প্রায় এক দশক ধরেই অর্থনৈতিক দুরাবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটছে দেশটির সরকার। তবে এবার দেশটির বিকল্প আয়ের উৎস খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল সেদেশের সরকার। এরইমধ্যে ইসলামাবাদে থাকা বাসভবনটি ভাড়া দেয়ার জন্য তোলা হয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালেও একই ভাবে ইমরান খানের বাসভবন বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্যে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। এদিকে করোনা আবহে ২০২১ সালে দাঁড়িয়ে অর্থ সংকটে ভুগছে পাকিস্তান। এই আবহে মঙ্গলবার পাক সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন শিক্ষা, ফ্যাশন, বিয়েসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হবে। তবে অনুষ্ঠানের সময় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের গরিমা যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে নজর রাখতে বলা হবে।
২০১৯ সালেই দেশটির সরকার এই পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। তখন পরিকল্পনা ছিল এখানে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা হবে। তখনই প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ওই বাড়ি ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে এখন কেন্দ্রীয় সরকার বলছে ওই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি নয় বরঞ্চ ওই ভবন ভাড়া দিয়ে অতিরিক্ত আয়ের ব্যবস্থা করা হবে।
এনডিটিভির খবরে জানানো হয়েছে, ওই ভবন এখন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক, ফ্যাশন ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিভিন্ন ইভেন্টের জন্য ভাড়া দেয়া হবে। এ নিয়ে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তাদের ওপরে। এ নিয়ে আরও আলোচনায় বসতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা। সেখানে উচ্চ পর্যায়ের আন্তর্জাতিক নানা সম্মেলন আয়োজনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানা গেছে।
এর আগে ২০১৯ সালে ব্রিগেডিয়ার ওয়াসিম ইফতিখার চিমার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ভাড়া দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে সরকারের খরচ কমাতে পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশের রাজ্যপালদেরর জন্যও বেশ কয়েকটি ঘোষণা করা হয়েছে। খরচ কমানোর জন্য তারা রাজ্যপালের বাসভবনে আর থাকবেন না।
জানা গিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন রক্ষণাবেক্ষণে খরচ হয় ৪৭০ মিলিয়ন। এই বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ কমাতে ইমরান খানের বাসভবন খালি করা হয়েছে। খরচ কমানোর জন্য চলতি বছরের শুরুতে ৬১টি লাক্সারি গাড়িও নিলাম করে পাক সরকার।
মৌলবাদের উত্থানের পর পাকিস্তানের অর্থনীতির এখন এমন হাল হয়েছে যে জনকল্যাণমূলক খাতগুলোতে ব্যায়ের জন্য অর্থ নেই দেশটির সরকারের কাছে। দেশের এমন পরিস্থিতির মধ্যে এরকম প্রাসাদের মতো বাড়িতে থাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অনেক কটু কথাও শুনতে হয়েছিল। তিনি নিজেও জানিয়েছিলেন এটি তার পছন্দ নয়। এরপর থেকেই তিনি এই ভবন ছেড়ে নিজের বানি গালা বাসভবনে রয়েছেন এবং সেটিকেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করছেন। যদিও ইমরান খান ক্ষমতায় আসার পর গত তিন বছরে পাকিস্তানের অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়েছে ১৯ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৮৫১
আপনার মতামত জানানঃ