করোনা নিয়ন্ত্রণে ভারতের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা দিয়ে ৩ কোটি ডোজ টিকা ক্রয়ের চুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপের ৫০ লাখ ও দ্বিতীয় ধাপে ২০ লাখ মোট ৭০ লাখ ডোজ টিকা পেলেও দীর্ঘদিনেও বাকী টিকা না পেয়ে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে চীন-রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
অবশেষে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দীর্ঘদিনের বন্ধু প্রতিম দেশ চীন। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১০ মে চীনা সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের পাঁচ লাখ ডোজের চালান দেশে এসে পৌঁছাবে। এদিকে মডার্নার করোনা ভ্যাকসিন দেশে আনতে সরকারের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে দেশের অন্যতম ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান রেনাটা লিমিটেড।
দেশে আসবে ৫ লাখ চীনা টিকা
আজ সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, আমাদের নিজস্ব জাহাজে দেশে আসবে ভ্যাকসিন, কেনা ভ্যাকসিনের দাম ও কত ডোজ আনা হবে সে বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে।
টিকাদান কর্মসূচিতে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার জন্য অক্সফোর্ড/ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের ১৩ লাখ ডোজ সংকট আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা শীঘ্রই ভ্যাকসিন আনার চেষ্টা করছি। যেহেতু প্রথম ডোজের ৩ মাস পরও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া যায়, আমাদের হাতে আরও সময় আছে।”
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক আরো বলেন, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি কমিটি এ টিকার সব নথিপত্র যাচাই করেছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমাদের যে কমিটি আছে, সেই কমিটি এই টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়ার জন্য সুপারিশ করেছে। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা চীনের সিনোফার্মের এই টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছি। তিনি বলেন, টিকা বাংলাদেশে আসার পর প্রথমে ১ হাজার মানুষের ওপর প্রয়োগ করে তাদের পর্যবেক্ষণ করা হবে। আমরা দেখব এই টিকার সেইফটি এবং অ্যাফিকেসি কেমন। এরপর গণটিকাদান কার্যক্রমে সিনোফার্মের টিকা ব্যবহার করা হবে।
শহীদ সোহারওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান চীনের এ টিকার বিষয়ে বলেন, পুরাতন প্রযুক্তির একটি ইনঅ্যাক্টিভেটেড টিকা। ইপিআই’র মাধ্যমে প্রতিবছর কোটি কোটি ডোজ ইনঅ্যাক্টিভেটেড টিকা আমাদের দেশে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালে এই টিকার নিরাপত্তা এবং কার্যকরিতা প্রমানিত হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের ৫টি দেশে ৫৫ হাজার মানুষের ওপর এই টিকার তৃতীয় ট্রায়াল পরিচালিত হয়েছে। সবমিলে এই টিকা যথেষ্ট কার্যকর হবে বলে আশা করা যায়।
মডার্নার ভ্যাকসিন আনতে চায় রেনাটা
যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি মডার্নার তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আনার জন্য বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানি রেনাটা ফার্মাসিউটিক্যালস সরকারের কাছে আবেদন করেছে। সোমবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠান শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘মডার্নার টিকা আনার জন্য রেনাটা ফার্মাসিউটিক্যালস আবেদন করেছে। এ সংক্রান্ত কাগজপত্র ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে (ডিজিডিএস) পাঠানো হয়েছে। তারা যাচাই-বাছাই করে দেখছেন, ওই কোম্পানির সক্ষমতা আছে কি না, তারা আনতে পারবেন কি না।’
মডার্নার ভ্যাকসিন জিরো ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করতে হয়। দেশে এ ধরনের ব্যবস্থা আছে কি না জানতে চাইলে ডিজি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমাদের ক্যাপাসিটিতে আমরা এটা ঢাকায় রাখতে পারব। কিন্তু ঢাকার বাইরে এই টিকা সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নেই।’
এসডব্লিউ/এমএন/ এফএ/১৭৩০
State watch সকল পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, যেটি পাঠকদের অর্থায়নে পরিচালিত হয়। যে কোন পরিমাণের সহযোগিতা, সেটি ছোট বা বড় হোক, আপনাদের প্রতিটি সহযোগিতা আমাদের নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বড় অবদান রাখতে পারে। তাই State watch-কে সহযোগিতার অনুরোধ জানাচ্ছি। [wpedon id=”374″ align=”center”]
আপনার মতামত জানানঃ