সমালোচনা সত্ত্বেও আইসিটি আইনের ব্যবহার অব্যাহত রেখেছে রাষ্ট্র ও পুলিশ। এবার বরিশালে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তিমূলক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে সজল কুমার শীল (২২) নামে এক ধর্মীয় সংখ্যালঘু যুবককে আটক করেছে পুলিশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার খড়কী এলাকা থেকে সজলকে আটক করা হয়। সজল উপজেলার পাতারহাট বন্দরের হাছনা সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী শংকর শীলের ছেলে। ইতিমধ্যে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একশ্রেণীর লোক হাঙ্গামার চেষ্টাও করেছে। উত্তেজনা বিরাজ করায় পুলিশ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নিয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে থানা পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় মুসলিম ধর্মনেতাদের অভিযোগ, সজল শীল গতকাল সোমবার রাতে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেন। সকালে এই খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিলে সজল আত্মগোপনে চলে যান। পরে স্থানীয়রা সজল শীলকে না পেয়ে তার পিতা পার্টস ব্যবসায়ী শংকর শীলকে সকালে আটক করে মেহেন্দিগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
এই ঘটনায় মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা শহরে উত্তেজনা বিরাজ করতে থাকলে পুলিশ ১০ নভেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে সজলকে আটক করে। এরপর দুপুরের নামাজের পর স্থানীয় মুসলিমরা সজল শীলের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি পাতারহাট বন্দরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানা অফিসার ইনচার্জ বরাবরে একটি স্মারক লিপি প্রদান করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভিযুক্ত সজল শীলের পিতাকে এখনো মুক্তি দেয়নি পুলিশ। অন্যদিকে পুলিশ সদস্যরা কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিযুক্ত ও তার পিতার ছবি ছড়িয়ে দিয়েছেন। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এসব ছবি বহুল প্রচার করছে। যার ফলে অপরাধ প্রমাণীত হওয়ার অভিযুক্ত ব্যক্তির জীবন হুমকির মধ্যে পড়ছে। পুলিশ এসব বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
ঘটনাবলি নিশ্চিত করে মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবিদুর রহমান বলেন, ‘আটক যুবকের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। অন্য কোনো ব্যাপার বা কোনো ধরণের ষড়যন্ত্র এর সঙ্গে জড়িত কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে ওসি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্তের পরই সব জানা যাবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রায়শই ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে। এরকম অনেকগুলো ঘটনায় তদন্তের পরে দেখা যায় যে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ফাঁসাতে এমন কাণ্ড ঘটানো হয়।
Available for everyone, funded by readers. Every contribution, however big or small, makes a real difference for our future. Support to State Watch a little amount. Thank you.
[wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