বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন, চোরা শিকার, আবাসস্থল ধ্বংসসহ নানা কারণে শৌর্য-বীর্যের প্রতীক বাঘের অস্তিত্ব বিশ্বজুড়েই হুমকির মুখে রয়েছে। এর মধ্যে সুন্দরবনসহ ভারতের আরও কিছু অংশে পাওয়া যাওয়া বাংলার রাজকীয় বাঘদের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। একসময় বাংলাদেশ-ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল দাপিয়ে বেড়ানো এই বাঘের বসতি এখন এসে ঠেকেছে শুধু সুন্দরবনে। কিন্তু এই বনেও প্রাণীটির সংখ্যা দিন দিন কমছে।
কমছে অনুকূল পরিবেশ
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনে কমছে বাঘের অনুকূল পরিবেশ, বাড়ছে প্রতিকূলতা। শুধু সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার নয়; পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চিতা ও মেছোবাঘ বিলুপ্তির পথে। দূষণ, গাছ কাটা, অপরিকল্পিত পর্যটন, পিটিয়ে হত্যা ও শিকার বন্ধ হয়নি। মানুষের এসব আগ্রাসনের পাশাপাশি রয়েছে প্রাকৃতিক হুমকি। অসুস্থতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বার্ধক্যজনিত কারণেও মারা যাচ্ছে বাঘ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সুন্দরবনে জোয়ারের সময় বনভূমি ডুবে যাওয়ায় কমেছে বাঘের বিচরণক্ষেত্র। পাশাপাশি লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় মিষ্টি পানি পাচ্ছে না বাঘ। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন বন বিভাগ ও সুন্দরবন-সংশ্নিষ্টরা।
বাঘের আস্তানা গুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে, তার সাথে সমুদ্রতল বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা যোগ করে বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন যে, ২০৭০ সাল নাগাদ সুন্দরবনের এরকম কোন জায়গা থাকবে না যা বাঘের বসতির জন্যে আদর্শ। ২০৫০ সালের মধ্যে বাঘের হ্যাবিট্যাট কমে যাবে প্রায় ৯৬ শতাংশ। এই গবেষণা এপার বাংলা এবং ওপার বাংলা দুই বাংলার ক্ষেত্রেই সত্যি।
শুধুমাত্র সমুদ্রের জল বেড়ে যাওয়াই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যে মিষ্টি জলের পুকুরে নোনা জল ঢুকে যাওয়া, শিকারের অভাব এবং নানাবিধ সাইক্লোনের সংখ্যা যেভাবে গত কয়েক বছরে বেড়ে যাচ্ছে তাতে সুন্দরবনের বাঘ তথা যে কোন পশুপাখির বাসস্থানই সাংঘাতিক ক্ষতির মুখে পড়ছে। সাথে যোগ হয়েছে বাঘের খাবার অর্থাৎ হরিণ, শুয়োর, বাঁদর, মাছ এবং কাঁকড়ার বেআইনি শিকার এবং ম্যানগ্রোভ অরণ্যের বিনাশ। বিজ্ঞানিরা বলছেন শুধুমাত্র এবং শুধুমাত্র বাঘকে কেন্দ্র করে জল-জঙ্গলকে বাঁচাবার প্রয়াস করতে হবে সরকারকে।
আগামী ৫০ বছরের মধ্যে বিলুপ্ত হতে পারে বাঘ
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশ থেকে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে জাতিসংঘের এক গবেষণা প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের ১৮০০ পৃষ্ঠার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানব কর্মকাণ্ডের কারণে প্রাণী ও উদ্ভিদের ৮০ লাখ প্রজাতির মধ্যে ১০ লাখ বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে। এর মধ্যে অনেক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে কয়েক দশকের মধ্যেই।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আগামী ৫০ বছরের মধ্যে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশ থেকে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে বলে জাতিসংঘের এক গবেষণা প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন ৫০টি দেশের ১৪৫ জন বিজ্ঞানী। তাতে ব্যবহার করা হয়েছে গত এক দশকের প্রায় দেড় হাজার গবেষণাপত্র (রেফারেন্স ম্যাটারিয়াল)। এগুলোর মধ্যে সুন্দরবন নিয়েও কয়েকটি গবেষণাপত্র ছিল। সেগুলো সমন্বয় করে রয়েল বেঙ্গল টাইগার নিয়ে একটি ভবিষ্যদ্বাণী দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বিজ্ঞানীরা।
যেসব গবেষণার ভিত্তিতে জাতিসংঘ এ আশঙ্কার কথা বলছে, সেগুলোর মধ্যে একটি বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার যৌথভাবে করা। সেখানে বলা হয়েছে, ‘চার হাজার বর্গমাইলের সুন্দরবনের ৭০ শতাংশ অঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কয়েক ফুট ওপরে রয়েছে। ২০৭০ সালের মধ্যে সেখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের জন্য বাসযোগ্য কোনো অঞ্চল থাকবে না।’
