা নিয়ে যে তাত্ত্বিক জ্ঞান সম্প্রসারিত করে, তা একালে ড্রেক থিওরির আওতায় বিশ্লেষণ করা হয়।
মহাকাশবিজ্ঞানীরা সৌরজগতে পরিবেশ বিশ্লেষণ করে চারটি সম্ভাব্য এলিয়েন স্পষ্ট নির্ধারণ করেছেন: মঙ্গলগ্রহের ভূগর্ভ, শনির উপগ্রহ এসসেলাডাস এবং জুপিটারের উপগ্রহ ইউরোপা ও ক্যালিস্তো। জুপিটারের বরফাচ্ছাদিত অংশের তলদেশে সমুদ্র থাকতে পারে।
গ্রেট ফিল্টার হচ্ছে একটি তাত্ত্বিক শক্তি ও বাধা, যা পৃথিবীর মানুষকে এলিয়েনের সাথে যোগাযোগ করা থেকে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বাধা জাগতিক সভ্যতা ও এলিয়েনের মধ্যে দেয়াল সৃষ্টি করে রেখেছে।
বেলগ্রেডের অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজার্ভেটরি এবং অক্সফোর্ডের ফিউচার অব হিউম্যানিটি ইনস্টিটিউট একটি ‘এস্টিভেশন’ (ধবংঃরাধঃরড়হ) হাইপপোথিসিস প্রচার করেছে। তাতে এলিয়েনের উপস্থিতি স্বীকার করে বলা হয়েছে, বর্তমানে তারা গভীর হাইবারনেশনে রয়েছে, যেমন করে ভালুক ও ব্যাঙ দীর্ঘ শীতনিদ্রায় যায়।
কিন্তু ‘গাইয়ান বটলনেক’ তত্ত্ব অনুযায়ী জীবনের উদ্ভব ও বিকাশের জন্য বিশেষ ধরনের পরিবেশগত আস্থা বিরাজ করা প্রয়োজন। পৃথিবী ছাড়া অন্য কোথাও তা না থাকায় এলিয়েন থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই।
এদিকে সৌরজগতের ভেতরেই ২০১৫ সালে প্লুটো গ্রহের বরফাচ্ছাদিত পৃষ্টদেশ নিয়ে গবেষণায় বিজ্ঞানীরা লুক্কায়িত সাগর, পর্যাপ্ত মিথেন ও নাইট্রোজেন গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন। এ অবস্থায় জীবনের অস্তিত্ব থাকা অবাক হবার ব্যাপার নয়।
ভিণগ্রহের প্রাণী নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। সায়েন্স ফিকশন সিনেমা ও গল্প থেকে শুরু করে রহস্যময় বস্তু পর্যন্ত—সবকিছুতেই এই ভিণগ্রহের প্রাণী বা এলিয়েন নিয়ে ভাবনা।
এবার কলম্বিয়ায় এমন একটি মমি পাওয়া গেল, তা আদতে মানুষের কিনা বোঝা যাচ্ছে না। অনেকেই বলছেন এটি এলিয়েন হতে পারে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম লেডবাইবেল বলছে, কলম্বিয়ার মমিটি আসলে একটি ভ্রূণের। ৮০০ বছর আগে এটি মমি করা হয় বলে জানান স্প্যানিশ এলিয়েন গবেষক জোসেফ গুইজারো। এটি মানুষ কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মানুষ হয়ে থাকলে ভ্রূণ থাকাবস্থায় এর মৃত্যু হয়েছিল।
গবেষকেরা বলছেন, মানুষের মতো দেখতে হলেও এই মমির মধ্যে মানুষের সব বৈশিষ্ট্য নেই। এর মাথার খুলি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি প্রশস্ত। মমির চোখও বেশ তীর্যক। এ ছাড়া এর দেহে ১০টি পাঁজর রয়েছে। সাধারণত মানুষের দেহে ১২টি পাঁজরের হাড় থাকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক টুইটে এলিয়েন গবেষক জোসেফ বলেন, ‘আমাকে একটি সূত্র থেকে জানানো হয়েছে, এই মমি কলম্বিয়ায় পাওয়া যায়। তবে এ নিয়ে এখনো পর্যাপ্ত তথ্য আমার হাতে এসে পৌঁছেনি। আমার মনে হচ্ছে, মেক্সিকোর এলিয়েনের মতো কলম্বিয়ার এই মমি নিয়েও রহস্য দেখা দেবে।’
এলিয়েন গবেষক জোসেফ গুইজারো বলছেন, এটি মানুষের বাচ্চাই হবে বলে মনে হচ্ছে। এমন মানুষ যদিও খুব একটা দেখা যেতো না। গবেষণা বলছে, মানুষের এই সম্প্রদায় গুহায় বাস করতো। রাতে ঘর থেকে বের হতো।
আপনার মতামত জানানঃ