২০১০ সালে করা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ডের জরিপের ভিত্তিতে জাতিসংঘ বলছে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১১ ইঞ্চি বাড়লে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে সুন্দরবনের ৯৬ শতাংশ রয়েল বেঙ্গল টাইগার বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শতাব্দীর শুরুতে পৃথিবীতে বাঘের সংখ্যা ছিল এক লাখের মতো। কিন্তু আবাসভূমি হারানো, পাচার ও শিকারের কারণে এদের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে চার হাজারে। সুন্দরবনে যে কয়েকটি বাঘ আছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সেগুলোর টিকে থাকা হুমকির মুখে পড়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের উদ্ভিদকুলে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটছে। এটিও রয়েল বেঙ্গল টাইগার কমে যাওয়ার একটি কারণ। এ ছাড়া রয়েল বেঙ্গল টাইগার এবং সেখানকার বাসিন্দাদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিতে পারে বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার যৌথ গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন ঢাকার ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক শরিফ এ মুকুল। তার বরাত দিয়ে জাতিসংঘ বলছে, ‘ভবিষ্যতে সুন্দরবনে যেকোনো পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় হলে, কোনো রোগ ছড়িয়ে পড়লে কিংবা খাদ্যসংকট দেখা দিলে সেখানে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।’
বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে জোয়ারের উচ্চতা বাড়ছে। কিন্তু জাতিসংঘ বলছে, বাংলাদেশে জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধির হার বৈশ্বিক গড় হারের চেয়ে অনেক বেশি।
সুন্দরবনে বিপন্ন বাঘ
গত দেড় বছরে দেশে হঠাৎ করে বাঘের মৃত্যু বেড়ে গেছে। ২০১৩ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশে বছরে বাঘের মৃত্যুর ঘটনা ছিল একটি করে। মানুষের পিটুনির শিকার হয়ে এবং চোরা শিকারিদের অস্ত্রের আঘাতে বেশির ভাগ বাঘের মৃত্যু হয়। গত দেড় বছরে বাঘ মারা গেছে তিনটি। গত বছর দুটি ও চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে একটি বাঘ মারা যায়।
কেবল বাঘ হত্যা নয়, সুন্দরবনে আগুন লাগার ঘটনাও গত দেড় বছরে বেড়ে গেছে। গত দেড় বছরে মোট পাঁচবার আগুন লেগেছে। এক দশক আগে দুই বা তিন বছরে একটি ঘটনা ঘটত।
২০১০ সালে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের প্রথম বাঘ সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ১৩টি রাষ্ট্র নিজ নিজ দেশে বাঘের সংখ্যা এক যুগের মধ্যে দ্বিগুণ করার লক্ষ্য নিয়েছিল। এর মধ্যে নেপাল বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করেছে। ভারত ও ভুটানও দ্বিগুণের কাছাকাছি নিয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা সামান্য বাড়লেও সেই লক্ষ্য থেকে দূরে আছে। সম্প্রতি বাঘের মৃত্যু ও হত্যা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ যতটুকু এগিয়েছিল, সেখান থেকেও আবার পিছিয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সর্বশেষ ২০১৯ সালে ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বাঘসমৃদ্ধ ১৩টি দেশের সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেশের বাঘ সুরক্ষা কার্যক্রমের অগ্রগতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বিশ্বে ৩ হাজার ৮৯০টি বাঘ রয়েছে। এর মধ্যে ভারত বাঘের সংখ্যা দেড় হাজার থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ২২৬টি করেছে। নেপাল ১০০টি থেকে বাড়িয়ে ১৯৮টি, ভুটান ৫০টি থেকে ১০৩টি করেছে। থাইল্যান্ড বাঘের সংখ্যা ৯০টি থেকে ১৮৯টি করেছে। আর চীনে বাঘের সংখ্যা সাতটি, লাওসে দুটি, ভিয়েতনামে পাঁচটিতে নেমে এসেছে। আর কম্বোডিয়া ও মিয়ানমারে বাঘ বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
বাংলাদেশে ২০০৪ সালের পায়ের ছাপ গুনে করা জরিপে ৪৪০টি বাঘ থাকার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ২০১৫ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ক্যামেরা ফাঁদের মাধ্যমে করা জরিপে বাঘের সংখ্যা বেরিয়ে আসে ১০৬টি। এরপর ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আরেকটি শুমারি করে জানায়, বাঘের সংখ্যা ১১৪টি। ২০২১ সালে বাংলাদেশের আরেকটি জরিপ করার কথা থাকলেও তা এ বছর না–ও হতে পারে।
সংশ্নিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের পার্শ্ববর্তী এলাকায় গড়ে তোলা শতাধিক ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান, ফুড সাইলো এবং বনের মধ্য দিয়ে চলাচল করা জাহাজের দূষণ বাঘের ক্ষতি করছে। গাছ কাটা, খাদ্য সংকট, বিষ দিয়ে মাছ ধরা ও অপরিকল্পিত পর্যটনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে বাঘের ওপর। এ ছাড়া লোকালয়ে চলে আসায় পিটিয়ে হত্যার পাশাপাশি রয়েছে পাচারের উদ্দেশ্যে বাঘ শিকার।
বন বিভাগের তথ্য বলছে, করোনাকালে দেশে গত ১৬ মাসে তিনটি বাঘ হত্যা করা হয়েছে।
বন্যপ্রাণী পাচার ও হত্যা প্রতিরোধে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রাফিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে ৩৩টি বাঘ হত্যা করা হয়।
বিশ্ব বাঘ দিবস আজ
বিশ্ব বাঘ দিবস আজ ২৯ জুলাই। বাঘের প্রাকৃতিক আবাস রক্ষা করা এবং বাঘ সংরক্ষণের জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে প্রতি বছরের ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস পালন করা হয়। ২০১০ সালে সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত বাঘ অভিবর্তনে এই দিবসটির সূচনা হয়।
পৃথিবীতে বাঘকে টিকিয়ে রাখা খুবই জরুরি। এ বিষয়ে হয়তো অনেকেরই জানা নেই। বাঘ টিকিয়ে রাখার প্রতিশ্রুতি নিয়েই প্রতিবছর ২৯ জুলাই পালিত হয় আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস। বাঘ রক্ষার শপথ নিয়ে সারা বিশ্বে পালিত হয় এই দিবসটি। এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘বাঘ বাড়াতে শপথ করি, সুন্দরবন রক্ষা করি’।
সারা বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালন করা হলেও বাঘ টিকে আছে বিশ্বে এমন ১৩টি দেশে বাঘের ঘনত্ব বেশি থাকায় এসব দেশে গুরুত্ব সহকারে দিবসটি পালন করা হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘বাঘ বাঁচাবে সুন্দরবন, সুন্দরবন বাঁচাবে লক্ষ প্রাণ’।
আজ ২৯ জুলাই বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস উপলক্ষে বিকেল ৩টায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। এ ছাড়া বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আজ বিকেল ৫টায় ‘বাঘ দিবসে বাঘের গল্প’ শীর্ষক ওয়েবিনারের আয়োজন করেছে।
বাঘ দিবসের তাৎপর্য
পৃথিবীতে বাঘকে টিকিয়ে রাখা খুবই জরুরি। এ বিষয়ে হয়তো অনেকেরই জানা নেই। বাঘ টিকিয়ে রাখার প্রতিশ্রুতি নিয়েই প্রতিবছর ২৯ জুলাই পালিত হয় আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস। বাঘ রক্ষার শপথ নিয়ে সারা বিশ্বে পালিত হয় এই দিবসটি। এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘বাঘ বাড়াতে শপথ করি, সুন্দরবন রক্ষা করি’।
এই দিবস পালনের মুখ্য উদ্দেশ্য হল বাঘের প্রাকৃতিক আবাস রক্ষা করা এবং বাঘের সংরক্ষণের জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করে এর সম্পর্কে থাকা ভুল ধারণা ও ভয় দূর করা। বিশ্বজুড়ে বাঘ বিপন্নতার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১০ সালে রাশিয়ায় প্রথমবারের মতো বাঘ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ওই সম্মেলনে বলা হয়, আগামী ১২ বছরে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণে পরিণত করতে হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশে দেশে বাঘ সংরক্ষণে বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হতে শুরু করে। বাংলাদেশেও একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। বন বিভাগের সঙ্গে ওয়াইল্ড টিম এই কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন করে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য
মানুষ বাঘকে যত না ভয় পায়, বাঘ তার চেয়েও বেশি ভয় পায় মানুষকে— এই বক্তব্যের সত্যতা মেলে ব্রিটিশ সিভিলিয়ানদের বক্তব্যেও। তারা বলেছেন, বাংলাদেশে এমন কোনো এলাকা ছিল না যেখানে বাঘ ছিল না। বাংলাদেশের কৃষককে বাঘের সঙ্গে জায়গা ভাগাভাগি করে নিতে হয়েছিল। ডোরাকাটা বাঘ সাধারণত গ্রামীণ জঙ্গলে খুব একটা আসত না। এদের বাস ছিল গহিন জঙ্গলে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘আমাদের বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করা দূরে থাক, আদৌ সুন্দরবনে কোনোমতে টিকে থাকা বাঘগুলো শেষ পর্যন্ত টিকবে কি না, সেই প্রশ্ন করতে হবে। সরকারের উচিত নিজ উদ্যোগে বাঘের সুরক্ষার উদ্যোগ নেওয়া।’
তারা বলেন, সংকট সমাধানে সুন্দরবনকে এখনই সংরক্ষণ করে বাঘ শিকার রোধ করতে হবে। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন এবং সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি রোধেও কাজ করতে হবে। সুন্দরবনের মতো এ রকম জায়গা বিশ্বের আর কোথাও নেই। তাই বাংলার বাঘকে বাঁচাতে হলে সুন্দরবনের ইকোসিস্টেম সংরক্ষণ করতে হবে।
তারা বলেন, বাংলাদেশকে বাঘের সংখ্যা বাড়াতে হলে বন বিভাগের পাশাপাশি স্থানীয় অধিবাসীদের নিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
এসডব্লিউ/এমএন/কেএইচ/১৩০৪
আপনার মতামত জানানঃ